চট্টগ্রাম কারাগারে ম্যুরাল নির্মাণ ও বিপ্লবীদের গেজেট প্রকাশের দাবি
চট্টগ্রাম বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে অন্যতম একজন বিপ্লবী নেতা তারকেশ্বর দস্তিদার। ১৯৩০-১৯৩১ সালে ডিনামাইট ও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে বন্দিদের মুক্তি ও ব্রিটিশ প্রশাসন অচল করার পরিকল্পনার উদ্যোগে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি রাত ১২টায় চট্টগ্রাম কারাগারে মাস্টারদা সূর্য সেন ও তারকেশ্বরকে ব্রিটিশ শাসকরা একই মঞ্চে ফাঁসি দেয়। কারাগারের সেই ফাঁসির মঞ্চে মাস্টার দা’র স্মৃতিচিহ্ন থাকলেও বসানো হয়নি তারকেশ্বর দস্তিদারের ম্যুরাল, পাথরলিপিতেও নেই তাঁর নাম।
আজ শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেন সংগঠনের কর্মকর্তারা।
লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক বলেন, মাস্টারদা ও বিপ্লবী নেতা তারকেশ্বর দস্তিদারকে ফাঁসি দেয়ার আগে নির্মমভাবে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। তাঁদের মৃতদেহ আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্খীদের কাছে ফেরত না দিয়ে ভোর হওয়ার পূর্বে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একটা জাহাজে করে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে পাথর বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, দুই মহান বিপ্লবীর সেই দিনকে স্মৃতিবহ করে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বিপ্লবীদের ইতিহাস তুলে ধরতে বাংলাদেশ সরকার ফাঁসির মঞ্চটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করে রেখেছে। সেখানে তারকেশ্বর দস্তিদারের স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখতে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আবেদন জানানো হলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় আমরা হতাশ হয়েছি।
গত ২৬ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও কোন আশ্বাস পাওয়া যায়নি। এভাবে চলতে থাকলে একদিন ইতিহাস পথ হারাবে। বিপ্লবী নেতা তারকেশ্বর দস্তিদার যেন ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে না যায়, সেজন্য তাঁর ম্যুরাল নির্মাণ ও পাথরলিপিতে নাম সংযুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে আগামী এক বছরের মধ্যে নেতাজী সুভাষ বসু ও মাস্টারদা সূর্য সেনের সাথীসহ সকল বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিটি থানা এবং ইউনিয়নভিত্তিক নাম সম্বলিত বই প্রকাশ করা হবে। এই বই সরকারি গেজেটভুক্ত করা হলে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে সকল বিপ্লবীর স্মৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে। নতুন প্রজন্ম এসব ত্যাগী বিপ্লবীর নাম জানতে পারবে।
এসময় সরকারের কাছে ৮ দফা দাবিও তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলো হলো-১. ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সকল নেতা-কর্মীদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা, ২. মাস্টারদা সূর্য সেন ও বিপ্লবী নেতা তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসি দিবস ১২ জানুয়ারিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া, ৩. ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল যুব বিদ্রোহ দিবসকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া, ৪. চট্টগ্রাম কারাগারে ফাঁসির মঞ্চে তারকেশ্বর দস্তিদারের ম্যুরাল নির্মাণ ও পাথরলিপিতে নাম সংযুক্ত করা, ৫. বিপ্লবীদের বাড়ি, জায়গা-জমিগুলো সরকারের উদ্যোগে উদ্ধার করে বিপ্লবীদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, ৬. স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বইয়ে বিপ্লবীদের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা, ৭. পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবকে বীরকন্যা প্রীতিলতা জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা করা, ৮. বিপ্লবীদের নামে সরকারি গেজেট ঘোষণা করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ লেখক ও গবেষক জামাল উদ্দিন, পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্ত্তী, নারায়ণ মজুমদার, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি শিক্ষক অঞ্জন কুমার চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দীন শ্যামল, বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পংকজ চক্রবর্ত্তী, চ্যানেল আই’র ব্যুারো চীফ চৌধুরী ফরিদ, সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব অরুণ মল্লিক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সহ-সভাপতি মাভৈ তারানাথ চক্রবর্ত্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী মানিক, অর্থ সম্পাদক তপন ভট্টাচার্য, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শিল্পী কাজল দত্ত, প্রচার সম্পাদক শিক্ষক উত্তম বিশ্বাস, শিক্ষক বিজয় শংকর চৌধুরী, ইউপি সদস্য সুরেশ চৌধুরী, মহিলা সম্পাদিকা শিক্ষিকা রাজশ্রী মজুমদার প্রমুখ।
You can go onto book marking sites and create social book marking one-way
links. Remember though, way too link directories are not created equivalent.
This is one traffic-generating technique you shouldn’t miss.