অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বেঁচে আছেন গৃহবধু আমেনা!

0
ICU
ফাইল ছবি

পিত্তথলির পাথর অপারেশন করতে গিয়ে ভুলচিকিৎসায় (বুধবার রাত ১০টায়) একগৃহবধু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। মূলত ঘটনাটি ছিল নিচক গুজব। গুজবে নিহত গৃহবধূ আমেনা বেগম বর্তমানে ‘জীবিতবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)’ রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ৪টায় কক্সব্জাার জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ পুচনু ও আইসিইউ কনসালটেন্ট ডাঃ সামশুদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি রোগীনির স্বামীও ঘটনাটি গুজব ও আতংক ছড়ানোর জন্য একটি মহল বুধবার রাতে এধরনের অনভিপ্রেত কাহিনীর সুত্রপাত করেছে বলে দাবী করেন।

সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও সদর থানায় সোর্স কাজে নিয়োজিত মোজাহের আহম্মদের স্ত্রী আমেনা বেগম (৫০) এর পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য গত ১০ দিন আগে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ডাক্তার আরিফ হোসেনের তত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে। বুধবার সকাল ১১টার দিকে তার পিত্তথলির অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পরেই রোগীনি আমেনার অবস্থা সংটাপন্ন হলে তাকে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ না থাকায় জেলা সদর হাসপাতাল বেডেই রেখে দেয় রোগীনির স্বজনরা।

এদিকে, বুধবার রাত ৯টার দিকে সর্বত্র একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে আইসিইউতে রোগীনি আমেনার মৃত্যু ঘটেছে। পুরো জেলা সদর হাসপাতালসহ শহর জুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিরিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটেছে বলে আত্মীয় স্বজনরা নিশ্চিত করেন। এমনকি ঘটনা ধামাচাপা দিতে কৌশলে তার মৃতদেহ আইসিইউতে রাখা হয় বলেও জানান রোগীনির স্বামী। উদ্ভট পরিস্থিতি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অনেকটা পড়ে যান বেকায়দায়। পুরো ঘটনাটি টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

পুরো জেলা সদর হাসপাতাল অভ্যন্তরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।

বুধবার রাত ১০টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালের একটি সুত্র প্রথমে রোগীনির মৃত্যুর ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত দাবী করেন। বুধবার রাত ১১টার দিকে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান গৃহবধু আইসিইউতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।

অবশেষে গৃহবধু আমেনা যে মরেনি তার সত্যতা মেলে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায়। রোগীনির স্বামী মোজাহের আহম্মদ জানান, তার স্ত্রী আইসিইউতে রয়েছেন এবং শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী জীবিত আছেন এবং পরিবারের সকলের সাথে কথাও বলেছেন। তিনি এসময় সৃষ্ঠিকর্তার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে সকলের কাছে দোয়া চান।

জেলা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ঘুরে দেখা গেছে, গৃহবধু আমেনা বেগম নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে রয়েছেন। তার চিকিৎসা দিচ্ছেন আইসিইউ কনসালটেন্ট ডাঃ সামশুদ্দীন, আইসিইউ ইনচার্জ বিধান পাল ও কমেক সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ ছাড়্ওা বেশ কয়েকজন ইর্ন্টানি চিকিৎসক সার্বক্ষনিক নজর রেখেই সংকটাপন্ন রোগীকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফেরাতে পারছেন। সেখানে সারাক্ষণ চিকিৎসক, নার্স, ওষুধ, অক্সিজেনসহ রোগীকে বাঁচানোর দরকারি সবকিছুই ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ’র ব্যবস্থা থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবী চিকিৎসকদের।

এই রোগীনি পরিবার আর্থিল অচ্ছল হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টির মানবিক বিবেচনা করে আইসিইউ’র ব্যয়ও ফ্রি করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন তত্বাবধায়ক ডাঃ পুচনু ।
আইসিইউ ইনচার্জ ডাঃ বিধান পাল বলেন, রোগীনি আমেনার চিকিৎসা চলছে। তাকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা একটু উন্নতির দিকে।

এক প্রশ্নে জবাবে হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডাঃ পুচনু বলেন, আইসিইউতে রোগীনির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে হাসপাতালের শান্ত পরিবেশ অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটার আয়োজন করেছিল কতিপয় মহল। তিনি এধরনের গুজবে কান না দেয়ার অনুরোধও জানান।