অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

তেওতা জমিদার, মানিকগঞ্জ

0

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ি। তেওতা জমিদার বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে- আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তার প্রিয়তমা প্রমীলা দেবীর প্রেমের স্মৃতি। জমিদার বাড়ির পাশেই ছিল নজরুলের প্রিয়তমা স্ত্রী প্রমীলা দেবীর বাড়ি। প্রমীলা দেবীর পিতা বসন্ত সেনের ভ্রাতুষপুত্র বীরেন সেনের সঙ্গে কবির পরিচয় সূত্র ধরে প্রায়ই তাদের বাড়িতে যাতায়াত করত। এভাবেই প্রমীলা দেবীর (ডাকনাম দুলী) সঙ্গে নজরুলের প্রেম। প্রমীলা নজরুলকে কবিদা বলে ডাকতেন। একদা দুলি তথা প্রমীলা যখন বাড়ির পুকুরে গোসল করতে যেত, তখন তার রূপে মুগ্ধ হয়ে কবি বলে উঠেন, ‘তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সেকি মোর অপরাধ’

তেওতা জমিদার বাড়িটির বয়স ৩০০ বছর ছাড়িয়েছে। জেলার ইতিহাস থেকে জানা গেছে, সপ্তদশ শতকের শুরুতে পাচুসেন নামের পিতৃহীন দরিদ্র এক কিশোর তার সততা আর চেষ্টায় তামাকের ব্যবসা করে বিপুল ধন-সম্পদ অর্জন করেন। দরিদ্র পাচুসেন দিনাজপুরের জয়গঞ্জে জমিদারী কিনে হয়ে যান পঞ্চানন সেন। তারপর শিবালয়ের তেওতায় তিনি এই জমিদার বাড়িটি তৈরি করেন।

জমিদার বাড়ির মূল ভবনের উত্তর দিকের ভবনগুলো নিয়ে হেমশংকর এস্টেট এবং দক্ষিণ দিকের ভবনগুলো নিয়েছিল জয়শংকর এস্টেট। প্রতিটি এস্টেটের সামনে বর্গাকৃতির অট্টালিকার মাঝখানে আছে নাটমন্দির। পূর্বদিকের লালদিঘী বাড়িটি ছিল জমিদারদের অন্দর মহল। অন্দর মহলের সামনে দুটি শানবাঁধানো ঘাট, এর দক্ষিণ পাশের ভবনের নিচে রয়েছে চোরা কুঠুরী যাকে এলাকার মানুষেরা বলে অন্ধকুপ।

উত্তর ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ৪ তলা বিশিষ্ট ৭৫ ফুট উচ্চতার নবরত্ন মঠ। এর ১ম ও ২য় তলার চারদিকে আছে ৪টি মঠ। তেওতা জমিদার বাড়িটি ৭.৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই জমিদার বাড়িটি নজরুল-প্রমীলার স্মৃতিধন্য একটি স্থান। এখানে নজরুলের বেশ কিছু স্মৃতি খুঁজে পাওয়া গেছে। তাই বাড়িটিকে সংরক্ষণ করে এর হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা দরকার। বাড়িটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পর্যটন আসে আরিচার শিবালয়ে এর অবস্থান।

যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে আরিচার দূরত্ব ৯০ কি. মি.। ৩ ঘণ্টায় বাসে যেতে ভাড়া দিতে হবে ৬০-৮০ টাকা। গাবতলী থেকে যাত্রীসেবা, বিআরটিসি, পদ্মা লাইন, ইত্যাদি বাসে আরিচা ঘাট যেতে হবে। আরিচা ঘাট থেকে রিকশায় ১৫-২০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যাবে তেওতা জমিদার বাড়ি।