চবি’র ছাত্র নুরুলই ইসলাম ‘মাস্টারমাইন্ড’ মারজান
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ছবি প্রকাশ করা মারজানের পরিচয় মিলেছে। তার পুরো নাম নুরুল ইসলাম মারজান। পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন ও সালমা খাতুন দম্পতির সন্তান এই মাস্টারমাইন্ড।
নুরুল ইসলাম মারজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ছাত্র। জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার খবরে তার পরিবারে স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে ক্ষোভ ও হতাশা। মারজান কীভাবে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো তা জানেন না তারা। তবে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকলে তার বিচার চায় পরিবার।
নুরুল ইসলামের বাবা পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের গেঞ্জি তৈরির কারিগর। নিজাম উদ্দিন ও সালমা খাতুন দম্পতির ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান মারজান। পারিবারিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন ও আর্থিক অনটনে বেড়ে ওঠা তার।
স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় কান্না থামছে না অসহায় দরিদ্র বাবা-মায়ের। তাদের আদরের সন্তান কীভাবে এ পথে পা বাড়িয়েছে তা কখনও বুঝতে পারেননি তারা।
বাবা নিজাম উদ্দিন জানান, আফরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করার পর মারজান ভর্তি হয় শহরের পুরাতন বাঁশবাজার আহলে হাদিস কওমী মাদরাসায়। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি পাবনা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে দাখিল ও আলিম পাশ করেন। এরপর ২০১৪ সালে ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে।
‘এ বছরের জানুয়ারিতে শেষবার বাড়িতে আসার পর স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায় মারজান। তারপর গত ৭ থেকে ৮ মাস ধরে মারজানের সঙ্গে যোগাযোগ নেই আমাদের। তিনদিন আগে পত্রিকায় ও টিভিতে ছবি দেখে আমার ছেলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি। ছেলে যে এতটা খারাপ পথে গেছে তা ভাবতে পারছি না। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। এমন ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবো না’, বলেন নিজাম উদ্দিন।
মারজানের মা সালমা খাতুন বলেন, ‘ব্যাটাটা আমার কাছে থাকতি আগলায়া রাখছিল্যাম। আর চট্টগ্রাম যায়া কার পাল্টানে পইড়্যা কি যে করলো বুঝব্যার পারতিছি না। আমারে সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ কইর্যা দিলো।’
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের শান্তি আনার লাইগ্যা চেষ্টা করতিছে। এহন আমার ছাওয়াল যদি দোষী হয় তার বিচার হোক। আর যারা এ পথে লিয়ে গ্যাছে তাদেরও ধরা হোক।’
এলাকাবাসীর কাছে ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, সৎ ও ধার্মিক ছেলে হিসেবে পরিচিত মারজান। হঠাৎ তার জঙ্গি সম্পৃক্ততার খবর কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন এলাকাবাসী বলেন, মারজান ছোটবেলা থেকেই নামাজকালাম পড়তো। সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতো। কিন্তু চট্টগ্রামে গিয়ে কীভাবে সে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়ালো এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
মারজানের বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান, শুনেছি তার বাড়ি পাবনায়। তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
র্যাব-১২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার আকরামুল হোসেন জানান, মারজানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, হামলার রাতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে জঙ্গিরা মারজানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং হামলার ছবি তুলে মারজানসহ কয়েকজনের কাছে পাঠায়। গুলশান হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে তথ্য চেয়ে গত শুক্রবার ‘হ্যালো সিটি’ অ্যাপে ছবি প্রকাশ করা হয় মারজানের। সেখানে তাকে গুলশান হামলার ‘অপারেশন কমান্ডার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো কত মাস্টার মাইন্ড আছে কে জানে!
Sorkar sayla nirapord lokkao,mastermind banata para
তাই হচ্ছে,