অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ফটিকছড়িতে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক

0
অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক আবু হাশেম।

জেলার ফটিকছড়ির ভুজপুরে শিক্ষকের হাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হাশেম (৪০)।

তিনি ফটিকছড়ির ভুজপুরের রাজাটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীর চাচা গত বুধবার (৪জুলাই) ভুজপুর থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন।

ঘটনাস্থল প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় খবরটি এতদিন প্রকাশ পায়নি।  পুলিশ জানায়, ধর্ষক শিক্ষককে গ্রেফতার করতে আপ্রাণ চেস্টা করা হচ্ছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ফটিকছড়ির নারায়ণ হাটের চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজারটিলা নুর আহম্মদ শামছুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সদ্য প্রেষণে বদলী হন শিক্ষক আবু হাশেম। তাঁর স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ভুজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা।
স্কুলের পাশের এলাকায় তিনি ভাড়া বাসায় থাকেন। ভুজপুর স্কুলের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রী (চাচাত বোন) আবু হাশেমের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর কাছে প্রাইভেট পড়তো। স্ত্রীর ব্যস্ততায় আবু হাশেমও তাদের পড়াতো।

গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় ৩য় শ্রেণীর ছাত্রীটি (৯) পড়তে গেলে আবু হাশেম তাকে পড়াতে বসায়। এসময় তার স্ত্রী রান্নাঘরে ছিলেন। আবু হশেম নিজের ছোট ছেলেদের বাহিরে ঘুরে আসার কথা বলে পাঠিয়ে দেন। এক মুহূর্তে ছাত্রীটিকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শিশু ছাত্রীটি বাসায় ফেরার পর অসহ্য যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করলে মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা প্রকাশ করে দেয়।
এটি পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে ৩য় শ্রেণীর ঐ ছাত্রীর চাচাত বোন ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী একইভাবে শিক্ষক আবু হাশেমের হাতে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করে। ধর্ষণের শিকার শিশু দুটির পিতারা সৌদি প্রবাসি।

আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তারা বিক্ষুব্দ হয়ে উঠে।  চট্টগ্রামে অবস্থানকারী শিশু দুটির চাচা খবর পেয়ে বাড়ি ছুটে আসেন।

গত বুধবার (৪ জুলাই) তিনি বাদী হয়ে ধর্ষক শিক্ষক আবু হাশেমের নামে ভুজপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা (নম্বর-০১, তারিখ ৪/৭/১৮) দায়ের করেন।

জানায়ায়, মামলা রুজুর পরই ওই শিক্ষক গা ঢাকা দেন।

রাজাটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম বলেন, আবু হাশেম গত ১২ এপ্রিল প্রেষণে বদলী হয়ে এসে তার স্কুলে যোগদান করেন। গত ৪ ও ৫ জুলাই তিনি ছুটিতে ছিলেন। ৭ জুলাই কর্মস্থলে যোগদানের কথা থাকলেও তিনি স্কুলে এ পর্যন্ত আসেননি। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, গতকাল(সোমবার) তার অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন। দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনাটিও তিনি শুনেছেন বলে জানান।

এদিকে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভুজপুর থানার এসআই সৈয়দ বলেন, মামলা রুজু হওয়ার পর দুই ভিকটিমকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়েছে।  তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, খুব শীঘ্রই অভিযুক্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন।

ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েস আলম বলেন, ধর্ষন মামলার আসামী আবু হাশেম মামলা রুজুর পরই গা ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য চেস্টা করছে।

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য শিক্ষক আবু হাশেমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।