অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

তামার আংটি বা বালা পরার উপকারিতা

0

তামার বালা পরার রেওয়াজ বহু যুগ ধরে চলে আসছে আমাদের দেশে। তবে তা অনেকটাই সৌন্দর্যের অঙ্গ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকে। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে যে এই অলঙ্কারটির অন্য আরও অনেক গুণ রয়েছে।

যেমন বেশ কিছু রোগের উপশমে এই ধাতুটি বাস্তবিকই দারুণ কাজে আসে। তামায় জুয়েলারি পরলে সাধারণত যে যে শারীরিক উপকারগুলি হয়ে থাকে, জেনে নেয়া যাক সেগুলো কি।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে:
শুনতে আজব লাগলেও একথার মধ্যে কোনও ভুল নয় যে ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাস্তবিকই তামার আংটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই ধাতুটি শরীরের সংস্পর্শে আসা মাত্র দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে তার প্রভাবে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় এসে যেতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে এই মরণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা তামার বালা বা আংটি পরতে ভুলবেন না যেন!

স্ট্রেস কমে:
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে তামার আংটি পরলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে স্ট্রেসের মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রাগও কমে যায়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে এদেশে যে যে রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তার সবকটির সঙ্গেই স্ট্রেসের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই তো ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষ সবাইকেই তামার জুয়েলারি পরার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

আর্থ্রাইটিসের কষ্ট কমে:
যারা অস্টিওপোরোসিস অথবা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে ভুগছেন তাদের প্রায়শই কব্জিতে যন্ত্রণা এবং অস্বস্তি হওয়ার মতো লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে তামার বালাকে কাজে লাগাতে পারেন। কারণ এই ধরনের কষ্ট কমাতে এই ধাতুটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কিন্তু কীভাবে তামার বালা এই কাজটি করে থাকে সে বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোনও সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি।

বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়:
শরীরে এই ধাতুটির ঘাটতি দেখা দিলে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে ধীরে ধীরে হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক সহ একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দেয়। তাই তো সুস্থ থাকতে প্রত্যেকেরই তামার বালা পরা উচিত। এমনটা করলে শরীরে তামার ঘাটতি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। ফলে আয়ু তো বৃদ্ধি পায়ই। সেই সঙ্গে সুস্থ জীবনের পথও প্রশস্ত হয়।

প্রদাহ হ্রাস পায়:
তামায় উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি উপাদান ত্বক ভেদ করে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র যন্ত্রণা কমতে শুরু করে দেয়। তাই যারা প্রায়শই যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পরেন তারা আজ থেকেই তামার বালা পরা শুরু করুন। দেখবেন দারুণ উপকার পাবেন।

খনিজের ঘাটতি দূর হয়:
বেশ কিছু গবেষণা চলাকালীন লক্ষ করে দেখা গেছে ঘামের সঙ্গে তামার বালায় উপস্থিত একাধিক ধাতু, বিশেষত জিঙ্ক এবং আয়রন শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে এই দুই খনিজের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে ক্ষিদে কমে যাওয়া, ক্লান্তি, রক্তাল্পতা, চুল পরে যাওয়া এবং বন্ধ্যাত্বের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

সংক্রমণের আশঙ্কা কমে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে তামার আংটি পরলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে কোনও ধরনের ক্ষতিকর জীবাণুই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। প্রসঙ্গত, ত্বকের সংক্রমণ কমাতে তামার আংটি বা বালা দারুণ কাজে এসে থাকে।

শরীরকে তাজা রাখে:
তামায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধিমে করে দেয়। ফলে খাতায় কলমে বয়স বাড়লেও শরীরে তার কোনও ছাপই পরে না।

সাপ্লিমেন্টের থেকে বেশি কার্যকরী:
একাধিক গবেষণায় ইতিমধ্যেই এ কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে কপার সাপ্লিমেন্টের থেকে বেশি কার্যকরী হল তামার বালা। কারণ ঘামের সঙ্গে তামা সরাসরি রক্তে মিশে যাওয়ার সুযোগ পায়। ফলে ওষুধের থেকে অনেক তাড়াতাড়ি উপকার মিলতে শুরু করে। তাই যারা নিয়মিত কপার সাপপ্লিমেন্ট নিয়ে থাকেন, তারা এবার থেকে তামার বালা পরে দেখুন তো উপকারে লাগে কিনা।