অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ফটিকছড়ি থেকে অপহৃত আরএফএল’র ৩ কর্মকর্তাকে ৯ ঘন্টা পর উদ্ধার

1
উদ্ধারের পর অপহৃত ৩ কর্মকর্তা।

জেলার ফটিকছড়ির বাংলাবাজার হতে আরএফএল কোম্পানীর তিন কর্মকর্তাকে অপহরণের দীর্ঘ প্রায় ৯ ঘন্টা পর শনিবার রাতে খাগড়াছড়ির রামগড়ের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার সকাল ১১টার দিকে তিন কর্মকর্তা আলা উদ্দিন (৩৪), মো: ইমরান (৩২) ও সবুজ (৩০)কে কৌশলে অপহরণ করে বাগান বাজার ইউনিয়নের দুর্গম লালমাই এলাকায় আটকে রাখা হয়।

পরে মুক্তিপণ আদায় এবং পুলিশ ও বিজিবি’র তৎপরাতায় তাদের ছেড়ে দেয়ার পর রাতে পাহাড়ী এলাকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ৩ জনকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারীদের বেদম প্রহারে ওই তিন কর্মকর্তা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ বলে জানাগেছে।

আরএফএল কোম্পানীর তিন পার্বত্য জেলার সেলস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মো: মাইন উদ্দিন জানান, ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার আনোয়ার সিকদার নামে এক ব্যক্তির কাছে কোম্পানীর পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আরএফএল’র সেন্ট্রাল প্রটেকশন ইউনিট কর্মকর্তা আলা উদ্দিন, সবুজ ও ইমরান চট্টগ্রাম থেকে শনিবার সকাল ১১টার দিকে ঐ এলাকায় যান। আনোয়ার সিকদার টাকা দেয়ার কথা বলে কৌশল তিন কর্মকর্তাকে একটি অটো রিকশা করে দুর্গম এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে বন জঙ্গল ঘেরা ঐ অজ্ঞাত স্থানে পৌঁছলে পূর্ব থেকে অবস্থানকারী ১০-১৫জন ব্যক্তি তাদের হাত পা বেধে ফেলে। প্রচন্ড মারধর করা হয় তাদের। এক পর্যায়ে তাদের স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে কল করে দুই লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবী করা হয়। অপহরণকারীদের দেয়া দুটি বিকাশ নম্বরে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। তিন কর্মকর্তার মোবাইলের রকেট একাউন্ট থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করে নেয় অপহরণকারীরা।

মাইন উদ্দিন আরও জানান, তিন কর্মকর্তা অপহরণের খবর পেয়ে কিষয়টি গুইমারা সেনা রিজিয়ন, রামগড় বিজিবি ও ভুজপুর থানাকে জানানো হয়। এদিকে অপহৃত তিন ব্যক্তি উদ্ধারে শনিবার বিকালে অভিযানে নামে রামগড় বিজিবি ও ভুজপুরের দাঁতমারা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। তারা উত্তর ফটিকছড়ির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে বাগানবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুস্তম আলীও অপহৃতদের উদ্ধারে মাঠে নামেন। ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় শনিবার রাত ৮টার দিকে বাগানবাজারের দুর্গম এলাকা লালমাই পশ্চিমপাড়া থেকে তিন অপহৃতকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

ফটিকছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলী জানান, পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে তিন কর্মকর্তাকে অপহরণ করে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আটকে বেদম নির্যাতন করে অপহরণকারীরা। তিনি বলেন, বিজিবি ও পুলিশের অভিযান শুরু হলে অপহরণকারীরা তিন কর্মকর্তাকে লালমাইর পশ্চিম পাড়ায় রেখে পালিয়ে যায়।

এদিকে, আরএফএল কোম্পানীর কর্মকর্তা রুবেল শনিবার রাত সোয়া ১১টায় জানান, তারা মামলা দায়েরের জন্য ভুুজপুর থানায় অবস্থান করছেন। তিনি বলন, অপহরণকারী আনোয়ার সিকদারকে প্রধান আসামী করে মোট ১০জনের নামে থানায় অপহরণ মামলার এজাহার প্রস্তুত করছেন তারা। ভুজপুর থানার ওসি তদন্ত হেলাল উদ্দিন ফরুকী জানান, মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।