অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ইভটিজিং প্রতিরোধে স্কুলের মেয়েরা শিখছে মার্শাল আর্ট

1
.

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
“আমরা নারী, আমরাও পারি। রুখবো ভয়, করবো জয়” শ্লোগান নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা শিখছে মার্শাল আর্ট।

স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা প্রতিনিয়ত চলতি পথে ইভটিজিং এর শিকার হয়ে থাকে। ফলে অভিভাবকরা মেয়েকে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পাঠিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন। মেয়েদের নিরাপদ পথ চলতে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসি সুকান্ত কুমার বিশ্বাসের আর্থিক সহযোগীতায় এই মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ চলছে।

গত এক বছর হলো বারোবাজার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৩০ জন মেয়েকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মার্শাল আর্টে ব্লাক বেল্ট পাওয়া এমডি মোশারফ করিম সপ্তাহে দু’দিন মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার এই প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ কাজে সার্বিক সহযোগীতা করেন কোরিয়া প্রবাসি সুকান্ত কুমার বিশ্বাসের দুই বন্ধু কামরুজ্জামান তুষার ও অনুপ কুমার বিশ্বাস। সুকান্ত কুমার বিশ্বাস কালীগঞ্জ উপজেলার ১১নং রাখালগাছি ইউনিয়নের খোসালপুর গ্রামের সন্তোষ বিশ্বাসের ছেলে। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া বসবাস করছেন।

মার্শাল আর্টে অংশ নেওয়া সস্তম শ্রেণির মালিহা নুর অন্তরা ও ফাল্গুনী এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণির সুমনা ইয়াসমিন শোভা জানায়, আমরা প্রায়ই স্কুলে যাওয়া আসার পথে বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে হয়। সে সব সমস্যার মুকাবেলা করতেই মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ গ্রহন করছি। এ ছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিকুলতার কারণে আমরা শরীর চর্চার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। যে কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি সপ্তাহে দু’দিন এই মার্শাল আর্ট শিখি। খুব ভালো লাগে, অনেক আনন্দ পাই বলে যোগ করে শিক্ষার্থীরা।

অভিভাবক সমেন দত্ত ও হাফিজুর রহমান জানান, আমাদের বিশ্বাস মেয়েদের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ থাকলে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে। আমরা চাই মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে দেশ সেবাই অবদান রাখুক। যে কারণে আমাদের মেয়েদের বড় সমস্য ইভটিজিং এর হাত থেকে রক্ষা করা। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসি সুকান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, আমাদেশের মেয়েরা প্রতিদিনই ইভটিজিং এর সিকার হয়। বখাটে ছেলেদের কারণে প্রায়ই দেখা যায় মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যে কারণে মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অভিভাবকরা অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় অন্তরায়।

এ অবস্থায় একটি ছেলে যদি বাইরে যায় তাহলে অভিভাবকরা কিন্তু অতটা চিন্তা করেন না যতটা চিন্তা করেন একটি মেয়ের বেলায়। যে কারণে যদি একটি মেয়ের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ থাকে নিজেকে সেভ করতে পারবে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত তনু ও খাদিজার ঘটনা দেশবাসিকে শিহরিত করেছে। তাদের যদি এই প্রশিক্ষণ থাকতো তাহলে কিছুটা হলেও হয়তো সেভ করতে পরতো বলে আমি বিশ্বাস করি।

বারোবাজার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার বিশ্বাস জানান, মার্শাল আর্ট মেয়েদের জন্য একটি ভালো উদ্দোগ। আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগীতা করছি। তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়নে মেয়েদের এগিয়ে যেতে সুকান্তের মতো সমাজের সচেতন মানুষদের এগিয়ে আসা উচিৎ।