মিরসরাইয়ে জেলি মিশ্রিত ৮৩ কেজি চিংড়ি ও কারেন্ট জাল জব্দ
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জেলি মিশ্রিত ৮৩ কেজি চিংড়ি জব্দ করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এছাড়াও ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ ও অবৈধভাবে চিংড়ি ধরার প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করা হয়েছে। মৎস্য সংরক্ষন আইন ও খাদ্যশস্য সংরক্ষণে পাটজাত পন্যের ব্যবহার না করার দায়ে সর্বমোট ১৯হাজার ৪০০টাকা জরিমান আদায় করা হয়।
সোমবার (২৫জুলাই) দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় চিংড়ি এসব অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজেষ্ট্রিট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমদ সুমনের নেতৃত্বে এসব অভিযান পরিচালিত হয়।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মৎস্য সংরক্ষন আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও মাছের গুণাগুন রক্ষার জন্য সপ্তাহব্যাপী কার্যক্রম চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ফরমালিন ও ভেজাল বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে দিনব্যাপী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। সকালে মিরসরাই পৌর বাজার থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। মিরসরাই বাজার ও বড়তাকিয়া বাজারে ফরমালিনযুক্ত কোন মাছ পাওয়া যায়নি। মিঠাছরা বাজারে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে মোঃ তাহেরের দোকান থেকে ৪০হাজার টাকা মুল্যের ৩০হাজার মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার এবং তার কাছ থেকে ৫হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পরে প্রকাশ্যে জব্দকৃত কারেন্ট জাল কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
বারইয়ারহাট পৌর বাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের খবর পেয়ে বাদশা নামের এক মাছ বিক্রেতা পালিয়ে যায়। এসময় জেলি পুশ করা বিষাক্ত ৮৩ কেজি চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। যার মুল্য প্রায় ৬৬ হাজার টাকা। পরে জব্দকৃত এসব চিংড়ি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, জেলি পুশ করা চিংড়ি একদিকে যেমন বিষাক্ত ও ক্ষতিকর অন্যদিকে ক্রেতাদেরকে ওজনে ঠকানো হয়। বিদেশী রপ্তানীকৃত ফেরত আসা এসব চিংড়ি অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে দেদারছে বিক্রি করে আসছে। যা খেলে মানুষ পেটে পাথর, ক্যান্সার সহ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এলাকা থেকে আসা ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী টিনের শেড নির্মাণ করে ৫/৬ দিন অবস্থান করে অবৈধভাবে চিংড়ি পোনা আহরণ ও পাচার করে আসছিল। এমন সংবাদ পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে চিংড়ি পোনা ধরার অবৈধ মশারী-জাল ও বিভিন্ন সরাঞ্জামাদি জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকৃত এসব সরঞ্জামাদির মূল্য প্রায় ২লাখ টাকা। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান।
অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, ক্ষেত্র সহকারী রেজাউল করিম, দিদার হোসেন প্রমুখ।