অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সৌন্দর্য্য চর্চার নামে লুসি বিউটি পার্লারে এসব কি হচ্ছে!

1
লুসি বিউটি পার্লারের ভিতরের ছবি।

চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ বিউটি পার্লারগুলোর তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে লুসি বিউটি পার্লারের নাম। ঐতিহ্যবাহি প্রসিদ্ধ এ পার্লারটি সব নারীদের কাছে এক নামেই পরিচিত। সেই নামীদামী পার্লারে সুন্দরী বানানোর নামে আসলে কি হচ্ছে তা এর গ্রাহক যারা এখানে সাজতে আসেন তারাও জানেন না।

রূপ চর্চার নামে নারীদের কত বড় ক্ষতি করে দিচ্ছে লুসি বিউটি পার্লার তা উপলুদ্ধি করতে পারলে হয়তো অনেকে এখানে যেতো না।

সাধারণ মানুষের আস্থা ও আগ্রহকে পুঁজি করে লুসি এতোটা বছর ধরে তার হাজার হাজার গ্রাহককে ভেজাল ও মেয়াদ উর্ত্তিণ কসমেটিক্স দিয়ে সাজিয়ে আসছে।

বুধবার ভ্রাম্যমান আদালতের হাতে লুসি পার্লারের এসব জারিজুরি ফাঁস হয়েছে। ছয় মাস বা এক বছর নয়, এই প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হতো আট থেকে ১০ বছরের পুরোনো পণ্য। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহারের দায়ে ঐতিহ্যবাহী লুসি বিউটি পার্লারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন বলেন, আজকে লুসি বিউটি পার্লারে আমরা মোবাইল কোর্টের অভিযানে এসেছি এবং এসে এখানে প্রচুর অনিয়ম পেলাম। অনিয়মের মধ্যে সবচেয়ে বড় যেটা সেটা হচ্ছে যে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রোডাক্ট তাঁরা ব্যবহার করছেন। ৮-১০ বছর আগে মেয়াদ চলে গেছে এ ধরনের প্রোডাক্ট তাঁরা ব্যবহার করছেন। সেগুলোর মধ্যে মেকাপ প্রোডাক্ট আছে। যেগুলো মানুষের মুখে সব সময় অ্যাপ্লাই করা হয়। এবং এক্সপার্টিজরা বলবেন যে এই ৮-১০ বছর আগে মেয়াদ চলে গেলে সেই প্রোডাক্ট দিয়ে আসলে কী কী ধরনের স্কিন ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে।’

উদ্ধার করা মেয়াদ উর্ত্তিণ ও নকল প্রসাধনী।

মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী ছাড়াও পার্লারের ফ্রিজে পাওয়া গেছে ইলিশ মাছ, মাংস। এ অপরাধে নগরীর নগরীর মেহেদীবাগস্থ লুসি বিউটি পার্লারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

লুসি বিউটি পার্লারে অভিযান চালানোর, ফ্যাসিয়াল কক্ষে পাওয়া যায় অনেক রকমের লেভেল বিহীন ক্রীম, মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক, আইশ্যাডু, নেইল পলিশ, চুলের শ্যাম্পু, বিএসটিআই এর অনুমোদনহীন বিভিন্ন পণ্য তারা ব্যবহার করছে।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন, বিএসটিআই এর কর্মকর্তা, আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ানের সদস্য ও সাংবাদিক।

.

পার্লারে সাজতে আসা এক ভোক্তা বলেন, আমরা এতোদিন না জেনে এখানে সাজতে এসেছি, জানিনা ত্বকের কি অবস্থা না করেছি। এরকম শহরে অনেক পার্লার আছে যারা এসব পণ্য ব্যবহার করে মেয়েদের ত্বক নষ্ট করছে। আমরা এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আসার পর দেখলাম কিছু পণ্যের মেয়াদ ২০১০ সালে শেষ হওয়ার পরেও তারা ব্যবহার করছে। যেমন লাকমির একটি পণ্য যার মেয়াদোত্তীর্ণ হয় ২০১০ সালে। এরকম ২০১২ সালে মেয়াদ চলে গেছে এমন পণ্যও আমরা পেয়েছি। প্রায় শতাধিক মেকাপ পণ্য আমি জব্দকরেছি যার মেয়াদ চলে গেছে ২ থেকে ১০ বছর আগে। তবুও তারা না দেখে এসব পণ্য ব্যবহার করছে। আর কিছু কিছু প্রসাধনী আছে যেগুলো ফ্রিজে সংরক্ষণ করা লাগে আমরা সে প্রসাধনীর পাশে ইলিশ মাছের টুকরো পাই। তাই লুসি বিউটি পার্লারকে প্রতিশ্রুতি পণ্য ৪৫ এবং ভোক্তা অধিকার আইনের ৫১ ও ৫৩ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করি এবং তাদেরকে সতর্ক করে দিই যাতে ভবিষ্যতে আর না করে।

.

বিএসটিআই’র কর্মকর্তা রাজীব দাশ বলেন, আমাদের সরকারীভাবে ১৫৪টি বাধ্যতামূলক যে পণ্য আছে তার মধ্যে এখানে শ্যাম্পু, ফেইস পাউডার বিভিন্ন প্রকারের লিপস্টিক পাওয়া গেছে যার মধ্যে বিএসটিআই এর কোনো লোগো নেই, আমদানীকৃত দেশের নাম নেই, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ নেই। সে সাথে অনেক পুরনো লিপস্টিক তারা ব্যবহার করছে। পাকিস্তান থেকে কিছু ফেইস পাউডার এবং ক্রীম নিয়ে এসেছে যেগুলো স্বাস্থ্যঝুকির মধ্যে পড়ে এমনকি এগুলোর মধ্যে মার্কারী এবং হাইড্রোনিয়াম থাকার কারণে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।

১ টি মন্তব্য
  1. Hazera Sarwar Rahaman বলেছেন

    সব পালার এক