অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

যৌন উত্তেজক মেয়াদউত্তীর্ণ ও লেবেলবিহীন ভেজাল ঔষধে সয়লাব নগরী

0
.

নগরীর অধিকাংশ ফার্মেসীগুলোতে মানা হচ্ছেনা ড্রাগ আইন। যত্রতত্র বিক্রি করা হচ্ছে নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ঔষুধ, মেয়াদউত্তীর্ণ ঔষধ, লেবেলবিহীন ভেজাল ঔষধ, অনুমোদনহীন ঔষুধ। আর এ কারণে জনস্বাস্থ্য পড়েছে হুমকির মধ্যে। দীর্ঘদিন পর হলেও এ স্পর্শকাতর বিষয়টি নজরে এসেছে প্রশাসনের শুরু হয়েছে এর বিরুদ্ধে অভিযান।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত অবশেষে এর রকম ভেজাল, অনুমোদনহীন ঔষধ বিক্রির ৩টি ফার্মেসীকে চিহিৃত করে আইনের আওয়ায় এনেছে।

.

বুধবার নগরীর পাহাড়তলী অলংকার সিনেমা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাক্তারদের জন্য স্যাম্পল হিসেবে তৈরীকৃত বিক্রয় নিষিদ্ধ, নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ঔষুধ, মেয়াদউত্তীর্ণ ঔষধ, লেবেলবিহীন ভেজাল ঔষধ, বিক্রির কারনে তিনটি ফার্মেসিকে ড্রাগ আইন ১৯৪০ এর আওতায় ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আর এ অভিজানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন। প্রসিকিউশন হিসেবে অভিযানে ছিলেন চট্টগ্রাম ওষুধ প্রশাসনের তত্বাবধায়ক মোজাম্মেল হোসেন এবং শফিকুর রহমান।

অভিযান চলাকালীন সময়ে ভ্রাম্যমান আদালত দেখতে পান, সৌদিয়া ফার্মেসিতে বিপুল পরিমান লেবেলবিহীন ওষুধ মজুদ করা আছে। যেগুলোর গায়ে কোন উৎপাদন তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্নের তারিখ, কোম্পানীর নাম, লোগো, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার কিছুই নেই। এছাড়া তারা বিক্রয় নিষিদ্ধ স্যাম্পল ওষুধ বিক্রি করছিল, আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা তা সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। এছাড়াও তাদের দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অনুমোদনহীন ওষুধ পাওয়া যায়। এ কারনে ভ্রাম্যমান আদালত উক্ত ফার্মাসীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

.

অভিযান সম্পর্কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন জানান, ডাক্তারদের জন্য তৈরিকৃত স্যাম্পল ঔষুধ বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। এই ওষুধগুলো স্যাম্পল হিসেবে তৈরী হয় বলে ট্যাক্স দিতে হয় না, তাই ট্যাক্স ফাঁকি দিতে স্যাম্পল ওষুধ তৈরি করে বিক্রি করার একটা প্রবনতা থাকে। এগুলো দোকানে রাখা বা বিক্রি করা সম্পর্ণ বেআইনি। এছাড়াও তাদের ফার্মাসীতে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অনুমোদনহীন ওষুধ মজুদ ছিল।

ঔষুধ প্রশাসনের তত্বাবধায়ক মোজাম্মেল হোসেন জানান, লেবেলবিহীন ওষুধ বিষেরই নামান্তর। জনতা ফার্মাসিতে বিক্রি হচ্ছিল যৌন উত্তেজক নিষিদ্ধ ওষুধ। এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্নক ঝুকিপূর্ন। ওষুধের মোড়কের গায়েই লেখা ৪০ বছরের কম বয়েসিদের সেবন নিষিদ্ধ। এছাড়া তারা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করছিল। এদের ১০হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়।

মা ফার্মাসী নামে আরও একটি দোকানে অনুমোদনহীন ঔষধ রাখা এবং ফার্মাসিস্ট না থাকায় ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়।জব্দ করা হয়েছে সকল নিষিদ্ধ, মেয়াদোত্তীর্ণ, লেবেলবিহীন এবং অনুমোদনহীন ঔষধ ।

.

অভিযানের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন তার ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি উল্লেখ্য করে প্রশ্ন রাখেন এভাবে “লেবেলবিহীন ঔষধকে কি ঔষধ বলা যায়? যে ঔষধের গায়ে কিছুই লেখা নেই, কবে তৈরী, কী কাজে ব্যবহার করা হবে, কোম্পানির লোগো, উৎপাদন বা মেয়াদউত্তীর্ন হবার তারিখ। এগুলো মানুষের স্বাস্থের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, ভাবা যায় না। আজ চট্টগ্রামের অলংকার এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে গিয়ে এসব লেবেলবিহীন ওষুধ পেলাম। এছাড়াও ফার্মেসিগুলোতে ডক্টরস স্যাম্পল বিক্রি হচ্ছিল। মোবাইল কোর্ট দেখে এরা স্যাম্পল অষুধ সরিয়ে ফেলতে চাইছিল। ডাক্তারদের জন্য বানানো স্যাম্পল অষুধ বিক্রি বেআইনী এই কারনে যে, এতে সরকারকে বিপুল পরিমান ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া যায়। ট্যাক্স ফ্রি এই ঔষধ পরিমানের বেশি উৎপাদন করে ফার্মাসিতে বিক্রি করা হয়। অথচ এগুলো বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ছাড়া পেলাম নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ঔষধ, মেয়াদউত্তীর্ন ওষুধ এবং অনুমোদনহীন ঔষধ। এগুলো রাখা এবং বিক্রির দায়ে তিনটি ফার্মেসিকে অষুধ আইন ১৯৪০ এ- ৬৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে “।