অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

তোমাদের দেখানো পথেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ…

2
.

‘প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস আর জিপগাড়ি ডানদিকে যান, মোটরসাইকেল সোজা মাঝ বরাবর যাবেন। আর রিকশা বাম দিকে লাইন করে যান।’
বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টায় ধানমন্ডি ৮/এ’র সামনের রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজে ছিপছিপে গড়নের এক তরুণী জিগাতলা থেকে আসা যানবাহনগুলোকে ক্রমাগত এ নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন।

পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কিশোরী যানবাহন মালিকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বের করে দেখানোর কথা বলছিল। আশপাশে কোথাও ট্রাফিক পুলিশ দেখা গেল না। ট্রাফিক পুলিশ না থাকলেও সব ধরনের যানবাহন সুশৃংখলভাবে চলাচল করছিল। কোথাও কোনো যানজট নেই। এ যেন অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য।

এই তরুণীর ডাক নাম কথা। ধানমন্ডির ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী।

দুদিন আগেও যে মেয়েটি ক্লাস-বাসা ও পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতেন, কখনও এভাবে রাস্তায় দাঁড়াবেন তা কল্পনাও করেননি, সেই মেয়েটি গতকাল ও আজ- মাত্র দুদিনে দক্ষ ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন!

শুধু কথা একা নয়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এমনই হাজারো কথা রাস্তায় নেমেছে।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কথা নামের ওই তরুণী বলেন, ঘাতক বাসের চাপায় অহরহ মানুষ মারা যাচ্ছে, হাত, পা, কোমড় ভেঙে কিংবা মাথায় আঘাত পেয়ে অনেকেই পঙ্গু হচ্ছে। অথচ বছরের পর বছর সবাই যেনে নিশ্চুপ থাকছে। আইন থাকলেও ঘাতক চালকদের শাস্তি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেই শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের যে দুটি ভাইবোন মারা গেল তারা ঘুণাক্ষরেও কি ভেবেছিল স্কুল শেষে বাড়ি ফিরতে পারবে না। অথচ বাসের চাপায় তাদের করুণ মৃত্যু হলো। এ অবস্থা থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে যুব সমাজ জেগে উঠেছে।

কথা বলেন, ‘আমরা জানি অনেকেরেই কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আপনার আমার কষ্টে ঘাতকের হাত থেকে বাঁচবে অনেকের সন্তানের প্রাণ।’

সরেজমিন রাজধানীর ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, জিগাতলা ও ধানমন্ডি এলাকায় দেখা গেছে, সবগুলো রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছে আন্দোলনকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামার কারণে আশপাশে ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়েনি। দু -এক জায়গায় পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখা গেলেও তাদের বেশ খানিকটা দূরে ফুটপাতে নিস্ত্রিয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

গাড়ি সুশৃংখলাভাবে চলাচল করলেও অল্প একটু ব্যবধানের দূরত্বে বারবার লাইসেন্স পরীক্ষার নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জিগাতলা মোড়ে এক ভদ্রলোককে কয়েকজন কিশোর এসে লাইসেন্স দেখাতে বললে তিনি বলেন, ধানমন্ডি ৯/এ থেকে আসতে আসতে কয়েকজনকে তো লাইসেন্স দেখালাম। আবার কী দেখাতে হবে। কিশোররা নাছোড়বান্দা। তাদের একজন বলে উঠল, পুলিশ চাইলেতো বারবার দেখান, সঙ্গে টাকাও দেন। আমাদের দেখালে সমস্যা কোথায়।

তবে সমস্যা হলেও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে তিনি সমর্থন করেন।

২ মন্তব্য
  1. Mannan khan বলেছেন

    এগিয়ে চলো যুব সমাজ নিরাপদ হয়ে উটুক আগামির বাংলাদেশ,,

  2. osmangoni বলেছেন

    Ei andholen shofol korboo.