অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

আজ পবিত্র জুমআতুল বিদা

0
islam-1
ছবি: প্রতিকী।

আজ পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার, জুমআতুল বিদা। জুমআর কারণে মুসলমানদের কাছে শুক্রবারের গুরুত্ব ও মর্যাদা এমনিতেই অপরিসীম। পবিত্র কুরআনুল কারীমের সুরা আল-জুমুআহ’তে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ পরের আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘অতঃপর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (আয়াত ৯ ও ১০) জুমআর নামাজে অংশ নেয়ার জন্য এত বেশি জোর দেয়ার কারণ জানিয়েছেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি বলেছেন, সূর্যোদয় হয় এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমআর দিন। হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা ও তাঁকে পৃথিবীতে পাঠানোর মতো কয়েকটি বিশেষ কারণেরও উল্লেখ করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।

তিনি সেই সঙ্গে জুমআর নামাজে ইমামের যত কাছাকাছি সম্ভব দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার তাগিদ দিয়েছেন। কারণ, যে ইমামের যত পেছনে দাঁড়াবে সে বেহেশতেও তত দেরিতে প্রবেশ করবে। এভাবে কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যায় দেখা যাবে, সবদিক থেকেই জুমআর নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই প্রতি ওয়াক্তে জামাতে এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে না পারলেও মুসল্লিরা সপ্তাহের এই একটি দিনে মসজিদে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করেন।

অন্য মুসলমানদের সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করেন। রমজানে জুমআর নামাজে সাধারণত মুসল্লিদের সমাবেশ অনেক বেশি ঘটে। গুনাহ থেকে মাগফিরাত এবং আল্লাহর রহমত পাওয়ার আশায় তারা মসজিদে যান। শেষ জুমআ হওয়ায় জুমআতুল বিদার নামাজে সব মসজিদেই মুসল্লিদের স্থান দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

মুসল্লিরা অবশ্য কেবলই গুনাহ থেকে মাগফিরাত পাওয়ার এবং পরকালে বেহেশতে যাওয়ার আশা নিয়ে মসজিদে যান না। একমাস ধরে সুবহে সাদিক বা ফজরের ওয়াক্ত থেকে মাগরিব তথা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা রাখার এবং সংযম পালনের পেছনেও মুসলমানদের জন্য রয়েছে নানামুখী কল্যাণ। রমজান শুধু পবিত্র মাস নয়, আল্লাহতা’লার সান্নিধ্য ও রহমত এবং গুনাহ থেকে মাগফিরাত পাওয়ার জন্যও এ মাসটি শ্রেষ্ঠ। সুরা আল বাক্বারাহর ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম (অর্থাত্ রোজা) ফরজ করা হয়েছে, যেমনভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ রমজানের মাসজুড়ে দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি চিন্তা ও কার্যক্রমের প্রতিটি ক্ষেত্রেও মুসলমানরা নিজেদের সভ্য ও পরিশিলীত রাখেন। তারা কোনো অন্যায় কাজে অংশ নেন না, কারও সঙ্গে বিবাদে জড়ান না, অন্যের ক্ষতির চিন্তা এড়িয়ে চলেন। সব মিলিয়েই রমজানের দিনগুলোতে মুসলমানরা আত্মশুদ্ধির, নিজেদের সভ্য রাখার এবং আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন। এ চেষ্টারই প্রধান একটি উপলক্ষ হিসেবে আসে জুমআতুল বিদা।