কাপ্তাইয়ে পিকনিক স্পট ইজারার সিডিউল ছিনতাই করলো যুবলীগ সভাপতি নাছির বাহিনী
জেলা প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কাপ্তাইয়ে প্রশান্তি পিকনিক স্পট ইজারার সিডিউল ছিনিয়ে নিয়েছে কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ও তার বাহিনী। বুধবার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কার্যালয়ে এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয় একজন সাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক জিয়াউর রহমান জুয়েল।
সিডিউল জমা দিতে না পারায় টেন্ডার বাতিল করে পুনঃটেন্ডার দেওয়ার দাবী করে দুই রিসোর্ট ব্যবসায়ী চৌধুরী হাসান মাহমুদ আকবরী ও টিএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী ওয়াকার উদ্দিন মোঃ তারেক দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম ও কোতোয়ালী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে তাঁরা জানান, কাপ্তাই যুবলীগের সভাপতি ১০/১৫ জন ক্যাডার নিয়ে সিডিউল ছিনতাই ও ভয়ভীতি দেখানোয় সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
এদিকে দুপুর সোয়া বারোটার দিকে খবর পেয়ে দৈনিক আমাদের সময়’র রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান জুয়েল দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। এসময় দপ্তরের অফিস সহকারীর কক্ষের দরজার সামনে একটি দরপত্রের বাক্সের উপর তিন যুবক বসেছিলেন। দরজা, বাইরে ও উঠানে ছিল ১০/১৫ জন যুবকের সতর্ক পাহাড়া। ছিল ছিমছাম নিরবতাও।
এসময় অফিসে বনকর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। বনবিভাগের একটি কর্মশালায় তিনি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে অবস্থান করছিলেন। এমনকি পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাবাহিনীর কোন সদস্যকেও দেখা যায়নি। তিন যুবক কেন দরপত্রের বাক্সে বসে আছে এমন প্রশ্নের উত্তর দেয়নি উপস্থিত অফিসের কর্মচারীরা। ঐ তিন যুবকের ছবি তুলতে গেলে কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। হাতে ফোন দেখায় সেটিও ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে লাঞ্চিত করে অন্য ক্যাডাররা ঘিরে রাখে।
অন্তত ১৫ মিনিট এই পরিস্থিতি চললেও বনবিভাগের কেউ টু শব্দটি করেনি। ব্যাপক হইচই আর উচ্চস্বরে ঠিকাদারদের অশালীন গালাগাল দিতে থাকে। সিডিউল জমাদানের শেষ সময় দুপুর সাড়ে বারোটা হলে এই ক্যাডারদেরই একজন টেন্ডার বাক্স নিয়ে বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রেখে আসে।
কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ফরেষ্ট অফিসে সকলেরই সামনেই দম্ভোক্তি করে বলেন, দরপত্র ক্রয় থেকে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেছি আগে থেকেই। তিনটি নামে দরপত্রও বাক্সে ফেলেছি। আমার সাথে কথা না বলে এর বাইরে কেউ সিডিউল জমা দিক এটা মানতে পারিনা।
তবে বনকর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বিকাল ৪টায় ফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, তাঁর কার্যালয়ে সিডিউল নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। তিনি বলেন, কর্মশালা থাকায় আমি অফিসে থাকতে পারিনি। নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে বলেছিলাম কিন্তু কেন তাঁরা আসেনি জানিনা। সিডিউল ছিনতাইয়ের কোন অভিযোগ পাননি বলেও জানান তিনি।
ঐ ছিনতাইকারী কে ধরিয়ে দিন, তার নাম ঠিকানা, ছবি গন মাধ্যমে প্রকাশ করে তাকে ধিক্কার জানান।