অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

“বাপ কাসেম মাস্টরের নাম রাইখ্খ্যে পোয়া মামুন”

1

“বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন পুত্র। রাজনীতির মাঠে ঘাট চষে বেড়াতে শুরু করেছেন বাবার মতোই। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের সন্তানরা আগামী একাদশ নির্বাচনে এমপি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী। কিন্তু বাবার মত কি সন্তানদের মধ্যে এলাকাবাসী দক্ষ রাজনীতিবিদের আভাস পেয়েছেন ? নাকি পাননি। তারই বিস্তারিত বর্ণনা থাকছে ‘বাপ কা বেটা’ নতুন সিরিজে। পাঠক ডট নিউজে ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়েছে আজ চতুর্থ পর্ব”

.

প্রচার প্রসারে বিশ্বাসী না হয়ে কাজেই তার যোগ্যতার প্রমান দিতে চান চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড ৪ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আবুল কাশেম মাষ্টারের বড় ছেলে এসএম আল মামুন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এসএম আল মামুন। প্রয়াত বাবার নির্বাচনী এলাকায় দক্ষ, স্বচ্ছ, সৎ মানুষ হিসেবে নাম কৃড়িয়েছেন মামুন।

বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার জন্য হাতে নিয়েছেন কল্যানমুখী নানা কর্মসূচি। তাই সীতাকুণ্ডবাসীর অভিমত, “বাপের নাম রাইখ্খ্যে পোয়া” (বাবার নাম রেখেছে তার ছেলে)।

একই আসনের বর্তমান এমপি দিদারুল আলম। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। সম্পূর্কে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের ভাতিজা তিনি। সীতাকুণ্ড ৪ আসনের সাবেক এমপি আবুল কাশেম মাষ্টারের মৃত্যুর পর সেই ঘাটিতে জনগনের কাছে ভালো ইমেজ তৈরী করতে পেরেছেন বলে তার অভিমত। তবে বিএনপি করে আওয়ামীলীগের টিকেট পাওয়া নিয়ে তার বিরুদ্ধে গুঞ্জন শুরু থেকেই ছিলো।

চট্টগ্রাম -৪ সংসদীয় আসন হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটি। এটি চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ২৮১ নং আসন। এ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৯ ও ১০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওযামীলীগ থেকে দিদারুল আলম ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮১৫টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী জাসদ থেকে মফিজুর রহমান ভোট পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৪২ টি ভোট।

এদিকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অভিযোগ ছাড়–ছিলো না এমপি দিদারুল আলমের। পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় অংশ নেয়া, আওয়ামী রাজনীতি না করে আওয়ামী লীগের টোকেনে এমপি হওয়া, বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ঢাকাতে সাক্ষাৎ করা, সীতাকুণ্ড আওয়ামীলীগে কোন্দল সৃষ্টি করা, সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করা, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনকে পরিপূর্ণ সমর্থন না দেয়াসহ নানা অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে এমপি দিদারুল আলম জানান, সেলিব্রেটিদের বিরুদ্ধে পাছে লোকে কিছু কথা বলবেই। তিনি শুধু সাংসদ নন। তিনি একজন সেলিব্রেটি ব্যবসায়ী। তাই এসব কটুকথাকে তিনি কানে নেন না বলে জানান এই এমপি।

এদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনে কেন মনোনোয়ন প্রত্যাশী এ প্রশ্নের উত্তরে এসএম আল মামুন জানান, আমি এলাকার জন্য দিনরাত কাজ করছি। আমার বাবা আবুল কাশেম মাষ্টার একজন জনপ্রিয় সাংসদ ছিলেন। তার বাবার নাম বজায় রাখতে সবসময়ই তিনি তৎপর বলে জানান তিনি। আমি এলাকার আনাচে-কানাচে উন্নয়ন করেছি।

