অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

খেলনা না দিয়ে শিশুদের নিয়ে বেড়াতে যান

1

আপনার বাচ্চাকে সর্বাধুনিক ও সেরা সব খেলনা…(বর্তমানে বাজারে প্রচলিত খেলনার নাম বসিয়ে নিন) কিনে দেওয়ার পরিবর্তে এই অর্থ ছুটিতে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য তুলে রাখুন। কেননা পারিবারিক এই অবকাশ শিশুদের মানসিক সুখের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে।

ব্রিটেনের খ্যাতনামা শিশু মনোরোগ চিকিৎসক অলিভার জেমসের মতে, বাচ্চাদের নতুন খেলনা কিনে দেওয়ার পরিবর্তে আপনার অর্থ ব্যয়ের উৎকৃষ্ট খাত হলো সপরিবারে বেড়াতে যাওয়া। কেননা আপনার বাচ্চাকে কিনে দেওয়া দামি খেলনাটি নিয়ে শিশুটির আগ্রহ বড়জোর এক বা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হবে। টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক অবকাশ শিশুর জন্য অনেক বেশি মূল্যবান। অবকাশ যাপনের সময়টুকু এবং তাঁর পরবর্তীকালে দীর্ঘ সময়ের জন্য এই স্মৃতি শিশুর মনে স্থায়ী হয়।’

অলিভার জেমস ‘লাভ বোম্বিং: রিসেট ইওর চাইল্ডস ইমোশনাল থার্মোস্ট্যাট’সহ বাচ্চা এবং মা-বাবার সম্পর্ক নিয়ে অসংখ্য বইয়ের রচয়িতা। ব্রিটেনের সর্বাধিক বিক্রীত মনস্তাত্ত্বিক বইয়ের রচয়িতা তিনি।

অলিভার জেমস বলেন, খেলনা ও গেমস খেলতে দেওয়ার পরিবর্তে পারিবারিকভাবে একসঙ্গে সময় কাটানোও শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য জরুরি। আর পারিবারিকভাবে বেড়াতে গেলে তা শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২০১০ সালে সাময়িকী ‘ডায়ালগস ইন ক্লিনিক্যাল নিউরোসায়েন্স’-এ প্রকাশিত নিউরোসায়েন্টিস্ট জাক পাঙ্কসেপের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানের আগ্রহ শিশুদের মস্তিষ্কের যে অংশে পরিচালিত হয়, নতুন কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেই অংশ উদ্দীপনা পায়। আর শিশুরা যখন বাসায় থাকে, তখন ওই অংশটি কোনো ধরনের উদ্দীপনা পায় না। শিশু যখন নতুন জিনিস দেখে, তখন মস্তিষ্কের ওই অংশটি জড়িত হয়। এ সময় উপকারী নিউরোকেমিক্যাল নির্গত হয়। এটি মানসিক চাপ কমায়, একে অপরের প্রতি উদার অনুভূতির জন্ম দেয় এবং বিশ্বের সবকিছুই ভালো—এমন একটি আনন্দদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি করে। পাশাপাশি এই অবকাশযাপন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আবেগের ঘাটতি পূরণ করে।

তবে বাস্তবতা হলো সময় এবং অর্থের অভাবে প্রতিবছর, এমনকি অনেকের পাঁচ বছর পরপরও সপরিবারে বেড়াতে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। এই সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আপনি শিশুদের নতুন অভিজ্ঞতা দিতে পারেন। বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে নতুন একটি পদ রান্না করুন। দূরে না গিয়ে কাছাকাছি কোনো উদ্যানে যান। যেকোনো পশুপাখির খামারে নিয়ে যান। আপনার বাড়ির পেছনটাই যেন নতুন ডিজনি ওয়ার্ল্ড—এভাবে চিন্তা করুন। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলেই সেটি সম্ভব। খেলনা কিনে দেওয়ার পরিবর্তে বাচ্চাকে নতুন অভিজ্ঞতা দেওয়ার খাতে অর্থ ব্যয় করুন।

১ টি মন্তব্য
  1. Alamgir Noor Chittagong বলেছেন

    সুন্দর একটি সংবাদ।