অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ইচ্ছের নাগালে আসতে শুরু করেছে ইলিশ!

0
ছবি- জয় বড়ুয়া।

ক্রেতাদের বাজারের থলিতে পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। বাজার ঘুরে অনান্য মাছের সাথে ইলিশ কিনছেন ক্রেতারা। কারন সাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। তাই ইলিশ প্রতিকেজি মিলছে এখন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই।

মৎস্য অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে, বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি নদ–নদীগুলোয় ইলিশ মাছ আসা শুরু করেছে। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও সুন্দরবনসংলগ্ন নদ–নদীগুলোয় এখন বিচ্ছিন্নভাবে ধরা পড়ছে ইলিশ। আগষ্ট মাসের শেষের দিকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ওপরের দিকে আসতে শুরু করবে। ওই সময় চাঁদপুর পর্যন্ত নামবে ইলিশের ঢল। মাছ ব্যবসায়ী, খুচরা বিক্রেতারা এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেই সময়ের। অপেক্ষায় আছেন ক্রেতারাও। ইলিশের জন্য চাঁদপুর হচ্ছে কেন্দ্রস্থল। ভোলা, বরিশাল ও নোয়াখালী থেকে ইলিশভরা নৌকা চাঁদপুরের ঘাটে আসে। চট্টগ্রাম থেকেও আসে কিছু। এই ঘাটে ইলিশগুলো নামার পর তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়।

ইলিশ বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীদের মতে, এবার ইলিশ কিছুটা দেরিতে আসছে। আবহাওয়া ও পানির তাপমাত্রাসহ বেশ কিছু বিষয় ব্যাপকভাবে ইলিশ আসার ক্ষেত্রে উপযোগী না হওয়ায় প্রায় মাসখানেক দেরি হয়ে গেছে।

ছবি-জয় বড়ুয়া।

যদিও এই ব্যাপারে একমত নন মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাঁদের ভাষ্য, জুলাইয়ের শেষ দিকে বা আগস্টের শুরুতেই ইলিশের ঢল নামার কথা। এর বাইরে এখনো বিভিন্ন বাজারে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আরো জানান, ইলিশ সারা বছরই অল্পবিস্তর আসে। বর্ষাকালে ও শীতকালে প্রজনন হয় ইলিশের। প্রজননের সময় নদীতে ইলিশ আসায় বেশি ধরা পড়ে। ইলিশের জন্য গভীর পানি প্রয়োজন। বর্ষায় পানির প্রবাহ থাকে বেশি। উজানের বৃষ্টিপাত ইলিশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ইলিশ ডিম পাড়ার জন্য নদীতে আসে। ইলিশের প্রজনের সঙ্গে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সম্পর্ক রয়েছে। তাই চাঁদের ওপর হিসাব কষে পরিপক্ব বা মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য সরকার প্রতিবছর সময় নির্ধারণ করে থাকে।

নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, একহাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হওয়া ইলিশের দাম নেমে এসেছে ৬০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু কিছুদিন আগেও ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকায়। আর সেটি এখন পাওয়া যাচ্ছে ৪৩০ টাকার মধ্যে।

.

মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। দেশের মোট মাছের ১২ শতাংশ ইলিশ। যার অর্থমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রায় পাঁচ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত। ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক পরিবহন, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রফতানিসহ বিভিন্ন কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

জানা যায়, দেশের শতাধিক নদীতে কমবেশি ইলিশ পাওয়া গেলেও ইলিশের প্রজনন ও পরিপক্কতা দক্ষিণাঞ্চলের নদীতেই বেশি। এ অঞ্চলের মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার, ভোলার শাহবাজপুর চ্যানেল, তেঁতুলিয়া নদী, পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক ও রামনাবাদথ এ ৫টি চ্যানেলকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।

নগরীর চৌমুহনী কর্ণফূলীস্থ চৌমুহনী মার্কেটে ইলিশ নিতে আসা কবির হোসেন জানান, অনেকদিন থেকে ইলিশ কিনতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু বাড়তি দামের কারনে কেনা হয়নি। আজ দুটি ইলিশ কিনেছি।