অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মডেল তিথির মৃত্যু, এ কেমন বন্ধুত্ব..?

0
.

নগরীর খুলশী থানার কাছে বাস চাপায় মারা গেছেন উঠতি মডেল কন্যা তিথি বড়ুয়া (২১)। আজ মঙ্গলবার আজ মঙ্গলবার (১৯ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিথি বড়ুয়া চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

বন্ধুদের সাথে ফয়স লেকে বেড়াতে যাওয়ার পথে খুলশী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের সামনে তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সাকে চাপা দেয় শহর এলাকার একটি বাস।  এতে তিথী ঘটনাস্থলে নিহত হন।  অন্য ৩ বন্ধু সামান্য আহত হন। তিথীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক।

জানাগেছে, মারা যাওয়ার পর তিথি বিকেল পর্যন্ত মর্গে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে পড়ে ছিল।  তিথীর ভ্যানেটি ব্যাগে থাকা েকলেজের একটি কাগজ থেকে তার নাম এবং কলেজের নাম পাওয়া যায়। পরে কয়েকজন তার পরিচয় জানার আগ্রহে ফেসবুকে ছবি দিলে তার পারিবারের সন্ধান মেলে।

অভিযোগ উঠেছে, দুর্ঘটনার সময় তিথীর সাথে থাকা ৩ বন্ধু (এক মেয়ে এবং দুই ছেলে বন্ধু) দুর্ঘটনারই তিথীর মৃত্যু হয়েছে জেনে দায় এড়াতে ঘটনাস্থলে তার লাশ ফেলে পালিয়ে যান।

চমেক হাসপাতালের মর্গে স্বজনদের আহাজারী।

এর তথ্য জানান, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিক জালাল উদ্দিন সাগর। তিনি তার ফেসবুকে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।  এতে সাংবাদিক সাগর লিখেন-

“চার বন্ধু মিলে ফয়’স লেক বেড়াতে যাওয়ার জন্য জিইসি থেকে সিএনজিতে উঠেছিলো ওরা।  ২জন মেয়ে ২জন ছেলে।  রাস্তার বাঁ পাশ দিয়ে ঠিক পথেই চলছিলো ওদের সিএনজি কিন্তু বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস আরেকটি বাস কে ওভারটেক করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট এর ঘটনা ঘটে।

মাথার পিছনে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় তিথি। ভেসে যায় রক্তস্রোতে। আল্প আহত হয় সাথে থাকা অন্য একটি মেয়ে এবং দুইটি ছেলে।
কিন্তু কষ্টের ব্যাপার হলো সাথে থাকা বন্ধুদের কেউ তিথি কে হাসপাতালে নিয়ে যায় নি। ঝামেলামুক্ত হতে ঘটনার পরপর ওরা পালিয়েছে-এমনটাই জানালো আহত সিএনজি চালক।

আহ কি বন্ধুত্ব আমাদের! রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুর লাশ রাস্তায় ফেলে ঝামেলা এড়াতে পালিয়ে যাই আমরা!

কয়েকজন মডেল এ খবর ফোন পেয়ে আমরা যখন মেডিকেলে যাই তিথী তখন লাশ ঘরে। আঘাতে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মাথা থেকে রক্ত বেরুচ্ছিল তখনও।  আর তিথির মা বোন আহাজারি করছিলো লাশ ঘরের বাহিরে। না কোনো বন্ধু ছিলো না সেখানে। এক্সিডেন্ট এর সময় সাথে যারা ছিলো তারাও না। খুব জানতে ইচ্ছা করে এ কেমন বন্ধুত্ব আমাদের“।

জানাগেছে নিহত তিথী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছামতী গ্রামের সুধান বড়ুয়ার মেয়ে। তিথী চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।  একই মডেলিং ও সাংকৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে তিথী মডেলিং এর কাজ করেছেন।

*নগরীতে বাস চাপায় কলেজ ছাত্রী নিহত