ছোটদের মাথা ব্যথায় সতর্ক থাকুন
পরিবারে কারো মাথা ব্যথার সমস্যা থাকলে, বাচ্চার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু বড়রা অনেক সময় এই সমস্যাগুলো বুঝেন না। ছোটদের মাথা ব্যথার সমস্যা হলে অবশ্যই খাতিয়ে দেখতে হবে এটা কেন হচ্ছে, এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো এর থেকে আপনার বাচ্চাদের আরো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন তাহলে দেখে নেই ছোটদের মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
মাথা ব্যথার কারণ:
ভাইরাল ইনফেকশন, সাইনুসাইটিস থেকেও মাথায় ব্যথা হয়। ঠাণ্ডা লাগলে, প্রচণ্ড সর্দি-কাশি হলেও মাথায় ব্যথা হতে পারে।
সাইকোলজিকাল সমস্যা থেকেও মাথা ব্যথা হয়। স্ট্রেস, পড়াশোনার অত্যাধিক চাপ থেকেও বাচ্চার মাথা ব্যথা হয়।
আবার এ রকমও দেখা গেছে যে, বাড়িতে নতুন বাচ্চার জন্ম হলে বা পরীক্ষার ভয় বাচ্চাদের মনের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তারা এই মানসিক সমস্যার কথা বলতে পারে না এবং এই সমস্যাগুলো শারীরিক উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়। মাথা ব্যথা তেমনই এক উপসর্গ হতে পারে।
তাছাড়া চোখের সমস্যা তো আছেই। সাধারণত প্রথম প্রথম বই পড়তে, ক্লাসে বোর্ড দেখতে অসুবিধা হয়। এর থেকেও মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে। এ ছাড়াও আরো কয়েকটি কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে, যেমন-
. কোনো বিশেষ ওষুধ খেলে, ঘুম কম হলে।
. ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করলে।
. মাথায় ছোট খাটো আঘাত লাগলে।
. দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে বা টিভি দেখলে।
বিভিন্ন ধরনের মাথা ব্যথা:
শারীরিক কারণ ছাড়া দুই ধরনের মাথা ব্যথা বাচ্চাদের বিব্রত করে।
টেনশন হেডেক: পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনেক সময় বাচ্চাদের মনে প্রভাব ফেলে, যা হয়তো বয়স্করা বুঝে উঠতে পারেন না। স্কুলের পরিবেশ, বন্ধুদের মতো হওয়ার চেষ্টা, পড়াশোনার চাপ, বাবা-মায়ের প্রত্যাশা ইত্যাদি বাচ্চারা অনেক সময় নিতে পারে না। অনেক সময় তারা অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে, এর থেকেও মাথা ব্যথা হতে পারে। সাধারণত টেনশন হেডেকে মাথার সামনে এবং কপালের দুই পাশে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়।
মাইগ্রেন: বড়দের মতো বাচ্চাদের মধ্যে মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভবনা অতটা না হলেও, একেবারেই অবহেলা করা ঠিক নয়। মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা সাধারণত মাথার একপাশে হয়। পরিবারে কারো মাইগ্রেন থাকলে বাচ্চার মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। মাথা ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব, মাথা ঝিম ঝিম করা, তীব্র আলো, আওয়াজ, গন্ধ সহ্য করতে না পারার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
চিকিৎসা:
সাধারণ মাথা ব্যথায় তাৎক্ষণিক আরামের জন্য পেনকিলার বা অ্যানালজেসিক দেওয়া হয়। বাম মালিশ করা যেতে পারে।
তবে সব থেকে জরুরি মাথা ব্যথার কারণটা অনুধাবন করা। সেই বুঝেই সঠিক চিকিৎসা করা হয়। ডাক্তাররা অনেক সময় বাবা-মায়েদের বাচ্চাদের একটা ‘হেডেক ডায়েরি’ মেইনটেন করতে বলেন, যাতে ফলো আপ করতে সুবিধা হয়।