অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বেছে নিন আপনার মন মত পেশা

0

পেশা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী কর্মজীবনে ভালো করতে পারে না। এ কারণে শিক্ষাজীবন থেকেই পেশা সম্পর্কে আরো সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে পেশার মিল না থাকায় কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে কষ্ট হয়। পিছিয়ে পড়তে হয় ক্যারিয়ার দৌড়ে। লেখাপড়ার নির্দিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চাকরি জীবনে প্রবেশ করলে শীঘ্রই সফলতা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন লক্ষ্য ও সিদ্ধান্ত। তাহলেই ধরা দেবে সাফল্য। শিক্ষাজীবন শেষে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন থাকে যোগ্যতা অনুযায়ী একটি ভাল প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করার। অনেকেই আছেন যারা শিক্ষা জীবন থেকেই পেশা সম্পর্কে পরিকল্পনা শুরু করেন। তবে পেশা ও কর্মজীবন সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক পেশা বেছে নিতে ব্যর্থ হন শিক্ষার্থীরা। সমস্যা হয় তখন, যখন দেখা যায় বাংলায় অনার্স করে ব্যাংকে, পরিসংখ্যান করে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ অথবা ইংরেজি বিষয় নিয়ে পড়ে সাংবাদিকতা করতে হয়। অনেক সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে পেশার মিল না থাকায় প্রমোশন পেতে কষ্ট হয়। পিছিয়ে পড়তে হয় ক্যারিয়ার দৌড়ে। অনেকেই চিন্তা করেন বিষয়ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়ার। তবে লক্ষ্য ও সিদ্ধান্ত যদি ঠিক থাকে সাফল্য অনিবার্য। তাই সবার আগে জেনে নিতে হবে আমাদের দেশে কি ধরনের ক্যারিয়ার সেক্টর রয়েছে। পাশাপাশি এটাও জানা জরুরি, এসব সেক্টরে কি ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন।

মার্কেটিং কোম্পানি
বর্তমানে আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি লোক চাকরি করে মার্কেটিং কোম্পানিতে। বিভিন্ন কনজুমার পণ্য থেকে শুরু করে প্রসাধনসামগ্রী পর্যন্ত এরা মার্কেটিং করে থাকে। কোম্পানিগুলোতে সাধারণ সেলসম্যান হতে শুরু করে জেনারেল ম্যানেজার পদে লোক নেওয়া হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এখানে পদ দেওয়া হয়ে থাকে।

ওষুধশিল্প
বাংলাদেশ ওষুধশিল্প এখন অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোতে সবচেয়ে বেশি লোক নেওয়া হয় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে। মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাজ মূলত ফার্মেসি ও ওষুধ মার্কেটগুলো থেকে অর্ডার সরবরাহ করা। পরবর্তীতে ডেলিভারিম্যান গিয়ে সেই ওষুধ সরবরাহ করে। এ চাকরিতে বেতনের পাশাপাশি সেলস ইনসেনটিভও আছে।

ব্যাংকিং সেক্টর
এই সেক্টরের চাকরির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো চাকরির স্থায়িত্ব ও চাকরি শেষে পেনশন। আগে শুধু সরকারি ব্যাংকের ওপর নির্ভর থাকতে হতো। এখন দেশে অনেক বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার পদ থেকে লোক নেওয়া শুরু হয়। প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে কমপক্ষে মাস্টার্স পাস বা সমমানের হতে হবে, তবে এমবিএ পাস হলে ভালো হয়। এই পেশায় সময়মতো জীবনটাকে গোছানো যায়। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে আসা এবং অফিস থেকে ফেরা।

সাংবাদিকতা
একটা সময় ছিল যখন পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে অনেকেই কলুষ চোখে দেখত। তখন মনে করা হতো যে, কিছু করতে না পেরে সাংবাদিকতা পেশায় এসেছে। সময় বদলেছে। এই পেশায় এখন সম্মানের পাশাপাশি উপযুক্ত সম্মানীও পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক মিডিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। সাংবাদিকদের চাহিদাও অনেক বেড়ে গেছে। সুতরাং যে কেউই লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে এই পেশায় প্রবেশ করতে পারেন। সাংবাদিকতার ওপর যারা পড়াশোনা করেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

টেলিকম সেক্টর
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজার হাজার বেকার যুবক-যুবতী এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। কল সেন্টারের নিম্ন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কাস্টমার কেয়ার থেকে মার্কেটিং পর্যন্ত এই পেশায় যে কেউ নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারেন। কমপক্ষে গ্রাজুয়েশন করে এই পেশায় প্রবেশ করলে যে কেউ সফলতার পথে পা রাখতে পারেন। এগিয়ে যেতে পারেন সামনের দিকে। নিজেকে আগে সময়ের সঙ্গে তৈরি করতে হবে। নিতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। তাহলেই যে কোনো পেশা বা অবস্থানেই দক্ষতার সঙ্গে মেধাকে বিকশিত করা যাবে।

আইটি মার্কেটিং
আইটি মার্কেটিং মানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নানা পণ্য এবং সেবাগুলোকে সকলের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। অন্যান্য সব ধরনের পণ্যের পাশাপাশি আইটি পণ্যের ক্ষেত্রেও মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র, সেহেতু আইটি শিল্পের পণ্য এবং সেবাকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। তাই এই সময়ে পেশা গড়তেও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন একটি খাত।