অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বরিশাল কলোনীতে ফের মাদকের হাট!

3
.

চট্টগ্রামের মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত বরিশাল কলোনীতে ফের আগমন ঘটেছে নতুন নতুন মাদক বিক্রেতার।  নগরীসহ সারা দেশেই মাদকের পাইকারী ও খুচরা মাদকের হাট হিসেবে বরিশাল কলোনীর খুবই পরিচিত। এ স্বর্গরাজ্যে গত কয়েক মাসে র‌্যাব, পুলিশ ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ সাঁড়াশি অভিযানে মাদক বিকিকিনি বন্ধ থাকলেও গত ২৫ জুন থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে এ স্পটে মাদক বিকিকিনি। মূলত প্রশাসনের ভেতর গুটি কয়েক কর্মকর্তার যোগসাজশে বরিশাল কলোনীতে পুনরায় মাদক ব্যবসা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সম্প্রতি বন্ধুক যুদ্ধে নিহত ফারুকের দুই সহোদর সেকান্দর ও শুক্কুর এ মাদক স্বর্গরাজ্যের নেতৃত্বে দিচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। তাদের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৪০ জনের একটি নতুন সিন্ডিকেট প্রশাসনের কঠোর নজরদারী উপেক্ষা করে রাত দিন সমানে ফের বসিয়েছে মাদকের হাট। সম্প্রতি মাদক বিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে পড়ার সুযোগ নিয়ে এ নতুন সিন্ডিকেটটি তাদের বানিজ্য শুরু করেছে বলে বরিশাল কলোনী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। মাদক ব্যবসাকে ঘিরে গড়ে উঠা সিন্ডিকেটে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের ক্যাডার-মাস্তান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িয়ে যাওয়ায় এদের নেটওয়ার্ক চিরতরে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মত প্রকাশ করেছে স্থানীরা।

চলতি বছরের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত কয়েক মাসে সারা দেশে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। এসব অভিযানে প্রায় দুইশতের অধিক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে প্রশাসনের ক্রস ফায়ারে। মামলা হয়েছে ১০ হাজারের অধিক, আটক করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মাদক ব্যবসায়ী। একই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের বরিশাল কলোনীতেও পুলিশের অভিযানে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফারুক সহ তিন জন এবং আটক করা হয়েছে তিন জন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ফারুক নিহত হওয়ার পর পুলিশের কিছু অসাধুু কর্মকর্তার সহযোগিতায় দৈনিক মোটা অংকের টাকা মাসোহারার বিনিময়ে ফারুকের দুই সহোদর সেকান্দর ও শুক্কুরের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের নতুন একটি বিশাল সিন্ডিকেট নতুন সাজে শুরু করেছে মাদকের বানিজ্য। স্থানীয় ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছে সেকান্দার ও শুক্কুরের নের্তৃত্বে বর্তমান সিন্ডিকেটে রয়েছে মাঝির ঘাটের কালা মতিন, রাজু চৌধুরী, দাড়ী হেলাল, লেঙ্গা শাহাজাহান, খসরু প্রঃ পাবেল, মানিক, সুজন প্রঃ ট্যারা কাশেম, কালা মনির, রুবেল, শাহাজাহান, বরিশাইল্যা ওয়াসিম, রানা, সোর্স সিরাজ, কালা সেলিম, মুন্না, পিচ্ছি বাদল, আঙ্গুল কাটা ষোল, বাবুল, হাফিজ, লোকমান, খোকনসহ আরো অনেকে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছে মাদক নির্মুলে প্রশাসনের এতো হাক ডাকেও বন্ধ করতে পারেনি বরিশাল কলোনীর মাদকের আড্ডা। গত দু সপ্তাহ ধরে ফিরে গেছে সে আগের চির চেনা অবস্থায়। দিনরাত চলছে মাদক বিকিকিনি। দৈনিক কোটি কোটি টাকার নানা জাতের মাদক পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে মাদক সম্রাজ্য নামে খ্যাত এই বরিশাল কলোনীতে।

জানা যায়, নগরীর মাদকের সবচেয়ে বড় মাদকের আখড়া বরিশাল কলোনীটি রেলওয়ের জমির উপর অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে। এখানে রেলওয়ের কিছু কর্মচারী বসবাস করেন। তারা বাসার আশপাশে কিছু ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাড়া দিয়েছে মাদক ব্যবসায়িদের। এই সব ঝুপড়িই মুলত মাদকের আড্ডাখানা। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক ঘর উচ্ছেদ করা হলেও বর্তমানে পাঁচ শতের বেশী ঝুপড়ি ঘর রয়েছে এই কলোনীতে। যেখানে রাতদিন মাদক সেবিদের আনাগোনা। শুধু মাদক সেবনকারী বা মাদক ব্যবসায়ি নয় প্রতিনিয়ত জিআরপি থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের আনাগোনাও দেখা যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

তবে মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত বরিশাল কলোনীতে মাদক ব্যবস্যা চিরতরে বন্ধ করতে সদরঘাট থানা পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন ওসি নেজাম উদ্দিন। তিনি বলেন মাদকের বিরুদ্ধে তাদের জিরো টলারেন্স, মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে বদ্ধ পরিকর তার পুলিশ বাহিনী। ইতিমধ্যে একই স্পটে বহুবার অভিযান চালিয়েছি, গুড়িয়ে দিয়েছি মাদক সা¤্রাজ্য। গ্রেফতার করেছি নেতৃত্বদানকারী মাদক ব্যবসায়িদের। পুরো বরিশাল কলোনীর আশ পাশ এলাকা সদরঘাট থানা পুলিশের নজরদারীতে আছে জানিয়ে ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, মাদক ব্যবসায়ি কিংবা মাদক সেবীদের তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে অভিযান পরিচালিত হবে।

৩ মন্তব্য
  1. MOHAMMED RUSSELL PARVEZ বলেছেন

    na plz stop that any how

  2. ঋত্বিক নয়ন বলেছেন

    দুর্দান্ত রিপোর্ট। চলতে থাকুক।

  3. Abir Chowdhury বলেছেন

    Asif Mohiuddin ভাই, এনকাউন্টার/ক্রসফায়ার যা ইচ্ছা করেন। পাবলিক আপনাদের সাথে আছে। অসাধু পুলিশদেরকেও ছাড় দিয়েন না।