অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

গহিরা-ফটিকছড়ি সড়ক নির্মাণ কাজে যত অনিয়ম: যাত্রীরা দূর্ভোগে

0

এম এস আকাশ, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

01
গহিরা-ফটিকছড়ি সড়কের জাফতনগর গুল্যের মসজিদের সামনে ব্রীজের কাছে আটকা পড়েছে গাড়ি।

গহিরা-ফটিকছড়ি সড়কে ব্রীজ নির্মাণ, সড়ক মেরামত ও ড্রেইন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের কারণে যাত্রী ও সাধারণ মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এজন্য স্থানীয়রা সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ করেছেন। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গহিরা-ফটিকছড়ি সড়কে ৯টি ব্রীজ নির্মাণ, সড়ক মেরামত ও ড্রেইন নির্মাণ কাজের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ ৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। ঠিকাদারী পেয়েছেন ”এমএসিইএআলী(জেবি) লি:”। তারা কার্যাদেশ পাওয়ার পর তারা ফটিকছড়ি পৌরসভা অংশে কার্পেটিং কাজটি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার সড়কে মেরামতের কাজ বাকি রয়েছে। সড়ক গুলো মেরামত না করায় বিশেষ করে নানুপুর বাজার, আজাদী বাজার, মো. তকিরহাট বাজার, ধর্মপুর বখতপুর, জাফতনগর তথা দক্ষিণ ফটিকছড়ির চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

03
সাপোটিংদেওয়ালে ফাটল।

সূত্রটি আরো জানায়, ৯টি ব্রীজের মধ্যে রাউজানের নোয়াজিষপুরে একটি, ফটিকছড়ির জাফতনগর গুইল্যের মসজিদের সামনে ১টি, ধর্মপুর মোড়আলী মসজিদের পাশে ২টি, বখতপুর ঝর্নাদিঘীর পাড়ে ১টি, লেলাং দিঘীর পাড়ে ১টি, রাঙ্গামাটিয়া চৌমুহনীর পশ্চিমে একটি সহ মোট ৭টি ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলেছে অনেক দিন আগে। সেখানে ডাইভারসন সড়ক (বিকল্প সড়ক) গুলো তৈরী করা হয়েছে খুব নিম্মমানের করে। কোন কোন ডাইভারসন সড়কে ব্রীক সলিন বসানো হয়নি। আবার কোনটিতে যা বসানো হয়েছে তা অত্যান্ত নিম্ম মানের ইট দিয়ে। জাফতনগর ও ধর্মপুরে তিনটি ব্রীজের ছাদ ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় দুই মাস আগে। এই তিনটি ব্রীজের পাশের সড়কগুলো মেরামত করে ব্রীজ গুলো সচল করার কোন উদ্যোগ নেই।

02
নকশা পরিবর্তন করে ব্রীজ তৈরী করা হচ্ছে।

আজাদী বাজারের ব্যবসায়ী মো. ইয়াকুব বলেন, সড়ক গুলো মেরামত না করায় কাঁদা পানিতে সয়লব হয়েছে। যানযট লেগেই আছে। পায়ে হেটে বাজারের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। স্কুল কলেজগামী ছাত্র ছাত্রীদের পোষাক নষ্ট হচ্ছে।

নানুপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবু সোহেল অভিযোগ করে জানান, সড়কের বিভিন্ন অংশে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেইন নির্মাণ করার জন্য নানুপুর বাজারের কিছু অংশ সম্পন্ন করলেও সেখান থেকে বখতপুর আসার পথে রাস্তা খুড়ে ফেলে রাখায় কাদা, পানিতে রাস্তা সয়লব হয়েছে। যে টুকু করেছে সেখানেও ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কাজের ফিনিশিং নেই। নিম্মমানের ইট লাগানো, সিমেন্ট কম দেওয়া। এসব অভিযোগে স্থানীয় জনতা প্রতিবাদ করেছে বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধর্মপুর ও জাফতনগরের সম্পন্ন হওয়া ব্রীজের পাশে সড়ক মেরামত না করায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে থাকে। দূর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও সাধারণ মানুষকে। ধর্মপুরে ব্রীজের সাপোটিং দেওয়াল গুলোতে ফাঁটল ধরেছে। বখতপুর ঝর্নাদিঘীর পাড় ব্রীজে দেখা গেছে, সওজের কোন তদারকি কর্মকর্তা বা প্রকৌশলী উপস্থিতি ছাড়া ঠিকাদারের মিস্ত্রিরা ইচ্ছে মতো ঢালাই দিচ্ছে।

কথা হয় এই সড়কের যাত্রী ওসমান, সাইফুদ্দিন, দীল মোহাম্মদ, আবদুর রহিম, ইঊসুফের সাথে। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার এবং সওজের প্রকৌশলীর যোগ সাজসে ব্রীজ গুলো ভেঙ্গে রেখেছে। প্রচুর কাজ হচ্ছে প্রতিবেদন তৈরী করে বিল তৈরীর পন্থা করছে। যে ব্রীজ গুলো সম্পূর্ণ হয়েছে সেগুলোকে পুরোপুরি চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছেনা। ডাইভারসন সড়ক তৈরীতে গুলো কোন রকম মাটি ফেলে দায় সেরেছে। বাকি ব্রীজ গুলোতে কাজ করা হচ্ছে যেন তেন। বখতপুর ঝর্ণা দিঘীর পাড়ের ব্রীজটিতে প্রকৌশলীর নকশা পরিবর্তন করে ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহে আরেফিন বলেন, বর্ষার কারণে জন কিছুটা জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্রীজের পাশে সড়ক গুলোতে সচল করতে ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। সাপোটিংদেওয়াল ফাটল ও নকশা পরিবর্তনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

”এমএসিইএআলী(জেবি) লি:” নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের পরিচালক শাহ জালাল সাপোটিং দেওয়াল ফাটল ও নকশা পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সময় আছে ১৮ মাস। আমরা প্রচুর কাজ সম্পন্ন করেছি। নির্দিষ্ঠ সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন করবো।