অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রাজধানীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ওসি সালাউদ্দিন নিহত

0
jfgjh
গুলিবিদ্ধ ওসি সালাউদ্দিন। পাশে ওসি সালাউদ্দিনের ফাইল ছবি।

রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের একটি হোটেলের ভেতর পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন নিহত হয়েছেন।

গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ সড়কে বিদেশী একটি হোটেলে কতিপয় সন্ত্রাসী বেশ কয়েকজন বিদেশী নাগরিকসহ কয়েকজনকে ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শুক্রবার রাত প্রায় ৯টা থেকে এ ঘটনা শুরু হয়।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, গোলাগুলির খবর তারা পেয়েছে।

gulasn
গুলশানে বিদেশী রেষ্টুরেন্টটি র‌্যাব, পুলিশসগ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘেরাও করে রেখেছে।

এদিকে রাত সাড়ে দশটার দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় হোটেলে আটকে পড়া সন্ত্রাসীরা। গুলিতে এক পথচারী ও দুই পুলিশ কনস্টেবল আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, আহতরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল প্রদীপ ও কনস্টেবল আলমগীর ও পথচারী আবদুর রাজ্জাক। তাঁদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ওই রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে। হোটেলে ৮ থেকে ১০ জন বিদেশি ছিলেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি হোটেলটি ঘিরে রেখেছে। ঘটনার পর পরই আশপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা। এ ঘটনায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে গুলশান এলাকায়।

1467394614
নিহত ওসি সালাউদ্দিন।

এদিকে একাধিক সুত্রে জানাগেছে, গুলশানে এখন পর্যন্ত  দফায় দফায় গুলি চলছে।

অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় ১ জন বিদেশি নাগরিক মারা গেছে। কমপক্ষে ১০ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ। র‌্যাবের মেজর এবং বনানী থানার ওসিসহ কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে,  ৮-১০ জন যুবক পিঠে ব্যাগ নিয়ে “আল্লাহু আকবর” শ্লোগান দিয়ে হামলা চালায়। পুলিশের ওপর ৯টায় গ্রেনেড চার্জ করা হয়।
দেশের ইতিহাসে এই প্রথম গ্রেনেড চার্জ করে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।
গুলশানের ঘটনাস্থলে একটি সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ লাইভ অনএয়ার বন্ধ করতে বলেছেন।
র‌্যাব মহাপরিচালক বলেছেন, ভেতরে যারা আটকা পড়েছেন তাদের বেশিরভাগই বিদেশি নাগরিক। তাদের উদ্ধারের জন্য অভিযান চালানো প্রয়োজন যা সরাসরি দেখানো সম্ভব নয়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, কিছুক্ষণের মধ্যে জিম্মি উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সারা দেশে আইন-শৃংখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার পুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। গুলশান এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা হয়েছে। কোনো গাড়িকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে যে গাড়ি রয়েছে তা সেখানেই থামিয়ে রাখা হয়েছে। সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

জানাগেছে, শুক্রবার রাত প্রায় ৯টা থেকে এ ঘটনা শুরু হলে ওসি সালাউদ্দিন প্রথম তার ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এবং তার সাথে সন্ত্রাসীদের গুলিবিনিময় হয় বলে প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান। এসময় ওসি সালাউদ্দিনসহ দুজনকে রক্তাক্তবস্থায় জিম্মি করা রেষ্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পরে তাদের হাসপাতালে নেয়ার পর রাত ১২টার দিকে ওসি সালাউদ্দিনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় আরো পুলিশ সদস্যসহ মোট ৩ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

দুর্বৃত্তরা ওই হোটেলে ঢুকে অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে পুলিশের সঙ্গে তাদের গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গোলাগুলির এই ঘটনায় পুলিশ সদস্য ও সাধারণ পথচারীসহ মোট ৩ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন-পুলিশের দুই কনস্টেবল আলমগীর (২০) ও প্রদীপ (২০) এবং পথচারী আলমগীর (৩০)।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। গুলশান জোনের উপ-কমিশনারের (ডিসি) নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।