অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাবে-চট্টগ্রামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
.

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি বাংলাদেশকে অপার সম্ভাবনার দেশ উল্লেখ করে বলেছেন-প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী, দক্ষ, সাহসী নেতৃত্বের কারণে এদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে ব্যবসা পরিধি বহুগুণে বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের যৌথ আয়োজনে চেম্বার দুইদিন ব্যাপী ফেস্টিভ্যাল-২০১৮ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিকে নিরাপদ ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক মন্তব্য করে তার সরকার জঙ্গীবাদ দমন করাসহ ব্যবসায়ীদের সকল প্রকার নিরাপত্তা প্রদানে সচেষ্ট রয়েছে বলে জানান। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, দ্বিগুণ মাথাপিছু আয় এবং উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ এবং ২০৩৩ সালের মধ্যে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনে একতাবদ্ধ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী বলেন-২০২১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি এম. এ. লতিফ এমপি ও এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন)। ২দিনব্যাপী আয়োজনমালার অংশ হিসেবে “দেশের অবকাঠামোর বৈপ্লবিক পরিবর্তনে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি ও করণীয়” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আমির মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম, বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’র সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, ওম্যান চেম্বার সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, চেম্বারের প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি এম. এ. ছালাম, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর সিকান্দর খান, ব্যবসায়ী নেতা তাহের সোবহান, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, দৈনিক পূর্বকোণ’র পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চিটাগাং ক্লাবের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এস. এম. আবু তৈয়ব, সিএন্ডএফ’র সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, বিএসএ’র পরিচালক খায়রুল আলম সুজন ও প্রণয়ন’র সিইও স্থপতি সোহেল সাকুর।

বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বিগত বছরগুলোতে দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হলে দেশ কাংখিত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। এজন্য রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সকল ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে আহবান জানান সিটি মেয়র।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম. এ. লতিফ বলেন-বর্তমান সরকার মেগা প্রকল্পের কমিটমেন্টের পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন করছে। তিনি দেশের সবাইকে মিলেমিশে সরকারের অনুসৃত নীতিমালা বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এম. এ. লতিফ এমপি বলেন-চীনের পরে বাংলাদেশই হবে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরবর্তী গন্তব্যস্থল। তাই রাতারাতি পরিবর্তনের আশা না করে সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। অর্থনীতির স্বাধীনতার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি রাজনৈতিক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে অর্থনীতি বিধ্বংসী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-চিটাগাং চেম্বার ১১৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করছে ও দেশের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বলিষ্ঠ কন্ঠ হিসেবে পরিচিত। ক্ষুদ্র, মাঝারি, বৃহৎ ব্যবসায়ীরা এই চেম্বারের সদস্য। চেম্বার ফেস্টিভ্যাল-২০১৮ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা চেম্বারের সদস্যদের প্রতি সম্মান দেখাতে চাই। দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে বর্তমান সরকার অভাবনীয় সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা বজায় রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যায় পিঠা উৎসব ও উপজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

ফেস্টিভ্যাল-২০১৮ এর দ্বিতীয় দিন শনিবার নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেজবান।