অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ- বন্দর চেয়ারম্যান

0
.

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকাল আগের ২.৭৫ দিনের জায়গায় ২.৫৮ দিনে নেমে এসেছে।  বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে আগের চেয়ে বহুগুণ বেশী।  আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ একথা জানান।

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী (বন্দর দিবস) উপলক্ষে শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

চেয়ারম্যান বলেন, বন্দরে কোন ধরণের কন্টেইনার জট ও ট্রাক জট থাকবেনা। বে টার্মিনাল নির্মান শেষ হলে বন্দরের কন্টেইনারগুলো সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে এবং বে টার্মিনাল থেকেই বাইরে সরবরাহ করা হবে।  বে টার্মিনালেল পাশে নির্মান করা হবে বিশালাকার ট্রাক টার্মিনাল।  কন্টেইনারের জন্য অপেক্ষমান ট্রাক ও প্রাইমমুভার গুলো সে টার্মিনালেই থাকবে।  বন্দরের জেটি থেকে মুভার এবং ট্রেনের মাধ্যমে কন্টেইনার গুলো বে টার্মিনালে নিয়ে স্টক করা হবে।  ফলে বন্দরের মুল ইয়ার্ডে আর কন্টেইনার জট এবং বাইরে রাস্তায় ট্রাকজট থাকবেনা।

সরকারের রূপকল্প-২০২১ সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দরকে “ব্যবহারকারী বান্ধব” বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে দাবী বন্দর চেয়ারম্যানের।

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকাল আগের ২.৭৫ দিনের জায়গায় ২.৫৮ দিনে নেমে এসেছে।  বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে আগের চেয়ে বহুগুন বেশী উল্লেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ২৬ লাখ টিইউস কন্টেইনার এবং প্রায় সাড়ে ৮ কোটি কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। খোলা পণ্য (কার্গো), কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি সামাল দেওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রুপকল্প সামনে রেখে স্ট্র্যাটেজিক মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এবার বন্দর দিবসে অবসর নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

.

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী দেড়মাসের মধ্যে বন্দরের ক্যাপিটেল ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া বন্দরের অভ্যন্তরে এবং বর্হিনোঙরে ১১ টি কোম্পানি নিয়মিত ড্রেজিংয়ের কাজ করছে। বন্দরের জেটিতে ৯.৫ মিটারের জাহাজ প্রবেশে কোন প্রকার সমস্যা হচ্ছেনা। পর্যায়ক্রমে সবগুলো জেটিতে বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে।

তিনি বলেন, সরকারের দিকনির্দেশনায় নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) জন্য হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে ৯টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৪টি স্ট্র্যাডেল কেরিয়ার, ৫টি কনটেইনার মুভার, ১টি রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহ করে বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট ফ্লিটে সংযুক্ত করেছি। ৩টি স্ট্র্যাডেল কেরিয়ার শিপমেন্ট করা হয়েছে, শিগগির বন্দরে পৌঁছবে।

তিনি জানান, ৬টি শিপ টু শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন, ২টি আরটিজি, ১টি মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহের আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। ৪টি শিপ টু শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহের দরপত্র মূল্যায়ন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৬টি আরটিজির এলসি খোলা প্রক্রিয়াধীন ও ৩টি আরটিজির দরপত্র মূল্যায়নাধীন আছে। ৩টি স্ট্র্যাডেল কেরিয়ার সংগ্রহের জন্য শিগগির চুক্তি সম্পাদন হবে।

কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি সামাল দেয়ার জন্য সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মান কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগান এটির নির্মান কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বন্দও চেয়ারম্যান।  এ ছাড়া সরকারী বেসরকারী অংশিদারিত্বে লালদিয়া মাল্টি পারপাস টার্মিনাল নির্মানের জন্য ৫টি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি এ টার্মিনালটি নির্মানের কাজ শুরু করা যাবে। এ ছাড়া মাতাবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মানের জন্য পিজিবিলিটি স্টাডি চলছে।

বন্দর চেয়ারম্যান জানান, এবার বন্দর দিবসে অবসর নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সভায় বন্দরের সদস্য কমডোর হারবার এন্ড মেরিন শাহিন রহমান, ক্যাপ্টেন খন্দকার আকতার হোসেন ও কামরুল আমিনসহ বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।