অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

অভিযুক্ত চিকিৎসককে চাকুরিচ্যুতির দাবি মানবাধিকার কমিশনের

0
.

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
লোহাগাড়া সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বের করে দিয়ে প্রসুতিকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেয়া চিকিৎসককে চাকুরি থেকে অব্যহতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গভর্ণর ও চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট আমিনুল হক বাবু।

তিনি বলেন, যে চিকিৎসক দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকার পরও প্রসুতি মাকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে তার আর এই পেশায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই। দ্রুত তদন্ত করে প্রসুতিকে চিকিৎসা না দেয়া ও নব জাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত তদন্ত করে চাকরি থেকে অব্যহতি দেযার দাবি জানিযেছেন তিনি।

আমিনুল হক বাবু বলেন, এটা অত্যন্ত জঘন্য পর্যায়ের। চিকিৎসকের নিকট এধরনের আচরণ আশা করা যায়না। সেবার মন মানসিকতা নিয়ে এই পেশায় প্রবেশ। অথচ চিকিৎসা না দিয়ে রোগিকে বাহিরে পাঠিয়ে দেয়ার কারণ কি বের করতে হবে। একই সাথে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে রোগিকে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

মানবাধিকার কমিশনের এই দায়িত্বশীল বলেন, চিকিৎসা না পেয়ে সদ্য জন্ম নেয়া শিশু মৃত্রুর দায় অবশ্যই ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকের। হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ও প্রসুতি মাদের স্বাভাবিক প্রসব বা সিজারের সকল সুযোগসুবিধা থাকার পরও এত রাতে প্রসুতিকে চিকিৎসা না দিয়ে চট্টগ্রামে রেফার বা অন্যস্থানে চলে যেতে বলা এটা চরম দায়িত্ব অবহেলা। ওই সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে সাময়িক অব্যাহতি পূর্বক তদন্তের মাধ্যমে বের করে আনার জন্য তিনি চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এদিকে সরকারি হাসপাতাল থেকে “বের করে দেয়ার পরই খোলা মাঠে সন্তান প্রসব ও সদ্য জন্ম নেয়া শিশু মৃত্যু”র সংবাদ প্রকাশের পর পরই এ ঘটনায় তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দিযেছেন চট্টগ্রামের সির্ভিল সার্জন ড. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অর্থপেডিক মেডিসিন ও সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী কনসালটেন্টকে দিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন নিজেই।

তিনি বলেন, “বের করে দেয়ার পরই খোলা মাঠে সন্তান প্রসব” সংবাদটি দেখে অনেকেই আমাকে কল দিয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও জঘন্য পর্যায়ের। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্তা নেয়া হবে।

সিভিল সার্জন বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে অতিঅল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেযার জন্যও বলা হয়।

এর আগে বুধবার দিনগত মধ্যরাতে লোহাগাড়া সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বের করে দেয়ার পরই খোলা আকাশের নীচে সন্তান প্রসব করেছেন মরিয়ম বেগম নামে এক মা। ওই রাতের সাড়ে ১০টার দিকে তিনি প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে বের করে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় প্রসুতি মা মরিয়মকে বেসরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওখানে তাকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়ার পর মোটামুটি সুস্থ আছেন তিনি। তবে তার সদ্য জন্ম নেয়া পুত্রকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি

*লোহাগাড়ায় খোলা আকাশের নীচে সন্তান প্রসব!