অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পিলখানা হত্যা মামলাঃ ১০ হাজার পৃষ্ঠার রায় পড়তে সময় লাগবে কয়েকদিন

0
.

পিলখানায় হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের রায় ঘোষণা অব্যাহত রেখেছেন হাইকোর্ট। রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে এই রায় পড়া শুরু হয়। বিকেল ৪ টার দিকে সোমবার পর্যন্ত রায় ঘোষণা মুলতবি করেন আদালত।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিচ্ছেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

আসামি সংখ্যার দিক দিয়ে এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। মামলার ১০ হাজার পৃষ্ঠার রায় পড়তে কয়েক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ের সার সংক্ষেপ পড়ার সময় আদালত একথা জানান।

আদালত বলেন, ‘রায়ে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দেবো। রায়টি সবমিলিয়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার বেশি। রায় পুরো পড়বো না। তবে পুরো পর্যবেক্ষণটি আমরা পড়ে শুনাবো। পূর্ণ পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা সামারিলি জাজমেন্ট (সংক্ষিপ্ত রায়) দেবো। সেখানে রায়ের ফাউন্ডেশন (মূল ভিত্তি) অংশে কোন কারণে কী সাজা পেয়েছেন তা আমরা উল্লেখ করবো। এ কারণে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।’

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়ার দুটি ধাপ শেষ হতে যাচ্ছে।

এই মামলায় আসামি ছিলেন ৮৪৬ জন। সাজা হয় ৫৬৮ জনের। তাঁদের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছিল। খালাস পেয়েছিলেন ২৭৮ জন। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিতরাও জেল আপিল ও আপিল করেন। আর ৬৯ জনকে খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। এসবের ওপর ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ৩৭০তম দিনে গত ১৩ এপ্রিল। সেদিন শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। এরপর হাইকোর্ট রায়ের জন্য ২৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

নিম্ন আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি মারা গেছেন, ১৪ আসামি এখনো পলাতক। যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামি (বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টু ও শফিকুল ইসলাম) মারা গেছেন। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া ২৫৬ জনের মধ্যে ৩ আসামি মারা গেছেন, ২৮ জন আপিল করেননি। খালাস পাওয়া ৬৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। মোট ৬ জন মারা যাওয়ায় ৬০৩ জনের বিষয়ে রায়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ১৪ জন ছাড়া অপর ৫৮৯ আসামি কারাগারে আছেন।

পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর হয়। এ মামলার বিচার হয় বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে।