জেলা ও নগরীতে ১৩ লাখ শিশু খাবে নীল এবং লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে শনিবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন (১ম রাউন্ড) ২০১৮ পালিত হবে। সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও এ ক্যাম্পেইন সফল ভাবে বাস্তবায়ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। চট্টগ্রাম জেলা ও নগরীতে নীল এবং লাল রঙ্গের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ১২ লাখ ৮২ হাজার শিশুকে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে ৪১ ওয়ার্ডে প্রায় ৫ লক্ষ ৩০ হাজার শিশু এবং সিভিল সার্জনের অধীনে চট্টগ্রাম জেলার ১৪টি উপজেলায় ৭ লক্ষ ৫২ হাজার ৭ শত শিশুকে খাওয়ানো হবে নীল ও লাল রঙ্গের ভিটামিন এ ক্যাপসুল।
বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
চসিকের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার নগরীর সদরঘাটে অবস্থিত মেমন হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী। চসিক শিক্ষা-স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী, ডা. ইমাম হোসেন রানা এবং মেনন হাসপাতালেল ইনচার্জ ডা. আশীষ মুখার্জি উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন শনিবার সকালে কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডে উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কৈবল্য ধামস্থ নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন (১ম রাউন্ড) এর উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এবার নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের এক হাজার ২৮৮টি কেন্দ্রে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল। এর মধ্যে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের অধীনে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৮০ হাজার শিশুকে খাওয়ানো হবে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল। উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ৩০ হাজার শিশুকে।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে বাংলাদেশের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ অর্জন ছিলো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী ৭৭ হাজার ২৮০ শিশুকে এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী চার লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এবারও নগরীর একজন শিশুও যাতে বাদ না পড়ে সেই লক্ষে চসিকের পক্ষ থেকে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে পত্র প্রেরণ, মাইকিং, বিজ্ঞপ্তি ও ক্যাবল নেটওয়ার্কে প্রচারসহ সবধরনের প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এবারের কার্যক্রমে ৪১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলের সার্বিক সহযোগিতায় সরকারি-বেসেরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, সকল জোনাল মেডিকেল অফিসার, ইপিআই টেকনিশিয়ান, সুপারভাইজার, স্বাস্থ্য সহকারী, টিকাদান ও স্বাস্থ্যকর্মী এ কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত হয় পৃথক সংবাদ সম্মেলন। এতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো আজিজুর রহমান সিদ্দিকী উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, শনিবার জেলার ১৪টি উপজেলার ২ শতাধিক ইউনিয়নের স্থায়ী/অস্থায়ী মোট ৫ হাজার ৪৯টি কেন্দ্রে ৭ লক্ষ ৫২ হাজার ৭ শত ৪জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ছয় মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৮৩ হাজার ৭৮২ জন এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ছয় লাখ ৬৮ হাজার ৯২২ জনকে নীল ও লাল রঙ্গের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এর আগের বছর ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর দ্বিতীয় রাউন্ডে চট্টগ্রাম জেলায় ছয় মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৮২ হাজার ৭৩৩ জন এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ছয় লাখ ৬৪ হাজার ৯৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন অফিসের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।