অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

১২ বছরে বিএনপির বিরুদ্ধে ৫০ হাজার মামলা, আসামী ১২ লাখ

0
.

২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৫০ হাজার ৭৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১১ লাখ ৯১ হাজার ৪৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩ হাজার ৯৪৭ জন নেতা-কর্মী এখন কারাগারে আছেন।

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে সাতটি বিভাগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫২৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৭ জন। গ্রেফতারের সংখ্যা ১ হাজার ৫১৯ জন। গুম হয়েছেন একজন, খুন হয়েছেন একজন।

বিএনপির দেওয়া হিসাব থেকে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা হয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২১টি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ৮৮টি মামলা হয়েছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ৩টি, মওদুদ আহমেদের বিরুদ্ধে ৯টি, তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪টি, প্রয়াত এম কে আনোয়ারের বিরুদ্ধে ৩৪টি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৫২টি, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৩৭টি, নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ৭টি, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৯টি, সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করা হয়েছে এবং মামলাগুলো বিচারাধীন আছে।

এ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ২৪ জন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে মোট ২৯৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি মামলা হয়েছে আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৯৬টি মামলা হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদের ২১ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩০৮টি। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে বেশি মামলা হয়েছে বরকত উল্লাহ বুলুর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ৬১টি মামলা হয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরে ৫৪টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ মোট আটজন যুগ্ম মহাসচিবের বিরুদ্ধে ২৭৭টি মামলা হয়েছে। যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২৯টি মামলা হয়েছে হাবিব-উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে।

দলটির পাঁচজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৭ জন সম্পাদকের বিরুদ্ধে মোট ৩৩৩টি মামলা হয়েছে। ১২ জন সহসম্পাদকের বিরুদ্ধে ১৪৩টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাহী কমিটির ১৩৪ জন সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরার দিন গুলশান থেকে বকশিবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় একই দিনে চার-পাঁচটি মামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এসব মামলায় হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে নেতা-কর্মীরা ‘সুশৃঙ্খলভাবে’ থাকে এবং এসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই বলে বিএনপি মনে করে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের হিসাব সংবলিত কাগজে দলের পক্ষ থেকে কিছু বিষয়কে ‘রহস্যময়’ ও ‘অবিশ্বাস্য’ তথ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিএনপি দেখেছে, একই দিনে বিভিন্ন থানায় ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় একই ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। একই আসামি উত্তরা থানা এলাকা থেকে ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে যাত্রাবাড়িতে গিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। আবার ওই ব্যক্তিই আধ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রাবাড়ি থেকে গাবতলী, মিরপুর এলাকায় গিয়ে অপরাধ সংগঠিত করেছে। এসব মামলার এজাহার পড়ে মামলাগুলোকে ‘কাল্পনিক’ বলে মনে করছে বিএনপি।
এ পর্যন্ত বিএনপির ২৩ হাজার নেতা-কর্মী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।