অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে ঈদ বাজার ভারতীয় পোশাকে সয়লাব

3
.

ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে মার্কেটগুলো ক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে। তেমন ভিড় না হলেও মোটামুটি কেনাকাটা জমে উঠেছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভীড় বাড়বে বলে জানান তারা।

চট্টগ্রামে রমজানের শুরু থেকেই মার্কেট-শপিং মলে দর্শনার্থীদের পদচারণা শুরু হয়। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পোশাক ও জুতার ব্যবসায়ীরা। ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বিক্রিও। তারা বলেন, বর্তমানে ভারতীয় পোশাকের চাহিদাই অনেক বেশি।

এদিকে ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে নগরীর অভিজাত মার্কেটগুলোর প্রতিটি দোকানের সামনে রাখা মানুষের মডেল রূপে সাজিয়ে রাখা পুতুলগুলোও সেজেছে নানা রং বের রং এর বাহারী পোষাকে।

এবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে সাজিয়ে রাখা এসব পুতুলের গায়ে বেশীরভাগই ভারতীয় পোশাকে। ভারতীয় পোষাকের প্রতি ক্রেতাবিক্রেতাদের আগ্রহের কথা জানান তারা। বলতে গেলে, ভারতীয় পোশাকের দখলেই চট্টগ্রামের ঈদ বাজার।

.

খুচরা পোশাক বিক্রেতারা জানান, ডিজাইনকে ঈদের পোশাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। দেশীয় পোশাকের চাইতে ভারতীয় পোশাক বেশি ঝলমলে। সেগুলোর চাহিদাও ক্রেতাদের মাঝে বেশি দেখা যাচ্ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে রোজায় আগেই ভারতীয় পোশাক আমদানি করা হয়েছে। বিক্রিও অনেক ভালো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেন্ট্রাল প্লাজা, ইউনেস্কো সেন্টার সানমার ওশান সিটি, লাকি প্লাজা, সাউথল্যান্ড সেন্টার, বিপণি বিতান, ফিনলে স্কয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর মার্কেট, গুলজার টাওয়ার, মতি টাওয়ার, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, আমিন সেন্টার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, শাহ আমানত মার্কেট, ঝলক প্লাজা, বিনিময় টাওয়ার, বে শপিং, হকার্সসহ নগরীর সব মার্কেটের সব দোকানই ভারতীয় পোশাকে ঠাসা। বিক্রিও মোটামুটি ভালো।

সানমারের জারা ফ্যাশানের মালিক মো. মোজাম্মেল বাদশা বলেন, আমরা কিশোরী-নারীদের পোশাক বিক্রি হয়। ভারতীয় পোশাকের আগ্রহ বেশি। ভারতীয় ডিআইডি কটন, পেপার সিল্ক, গাউন, ব্রাইডাল গাউন, ইন্ডিয়ান বেনারসি কাতান, ভারতীয় জনপ্রিয় সিনেমা বাহুবলীর পোশাকই বেশি বিক্রি হচ্ছে।

.

ভারতীয় পোশাক বিক্রি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেন, বাহারি রং ও নজরকাড়া ডিজাইনের পাশাপাশি ভারতীয় সিরিয়াল, চলচ্চিত্র ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কারণে দেশীয় পোশাকের চেয়ে এসব পোশাকের চাহিদা বেশি। শপিংমলগুলোতে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো। দেশীয় পোশাকের আউটলুক ভালো না হওয়ায় সেগুলোর বিক্রি কম।

নগরীর জিইসি মোড়ে জেন্টাল পার্কের কর্ণধার মোহাম্মদ নূর হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষে পোশাকের রং ও ডিজাইনের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছি। ঐতিহ্যের পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন ডিজাইনও এনেছি আমরা। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আমাদের দেশি কাপড়ের মানও খুব ভালো। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিক্রি আরও বাড়বে।

কলেজ ছাত্রী মৌটুসী বলেন, বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশি পোশাক কিনি। কিন্তু ঈদের জন্য ভারতীয় পোশাক কিনছি। দেশে ভালো ডিজাইনের পোশাক তৈরি হলে আমরা সেগুলোই কিনবো, ভারতীয় পোশাক নয়।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের তনু শাড়ী হাউসের মালিক হাজী আবুল কালাম জানান, এবার ভারতীয় কাতান, বেনারসি, কাঞ্চিবরণ, মিনাকুমারী, মৌ মাস্তান, কাশ্মীরি সিল্ক ইত্যাদি শাড়ি বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত বিক্রিও ভালো।

.

মিমি সুপার মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা পাপিয়া রহমান পাঠক ডট নিউজকে বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে এসেছি। যা পছন্দ হচ্ছে সবই ভারতীয় পোশাক। সেগুলো দেখতে আকর্ষণীয় এবং আরামদায়ক। আর দেশীয় পোশাকে সুক্ষ্ম ডিজাইনের অভাব রয়েছে। ডিজাইনে ভিন্নতা কম। ভারতীয় পোশাক বেছে নিতে হচ্ছে। ভালো মানের দেশীয় পোশাক পেলে অবশ্যই কিনতাম।

সানমারের আকর্ষণ ফ্যাশানের বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, এখানে সব দোকানেই ভারতীয় পোশাক বিক্রি হচ্ছে। দেশি পোশাকের তুলনায় সেগুলোর দামও অনেক বেশি। তবু চাহিদা থাকায় বেশি দামে ভারতীয় পোশাক মজুদ করেছি। দাম বেশি হলেও বিক্রি ভালো।

অতিরিক্ত দামের অভিযোগ তুলে ক্রেতারা বলছেন, গত রমজানে মেজবাহ উদ্দিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক থাকাকালে বাজারে মনিটারিং টিম ছিল সক্রিয়। তখন অতিরিক্ত দাম নিতে পারেনি ব্যবসায়িরা। ফলে সাধ্যের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে পেরেছিলাম। কিন্তু চলতি বছরে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। ফলে সব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম দিতে হচ্ছে।

.

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনের কারণে ভালোমানের দেশি পোশাকের চেয়ে ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। আর প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে নিম্নমানের ভারতীয় পোশাক দিয়ে দোকান সাজিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

তবে ভারতীয় পোশাক বেশি বিক্রি হলেও দেশীয় বুটিকসের পোশাকের বিক্রি কম- তা বলা যাবে না। নগরীর আফমি প্লাজাতে দেশি দশ, ২ নম্বর গেটের আড়ং, এসএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন, শৈল্পিক, বাঙালি বাবু, ইজি, খাঁদি বাজারসহ বিভিন্ন শো-রুমে দেশি পোশাক ভালো বিক্রি হচ্ছে।

 

৩ মন্তব্য
  1. Emdadul Islam Rubel বলেছেন

    বাংলাদেশের কি আছে?

  2. Shoyeb Nayeem বলেছেন

    পাকিস্তানী পোশাকও বিক্রি হচ্ছে, এ খবর সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেলেন কেন ?

  3. Saiful Islam Shilpi বলেছেন

    আপনি কি পাকিস্তান থেকে আমদানী কারক..? জানলে আপনার বক্তব্য নিতে পারতাম।