অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

এবার হাটহাজারীতে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন

0
.

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আধুনিক ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন নির্মিত হতে যাচ্ছে। এ ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় ও বিরল প্রজাতির নানা ধরনের দেশীয় বনজ, ফলদ, ঔষধি গাছের বনায়ন, সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করা হবে। নানা প্রজাতির গাছ-বাঁশ-লতাগুল্মের সমাহারে একটি শিক্ষণীয় ও চিত্তবিনোদনের স্থান হিসেবে এটিকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের হাটহাজারী রেঞ্জের মন্দাকিনি বন বিট এলাকায় এ ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটির জন্য ৪০০ একর জায়গায় গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও প্রাথমিকভাবে ২০০ একর জায়গায় গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা

এ প্রকল্পের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, আগামীতে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও আধুনিক ইকোপার্ক এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে।

বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের হাটহাজারী রেঞ্জের মন্দাকিনি বন বিট এলাকায় এ ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের শুরুতে অফিস স্থাপনা ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পরবর্তীতে এই ইকোপার্কে মানুষের বিনোদন ও ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য একটি শিশুকর্ণার, ইকোপার্কের পাশাপাশি বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছের বাগান, বিভিন্ন জাতের বাঁশের বাগান, শোভাবর্ধনকারী গাছ ও ফুলের বাগান গড়ে তোলা হবে।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ডিএফও মো. বখতেয়ার নুর সিদ্দিকী বলেন, ষাটের দশকে ঢাকায় বোটানিক্যাল গার্ডেন হওয়ার পর বাংলাদেশের অন্য কোথাও পূর্ণাঙ্গ বোটানিক্যাল গার্ডেন গড়ে ওঠেনি, যদিও দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু বাগান ও কিছু অভয়ারণ্যও রয়েছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে বোটানিক্যাল গার্ডেন গড়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, এই রেঞ্জের প্রায় ৪০০ একর জায়গাতেই এই ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

আমরা প্রাথমিকভাবে মাত্র কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। তবে সবকিছু ঠিকভাবে করতে পারলে আশা করি আগামী ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে আমরা স্থানীয় জনগণের সহায়তায় এটিকে একটি আদর্শ ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে রূপ দিতে পারব। তিনি বলেন, চট্টগ্রামসহ তিন পার্বত্য জেলায় নানা ধরেনের দেশীয় বনজ, ফলদ, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী প্রচুর গাছ রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে অনেক প্রজাতির গাছ আবার বিলুপ্ত হতে বসেছে। সেগুলোকে আমরা এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে সংরক্ষণ করতে চাই।

চট্টগ্রামে তেমন কোনো ভালো-নিরাপদ বিনোদনের স্থান গড়ে ওঠেনি উল্লেখ করে বখতেয়ার নুর সিদ্দিকী বলেন, ঢাকার গাজীপুরের ইকোপার্কে রাজধানী ও এর আশপাশের নাগরিকরা সারাদিনের জন্য সপরিবারে চিত্তবিনোদনের সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু চট্টগ্রামে আমরা সেভাবে তেমন কিছু করতে পারিনি এখনো। যদিও রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার এলাকাতে বেড়ানোর কিছু জায়গা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো তেমনভাবে পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি।

আমরা হাটহাজারীর এই ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটিকে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করতে চাই। এতে একদিকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ যেমন থাকবে, তেমনি চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাটিও সৃষ্টি করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে।

আর এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নানা ধরনের উদ্ভিদের সমাহার ঘটাতে পারলে আমাদের শিক্ষার্থীরাও সহজেই এসব প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ, ফল-ফুল লতাগুল্ম সম্পর্কে জানতে পারবে।