অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সীতাকুণ্ডে জঙ্গি সন্দেহে ৪ জনকে আটক নিয়ে পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকা

1
thana_0
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ফাইল ছবি।

চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে আটক ৪ জনের ব্যাপারে মুখ খুলছেন না প্রশাসন। এনিয়ে পুলিশের ভুমিকাও রহস্যজনক মনে করছেন স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা।

শনিবার বিকালে চিটাগাং কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে এদের আটকের বিষয়টি তাৎক্ষনিক স্বীকার করলেও রাতে পুলিশ জানায় কোন জঙ্গি টঙ্গি ধরা হয়নি। নিয়মিত অভিযানে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড পুলিশের একাধিক সুত্র জানায়, গোপন সংবাদের পুলিশ জানতে পারে বাড়বকুণ্ডস্থ চিটাগাং কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে কর্মরত চীনা নাগরিকদের ওপর জঙ্গিরা হামলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ খবরে শুক্রবার বিকেল থেকে পুলিশ জঙ্গিদের আটক করতে অভিযানে নামে। শনিবার বিকেলে সন্দেহভাজন ৪ জঙ্গিকে পুলিশ আটক করে সীতাকুণ্ড থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। এ সময় চট্টগ্রাম জেলার এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে থানায় কোনো সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে জানতে এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান ও সীতকুণ্ড মডেল থানার ওসি ইফতেখার হাসানের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করলেও তারা ফোন ধরেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দুপুরে ৪ জনকে আটক করে চোখ বাঁধাবস্থায় নিয়ে যেতে দেখেছি সম্ভবত তাদের নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছে। তবে যেহেতু আমার দায়িত্ব সীতাকুণ্ড থানায় নেই তাই আমি বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।

বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজি সাংবাদিকদের বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে একজন দুষ্কৃতকারীর একটি ভাড়া ঘরে এ জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়েছিল। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করলেও ওই দুষ্কৃতকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। চেয়ারম্যান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বাড়বকুণ্ডের সিসিসিতে কর্মরত বিদেশিদের ওপর জঙ্গিদের হামলার পরিকল্পনা থাকতে পারে।

তবে থানার ডিউটি অফিসার এস আই তারেক মাহমুদ জানান, বাড়বকুণ্ড থেকে জঙ্গি সন্দেহে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছে পুলিশ। তাই এখনো বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না।

তবে রাত ১১টার দিকে ফোন করে ওসি ইফতেখার হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কই কোন জঙ্গি টঙ্গি আমরা আটক করিনি। আমিতো কোন মিডিয়াকে বলিনি জঙ্গি আটকের কথা।

দুপুর থেকে কেন সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করছেন না এ প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, মিডিয়ার লোকজন বার বার ফোন করে বিরক্ত করছে এ কারণে কারো ফোন ধরি নাই। জঙ্গি ধরলেতো আমরা নিজেরাই মিডিয়াকে জানাতাম। এতো বড় খবর গোপন করবো কেন?

স্থানীয়রা জানান, ২০০১ সালে জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান সীতাকুণ্ডের কুমিরা দেলিপাড়া এলাকায় একটি মসজিদে আসেন। সেখানে মাহফিল শেষে একটি জঙ্গি সংগঠন গঠন করেন তিনি। তার ফাঁসি কার্যকর হলে পরবর্তী সময়ে ওই কমিটির সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। ওই সময় আটক হওয়া কয়েকজন ছাড়া পেয়ে আবারও জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।