অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম আদালতে বই বোমা ছুড়ে মারার মামলায় ৩ জেএমবির ১৪ বছর কারাদণ্ড

0
বোমা মিজান।

চট্টগ্রাম আদালতে বিচারকের এজলাসে বই বোমা ছুঁড়ে মারার ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ৩ সদস্যকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঘটনার প্রায় এক যুগ পর আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রমের অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেন।

এ ঘটনায় দুটি মামলায় ৩ জঙ্গিকে ৭ বছর করে ১৪ বছর কারাদ- দেয়া হয়। একই সাথে আদালত আসামিদের দুটি মামলায় ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন।

সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দণ্ডিত আসামীরা হলেন- নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) চট্টগ্রম অঞ্চলের তৎকালীন কমান্ডার জাবেদ ইকবাল প্রকাশ মোহাম্মদ, শাহাদাত আলী প্রকাশ শাহাদাত হোসেন প্রকাশ মাসুম বিল্লাহ, মিজান প্রকাশ জাহিদুল ইসলাম সুমন।

আদালত সুত্রে জানাগেছে-২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম আদালতের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনের এজলাসে জেএমবির জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলা চালায়। সেদিন বইয়ের ভেতরে বোমা লুকিয়ে আদালতে এনে প্রায় একই সময়ে ভিন্ন দুটি কক্ষে দুজন বিচারকের এজলাসে তা ছুড়ে মারে জঙ্গিরা। তবে বোমা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার সাক্ষী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মানিক দত্ত বলেন, সেদিন বিচারক আকরাম হোসেনের আদালতে তিনিও ছিলেন। ছুড়ে মারা বোমাটি তাঁর মাথার ওপর দিয়ে বিচারকের টেবিলের ওপর পড়ে। পরে পুলিশ ও আইনজীবীরা ধাওয়া দিয়ে জঙ্গি শাহাদাতকে ধরে ফেলেন। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে এজলাসে থাকা কেউ বাঁচত না।

মামলা দুটিতে আসামি করা হয়েছে জেএমবি চট্টগ্রামের সাবেক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল প্রকাশ মোহাম্মদ, শাহাদাত আলী ও জেএমবির বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম প্রকাশ বোমা মিজান। এর মধ্যে দুজন কারাগারে রয়েছেন। অন্য আসামি জাহিদুল ইসলাম প্রকাশ বোমা মিজানকে আড়াই বছর আগে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় অন্য জঙ্গিরা। এরপর তাঁকে আর গ্রেফতার করা যায়নি।

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে হাজিরা দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ আদালতে নেওয়ার পথে ত্রিশাল এলাকায় প্রিজন ভ্যানে গুলি ও বোমাবর্ষণ করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই তিনজনের একজন বোমা মিজান। ওই ঘটনায় জঙ্গিদের গুলি ও বোমা বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য মারা যান।

২০০৮ সালের ২৭ জানুয়ারি একসঙ্গে দুটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় সাক্ষী ২৮ জন। এর মধ্যে সাক্ষ্য দেন ১৯ জন। অপরদিকে মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২২ জন।