অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সন্দ্বীপে উচ্ছেদ হয়নি ‘ভূমিদস্যুদের স্থাপনা’

0
.

জেলার সন্দ্বীপ উপকূলীয়ে এলাকায় প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধের উঁচুকরণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।  বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হবে আগামী জুনে মাসে।

কিন্তু এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প এলাকা হতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গোরস্থান ছাড়া সব স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও রহস্যজন কারণে পূর্ব সন্দ্বীপ বেড়িবাঁধে ভূমিদস্যুদের স্থাপনা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

জানাগেছে-নিচের ভূমি হতে ১৩ ফিট উঁচু করা হবে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার বাঁধ। নির্মাণ হচ্ছে। নতুন ভাবে সন্তোষপুর, কালা পানিয়া, সুঁতাচড়া ও কাটাখালী এলাকায় ৪টি নতুন স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা হচ্ছে।

এই প্রথমবার সন্দ্বীপ বেড়িবাঁধ উঁচুকরণ প্রকল্পে তাদের অনুসরণ করে অবৈধ দখলদাররা প্রকল্প এলাকার পাশে নির্মাণ সামগ্রী মজুদ রেখেছে। বেড়িবাঁধ প্রকল্পের শুরুতেই উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলন যে সব ভূমিদস্যুরা করেছে তাদের স্থাপনা প্রকল্প এলাকায় থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

.

সূত্রমতে গত বছর শেষনাগাদ প্রকল্প এলাকায় সমস্ত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের সরকার আদেশ জারী করে। এ আদেশের পর ভূমিদস্যুরা দখল বজায় রাখতে এক পর্যায়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতার নিকট তদবীর করে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে অবৈধ অন্যান্য দখরদাররা নিজ দায়িত্বে স্থাপনা অপসারণ করে। কিন্তু গুপ্তচড়া ঘাট হতে হক সাহেবের বাজার ঘাট পর্যন্ত প্রকল্প এলাকা প্রকল্পের উপর অবৈধ স্থাপনা এখনো চোখে পড়ে। বিশেষ করে গাছুয়া ফেরিঘাটের দক্ষিণ পাশে এরশাদ মার্কেট রোডের প্রবেশ পথে প্রকল্পের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে এবং স্থানীয় খতিয়ানভুক্ত ভূমির মালিকের ভূমির সম্মুখ ভাগে কতিপয় ব্যক্তি অবৈধভাবে নির্মিত দোকান অপসারণ না করায় স্থানীয় পারভেজ, বেলাল, হাশেম ও হুমায়ূন এর বিরুদ্ধে বাউরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে ভূমি মালিক গত ২৮ মার্চ অভিযোগ দায়ের করে এবং ১লা এপ্রিল উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিকট থাকবাউরিয়া মৌজার ১৩৭ দাগের ভূমি মালিক লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করে।

এরপর গত ১৮এপ্রিল বেড়িবাঁধ প্রকল্পের পশ্চিম পাশে খতিয়ানভ্ক্তু সম্পত্তির মালিক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পওর বিভাগ-২ এবং সাবডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার পওর বিভাগ-২ সন্দ্বীপের নিকট উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।  প্রকল্প সংলগ্ন ভূমি মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে সাবডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আবছার আজাদ জানান- বেড়িবাঁধ প্রকল্পের উপর পাশের ভূমির মালিক ও জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা গত ১০ এপ্রিল অপসারণের জন্য শেষবারের মত সময় বেঁধে দেয়া হয়। এরপরও কেনো তারা দোকান অপসারণ করেনি তা জানতে এবং দখলদার ও ভূমিদস্যুদের অবস্থানসহ প্রকল্পের বাস্তব অবস্থা জানাতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হককে নির্দেশ দেন।

.

প্রকল্প সংলগ্ন ভূমি মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে বাপাউবো পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী খ.ম জুলফিকার তারেক জানান- প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় ৩৪ কিলোমিটার বাঁধ ১৩ ফিট উঁচুকরণসহ ৪টি পুকুর স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য ৮জন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।  আগামী জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।  প্রকল্প এলাকায় যে সমস্ত অবৈধ দখলদাররা প্রকল্পের শুরুতে উচ্ছেদ বিরোধী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে শুধু তাদের স্থাপনা অপসারণ নয় অদূর ভবিষ্যতে ভূমিদস্যু ও অবৈধ দখলদাররা বাঁধের সরকারী চিহ্ন নষ্ট করতে না পারে এবং কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে সে জন্য মাইকিং ও সাইনবোর্ড সাটানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী খ.ম জুলফিকার তারেক জানান বাপাউবো এর কোন কর্মকর্তা বা ঠিকাদারের লোকজনের যোগসাজশে অবৈধ দখলদাররা কোন প্রকার স্থাপনা প্রকল্প এলাকায় রাখার চেষ্টা করলে তাদের তালিকা প্রস্তুত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, ভূমিদস্যু ও অবৈধ দখলদারদের অনুসরণ করে কেউ যাতে প্রকল্প এলাকায় কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজরদারী থাকবে। সন্দ্বীপ উপকূলীয় এলাকায় ১০ কিলোমিটার ব্লক প্রোটেকশন প্রকল্প ২’শো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে অল্প কিছুদিনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে জানান প্রকৌশলী খ.ম জুলফিকার তারেক।

লেখকঃ এমদাদুল ইসলাম রুবেল
                                                                                                                   শিক্ষানবীস আইনজীবী