অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়েই মৃত্যুবরণ করতে চান নুরুল ইসলাম

0
Fredomfaiter norul islam, mohis khali
জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করলেও স্বীকৃতি পাননি মহেশখালির মুক্তিযোদ্ধ নূরুল ইসলাম।

দেশের জন্য লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে জীবনের মায়া ত্যাগ করে অস্ত্র হাতে নিয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! সেই দেশ স্বাধীনের ৪৬ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়নি তিনি।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহিপাড়া গ্রামের মরহুম আব্দুল কাদের এর ছেলে মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম।

তিনি জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে, দেশের তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভারতের আসামে মুক্তিবাহীনির সাথে ট্রেনিং করে এসে ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এর ২নং সেক্টরের হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহন করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাঞ্জাবীরা (পাকিস্তানি) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম এর সিপাহিপাড়াস্থ নিজ বসতবাড়ি আগুন দেয়। এতে বাড়ির মালামালসহ সম্পূর্ণ বাড়ি পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। তখনও বুকে লাল সূর্য স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে যান নূরুল ইসলাম। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে চলে আসেন মহেশখালীর সিপাহিপাড়াস্থ নিজ গ্রামের বাড়ীতে।

নুরুল ইসলাম আরও জানান, দেশ স্বাধীনতা পরবর্তীতে মহেশখালী উপজেলায় মুক্তি যুদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন করার সময় ওই তালিকায় থেকে বাদ পড়ে যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের নাম। তিনি ওই তালিকায় বাদ পড়ার খবর জানতে পেরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমানাদিসহ মুক্তিযুদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আবেদনও করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ৫ মে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একটি চিঠিও দেন নুরুল ইসলামকে।

ওই চিঠিতে তিনিসহ বিভিন্ন জেলার আরো ৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভুক্তির অনুলিপিও রয়েছে। সেখানে মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নাম ২নং এ রয়েছে। পরে ওই চিঠির উত্তরে এখনও আর কোন সাড়া মেলেনি বলে জানান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম।

জীবনের প্রায় শেষ বয়সে এসেও দেশের জন্য যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন তিনি। অসুস্থ এই মুক্তিযোদ্ধার এখন শুধু একটিই স্বপ্ন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি নিয়েই তিনি মৃত্যু বরণ করতে চান।

বিষয়টি আমলে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে কার্ড ও ভাতাদি পাওয়ার ব্যবস্থা করার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান এই মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। এব্যাপারে তিনি  প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।