এমপি দিদারুল আলমের দিকে অভিযোগের তীর তুলে মামুন বলেন, আমাদের এমপি, ব্রীজ, কালভার্ট কোনকিছুর জন্যই নিজ থেকে থোক বরাদ্দ আনতে পারেননি। নিজে থেকে কাজ করা আর অটো কাজ করা এক নয় বলে জানান তিনি। প্রত্যেক এমপির এলাকার উন্নয়নের জন্য ২০ কোটি টাকা সরকারী অনুদান থাকে। সেটা যেই এমপি হোক, পাবেন। কিন্তু তিনি নিজ উদ্যেগে এ টাকার বাইরে আর কোন উন্নয়ন প্রকল্প দেখিয়ে কোন টাকা বরাদ্দ আনতে পারলে বোঝতাম, সেটি তার ক্রেডিট। কিন্তু সে ক্রেডিট তিনি অর্জন করতে পারেননি।

এমপি দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামুন আরো বলেন, তিনি বিএনপি পরিবারের ছেলে। সে আবহে বড় হয়ে আওয়ামীলীগের টিকেট পেয়েছে। মামুন আরো বলেন, ২০১৩ সালে বিএনপি জামায়াতের লোকজন পেট্রোল ঢেলে বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাদেকুকল্লাহ মিয়াজির ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিলো। সেই মামলার আসামীর জন্য এমপি দিদারুল আলম তদবির করেছেন।

এসএম আল মামুন পূর্বের এক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, অবরোধের সেই সময় বিএপি, জামায়ত-শিবিররা গরুভর্তি একটি ট্রাককে পুড়িয়ে দিয়েছিলো। এতে ট্রাকের সব গরু মারা যায়। আর এ ট্রাকটি পোড়ানো হয় ফৌজদারহাট ইউনুসের দোকানে। এলাকায় ইউনুস বোরকা ইউনুস নামে পরিচিত। কারন সে বোরকা পড়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলো এক সময়। পরবর্তীতে গরু পোড়ানো মামলায় ইউনুসকে আসামী করা হলে এমপি দিদারুল আলম তদবির করে ইউনুসকে মামলার চার্জশীট থেকে বাদ দেন। ইউনুসের তখন সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক ছিলেন।

মামুন আরো বলেন, এমপি দিদারুল আলমের ফুফাতো ভাই ১০ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম বর্তমানে তার প্রাইভেট সেক্রেটারী (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এসএম আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে যদি যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেন ও পরবর্তীতে তিনি নির্বাচিত হলৈ তার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করবেন। সীতাকুন্ডবাসীর পাশে থাকবেন। তিনি একজন খাস আওয়ামীলীগ কর্মী। তাই দল তধা জাতির জন্য নিবেদিত থাকবেন বলেও জানান তিনি।

প্রয়াত বাবার অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকান্ডে ছেলে মামুন সম্পন্ন করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী। সীতাকুণ্ড উপজেলা সদরেই বাস করেন স্কুল শিক্ষক মাহতাব আলী। শিক্ষক পেশায় তিনি প্রায় ২০ বছর। মাহতাব আলী জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুনের এলাকার যেকোন কাজে তার দেখা মিলে। সাধারন মানুষের সাথে সখ্যতা তাকে একজন যোগ্য নেতার কাতারে বসিয়েছে। তার বাবা আবুল কাশে, মাষ্টারও ছিলেন তেমন। তাই তিনি আশা করেন আগামী সংসদ নির্বাচনে মামুন আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বৃহৎ পরসরে এলাকাবাসীর জন্য কাজ করার সুযোগ যেন পান এটাই তিনি আশা করেন।

আগে প্রকাশিত-

*বাবা আজিজের ইমেজের সাথে বিরাট ফারাক বাহারের

*“বাবার ছায়াসঙ্গী যেন ছেলে নওফেল”

*‘বাপের মতন পুত ন’

 

১ টি মন্তব্য
  1. nasir uddin anik বলেছেন

    নাম কৃড়িয়েছেন, সম্পূর্কে, এদিকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অভিযোগ ছাড়–ছিলো না এমপি দিদারুল আলমের। চেয়ারম্যান সাদেকুকল্লাহ , নির্বাচিত হলৈ , তিনি একজন খাস আওয়ামীলীগ কর্মী। তাই দল তধা, তার বাবা আবুল কাশে, মাষ্টারও ছিলেন, বৃহৎ পরসরে,
    see spelling & sentence