অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

স্ট্রোক প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই: চমেকে আলোচনা সভায় বক্তারা

0
.

‘স্ট্রোক আমাদের থামাতে পারেনি’ স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) নতুন একাডেমিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আজ ২৯ অক্টোবর ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টায় আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চমেক শিক্ষক সমিতির সহায়তায় নিউরোলজী ও নিউরোসার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন অর্জন করে।

আলোচনা সভায় বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হাসানুজ্জামান ও নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী।

বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, স্ট্রোকের সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আইভি থ্রম্বোলাইসিস ও থ্রম্বেক্টমী উন্নত বিশ্বেও সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ রোগী এই সুবিধা পেতে পারেন। বিদ্যমান চিকিৎসা পদ্ধতির সঠিক ও সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে বেশিরভাগ স্ট্রোক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। স্ট্রোক পরবর্তী রোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বিজ্ঞানসম্মতভাবে আধুনিকায়ন করা দরকার।

বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী হেমোরজিক স্ট্রোক এবং স্ট্রোক পরবর্তী সার্জারিসহ স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

আলোচনা সভায় চট্টগ্রামের প্রখ্যাত নিউরো সার্জন অধ্যাপক ডা. এল এ কাদেরী বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন স্ট্রোকের একভাবে চিকিৎসা দেয়া হতো, এখন সেটি আরেকভাবে দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের কারণে দ্রুত রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে রোগীরাও তাদের কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে। স্ট্রোক প্রতিরোধে আসলে সচেতনতার বিকল্প নেই।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ্েজনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ছোটকাল থেকে দেখে আসছি, বাড়ির কিংবা আশেপাশে কেউ না কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত। স্ট্রোক এমন একটা রোগ এটি যেকোনো সময় যেকোনো বয়সে হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের পরে একজন রোগী চিকিৎসার পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, কিন্তু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সেটি ঘটে না।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, সময়ের সাথে স্ট্রোকের রোগী বাড়ছে। নিউরোলজী ওয়ার্ডে সার্বক্ষনিক ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালু করা উচিত। অন্যদিকে দেখা যায়, নিউরোলজী ওয়ার্ডে রোগীর ছড়াছড়ি। এমনকি বারান্দা ছাড়িয়ে ওয়ার্ডের বাইরে রোগী ভর্তি দিতে হয়। আমার মতে, নিউরোলজী ওয়ার্ড আশপাশে আরো সম্প্রসারণ করা উচিত। কারণ রোগীর চাপ বাড়লে ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করতে হবে এটাই বাস্তবতা। আমার মতে-নিউরোলজী ওয়ার্ড কখনো দ্ইু তিনতলার উপরে হওয়া উচিত নয়। কারণ ওপরে হলে লিফটে রোগী পরিবহন করতে হবে। এক্ষেত্রে লিফট নষ্ট হলে দেখা যাবে রোগীকে কাঁধে উঠাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেডিকেলের কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন ভবন করতে হবে। তারপরেও হাসপাতালে সীমিত সম্পদের মাঝেও চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাপস মিত্রের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিউরোলজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, সহকারী অধ্যাপক ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌহিদুর রহমান, রেজিস্ট্রার ডা. জামান আহম্মদ, নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. মঈনুদ্দিন, অধ্যাপক ডা. এম এম এহসানুল হক, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনিসুল ইসলাম খান, সহকারী অধ্যাপক ডা. রবিউল করিম, সহকারী অধ্যাপক ডা. সাইফুল আলম। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।