অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতের অব্যাহত সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

0
.

বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য মঙ্গলবার ভারতের অব্যাহত সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় ভারত সরকারের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করছি। আমি বেশ নিশ্চিত যে আমাদের জনগণের কল্যাণের জন্য আমরা আগামীতে এমন অনেক আনন্দময় উপলক্ষ পাব।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার যৌথভাবে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি হতে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই তেলের পাইপ নির্মাণের সূচনা করেন।

শেখ হাসিনা নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এবং নরেন্দ্র মোদি নয়া দিল্লিতে নিজ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন।

দুই নেতা বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী অংশে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর অংশে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পও উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। ‘এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত হবে।’

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের মানুষের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা নতুন নতুন ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং যাব।’

বাংলাদেশ ও ভারত সব সময় ভালো প্রতিবেশী হিসেবে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকার ও দেশটির জনগণের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদিকে সাথে নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং আজ দুটি রেল ও পাইপলাইন প্রকল্প উদ্বোধন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যকার এই সবিরাম যোগাযোগ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সহযোগিতার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করবে।’

তিনি জানান, গত সাড়ে নয় বছরে দুদেশের মধ্যকার অভিন্ন সহযোগিতা নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বাণিজ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানুষের সাথে মানুষের সংযোগ ও স্বাস্থ্য খাতে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, দুদেশ স্বল্প সময়ে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা দুদেশের মধ্যে ভালো সম্পর্কের নিদর্শন।

‘আমরা শুধুমাত্র প্রতিবেশী নয়, আমরা একটি পরিবারও। আমরা সব সময় আমাদের সুখে-দুঃখে হাত বাড়িয়ে দেই। আমরা প্রমাণ করেছি যে চাইলে আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারি,’ যোগ করেন তিনি।

মোদি বলেন, এসব প্রকল্প বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ‘এটা বাংলাদেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। কারণ এর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলে স্বল্প খরচে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার গতিশীল নেতৃত্ব ছাড়া এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না।

বক্তব্য দেয়ার সময় দুই প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্মদিন উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানান। ১৭ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন পালন করা হয়েছে। আর ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করা হবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।