অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বোয়ালখালীতে খালের ভাঙ্গনে ১২ বসতঘর বিলীন, আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

1
.

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ভান্ডালজুড়ি খালের ভাঙ্গনে ১২বসতঘর খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে গৃহহারা পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

প্রবল বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে ভান্ডালজুড়ি খাল খাল পাড়ের সোমবার (১২ জুন) দুপুরে বৈদ্যুতিক খুঁটি সহ ১২পরিবারের বসতঘর চোখের নিমিষে খালের গর্ভে চলে যায়। এছাড়া প্রায় শতাধিক পরিবার ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে। গত দুইদিন ধরে চলমান প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের ফলে উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

খালে ভাঙ্গনে বসতঘর হারিয়েছেন, বড়ুয়া পাড়ার উজ্জল বড়ুয়া, কল্যাণ বড়ুয়া, ধনা বড়ুয়া, বদন বড়ুয়া, বটন বড়ুয়া, নয়ন বড়ুয়া, আহসান উল্লাহর বাড়ির মোজাফফর, জলিল বক্স, আবদুর রহমান, জহুরুল হক, বুগিনি বেগম, আছিয়া খাতুন।

স্থানীয় বাসিন্দা দিহান মনি জানান, প্রবল বর্ষণে জ্যৈষ্টপুরা পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রবল বেগে পানির ঢল ভান্ডালজুরি খাল দিয়ে কর্ণফুলি নদীতে গিয়ে পড়ছে। জ্যৈষ্ঠপুরা মাস্টার পাড়া দিয়ে খালের ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটি পানির তোরে ভেসে গেছে।

.

তিনি জানান, স্রোতের প্রবল বেগে ভান্ডালজুরি-গুদামঘর সড়কের গুচ্ছগ্রাম এলাকার বেইলি ব্রীজ থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে এবং এক কিলোমিটার উত্তরে খাল পাড় অব্যাহতভাবে ভাঙ্গছেই। এতে বেইলি ব্রীজটি যেকোনো সময় ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বেইলি ব্রিজের গার্ডারের নীচের অংশে পানির তোড়ে মাটি সরে গেছে। এদিকে পানির সাথে মিশে গেছে জ্যৈষ্টপুরা মাদ্্রাসার পুরাতন কবরস্থান। পাড়ের ভাঙ্গণে খালে মিশে গেছে ক্ষুদিরামের সেচ প্রকল্প।

স্থানীয় বৃক্ষচাষী মো. মোজাম্মেল হক বকুল বলেন, পাহাড়ী ঢলে সাধারণ খাল পাড়ের মানুষগুলো বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। গত প্রায় এক দশকে এ রকম ভান্ডালজুড়ির খালের রূপ দেখা যায়নি। ক্ষতি হয়েছে পাহাড়ের ক্ষেত-কামারেরও। অনেক জায়গায় পাহাড় ধসে লেবু, পেয়ারা গাছ মাটির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষি এবং কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের ধর্মীয় সম্পাদক ও স্থানীয় বাসিন্দা সজল তালুকদার জানান, ভিটেমাটি হারিয়ে অসহায় এ পরিবারগুলো প্রতিবেশী স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সহায়তায় সকলকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

.

এ ব্যাপারে শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকারম জানান, ভান্ডালজুড়ি খালে ভাঙ্গনে ১২টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের জন্য যথাসম্ভব সহযোগীতা করা হবে। জলবায়ু ফান্ডের অর্থায়নে গত ২০১৩ সালে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভান্ডালজুরি খালের কর্ণফুলি লাগোয়া অংশে ব্লক ফেলে ভাঙ্গণ রোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো। এটিও এবার পাহাড়ী ঢলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া কর্ণফুলী ও ভান্ডাজুড়ি খালে ভাঙ্গন রোধে ২৫কোটি টাকা একটি প্রস্তাবিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আখতার বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সরকারি সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বোয়ালখালী জোনাল অফিসের উপ-ব্যবস্থাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভান্ডালজুড়ি খােেলর ভাঙ্গনে ১০ কেভি ট্রান্সফরমারসহ একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেসে গেছে। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার ফলে উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

১ টি মন্তব্য
  1. Mohammad Kaysh বলেছেন

    so sad….!!