অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

র‌্যাবের মাদক বিরোধী অভিযান, পাঠকের ভাবনা

4
.

কে.এম তাইফুল রফিকঃ

র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক দায়িত্ব নেয়ার পর বলিষ্ঠ কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন – “তিনি মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছেন এবং মাদকের শেকড় বাকড় উপড়ে ফেলা না পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন”।

বিগত কয়েকদিনে অামরা দেখতে পাচ্ছি র্যাবের মহাপরিচালক জাতিকে দেয়া তার ওয়াদা রাখছেন। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জায়গায় র‌্যাব অভিযান দিচ্ছে।  মাদক চোরাচালানকারী নিহত হচ্ছে।

এটা অামাদের জন্য একটা সুখবর। অন্তত র‌্যাবের ভয়ে কেউ এখন অার মাদক বহন কিংবা মজুদ করতে চাচ্ছে নাহ।  এক্ষেত্রে একটা পক্ষ প্রশ্ন তুলছে এভাবে বিচার বিহীন ক্রসফায়ার কতটা যৌক্তিক, অাবার অারেকটা পক্ষের যুক্তি যারা মারা পড়ছে তারা মাদকের গডফাদার নয় এরা সবাই দালাল কিংবা বহনের দায়িত্বে থাকে।

সুতরাং, ১ জন গডফাদারকে ধরা অার ১০ জন দালাল ধরা প্রায় সমান। একজন মাদক মাফিয়ার ইশারায় চলে শত মাদক সরবরাহকারী। মাদক সরবরাহকারীরা মূলত মাদকসেবীদের কাছে মাদক পৌছিয়ে দেয় এবং এটার জন্য তারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ পায় এবং র‌্যাবের বর্তমান অভিযানগুলোতে মারা পড়ছে এই মাঠ পর্যায়ের সরবরাহকারীরা।

এই মাঠ পর্যায়ের ‘মাদক সরবরাহকারী’ এবং ‘ মাদকসেবী ‘ এই দুয়ের মধ্যে গভীর একটা যোগসূত্র রয়েছে। একজন গডফাদার তার অসৎ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মাদক মজুত করতে পারে কিন্তু সরবরাহকারী ব্যতীত তার ব্যবসা করা সম্ভব নয়। একজন গডফাদার সে সমাজের উঁচু স্তর কিংবা ভিঅাইপি স্তরের লোক।  তার পক্ষে সরাসরি মাদক সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তার কাজ অাড়ালে থেকে ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করা।

এটা সত্য মাদক বর্তমানে সমাজের ভয়ানক ব্যধি। সরকার কিংবা অাইনশৃঙ্খলা বাহিনী একার পক্ষে এই সমস্যা নিরসন করা সম্ভব নয়। তবে বর্তমান সময়ে র‌্যাব খুব কৌশলী ধারাবাহিকভাবে তাদের অভিযানগুলো দিচ্ছে। এখন তাদের প্রাথমিক টার্গেট মাদক সরবরাহকারী বা মাঝারী মাদক মজুতদার যারা মূলত এলাকা কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী অর্থাৎ এরা নির্দিষ্ট এলাকায় মাদক ব্যবসা চালায়।

এক্ষেত্রে স্বস্তির খবর হলো এলাকা কেন্দ্রিক এসব মাঝারি মজুতদাররা যেহেতু ক্রসফায়ারে মারা পড়ছে সেহেতু তারা অার মাদক মজুত করতে চাইবে না।  এতে মাদকসেবীরা মাদক পাবে না এবং মাদক মাফিয়াদের মাদকের চালান অচল হয়ে পড়বে। এতে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে পড়বে এবং অাস্তে অাস্তে তারা মাদক অানা বন্ধ করে দিবে। অামার নিজস্ব অভিমত, র‌্যাবের প্রথমধাপে মাদক চালান এবং সরবরাহের স্তরটা ধ্বংস করার যে প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে তা চলমান থাকলে মাদকের অাগ্রাসন অনেকটা কমিয়ে অানা সম্ভব। এই স্তর সফলভাবে ধ্বংস করার পর দ্বিতীয়ধাপে এবং অাস্তে অাস্তে র‌্যাব তাদের চৌকশ অভিজ্ঞতায় একদিন এদেশ থেকে মাদকের শেকড় চিরতরে উপড়ে ফেলবে অামার বিশ্বাস। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার বেড়াজালে অাটকা পড়ে লাখো তরুণ নষ্ট হওয়ার অাগেই মাদক চালান এবং সরবরাহকারীদের নির্মূলে র‌্যাবের এ অভিযানে অামার শতভাগ সমর্থন রইল এবং এটির পাশাপাশি সমাজের মানুষ হিসেবে মাদকসেবীদের স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে নিয়ে অাসতে অামাদের এগিয়ে অাসতে হবে। এতেই অামরা সফল হব। সম্ভব হবে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

লেখকঃ তরুণ সমাজকর্মী 

৪ মন্তব্য
  1. Alim Uddin বলেছেন

    পডে মনে হল আমার মনের প্রশ্ন গুলো তুলে ধরেছেন।

  2. Zulfikar Ali Haidar বলেছেন

    ধরে নিলাম আজ থেকে সব লোক মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিল। খুবই ভালো খবর।
    কিন্তু যারা মাদকের শিকার হলো, মাদকাসক্ত হলো তাদের জীবন? এদের অভিশপ্ত জীবনের জন্য যারা দায়ী তাদের “মাদক-ব্যবসা” থেকে অর্জিত সম্পদ বিক্রি করে মাদকাসক্ত মানুষগুলোর চিকিৎসা করানো দরকার। অরাজনৈতিক সিভিল মাদক ব্যবসায়ীরা ক্রস্ফায়ারের শিকার হলে সরকারী চাকুরিজিবীদের কি হবে? তাদের শাস্তি? তাদের কি immunity দেওয়া হয়েছে?

  3. জিয়াউল হাসনাত বলেছেন

    ধন্যবাদ আভিযান চালিয়ে যান

  4. balal uddin বলেছেন

    ২০১২ সালে চট্টগ্রাম হালিশহর থানার একজন এ এস আই অন্যের ইশারায় বাসা থেকে নিয়ে ২০ পিচ ইয়াবার মামলায় জেলে দিলো, আবার কয়েক জন পুলিশ কোর্টে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিলো। সাজা হলো সন্তান,সংসার সহ পরিবারের সবাই কষ্ট পেলো, সম্মান গেলো সময় টাকা নষ্ট হলো, আপিল করেছি এখন ও সেই মিথ্যা মামলার বোজা মাথায় নিয়ে ঘুরছি আমি। হাজারো মানুষোর জীবন নষ্ট কারী পুলিশ কি অপরাধী নয়? এদেন বিছার আগে করার দরকার, ধন্যবাদ র্যব কর্মকর্তা ও সদস্য দের ভালো কাজের জন্য।