অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রধারীদের তালিকা তৈরী করেছে পুলিশ

0
.

নির্বাচনকে সামনে রেখে নাশকতার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠছে পেশাদার সন্ত্রাসীরা। সেই সাথে আনাগোনা বাড়ছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের। কদর বাড়ছে অস্ত্রের কারিগরদের। অস্ত্র ব্যবসায়ী,অস্ত্রের কারিগর ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ধরতে সক্রিয় হয়ে উঠছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।

র‌্যাব-পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তালিকা ইতোমধ্যে হালনাগাদ করা হয়েছে। তালিকা অনুসারে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৪ অক্টোর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটি এসবি) এর পক্ষ থেকে থানাগুলোতে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের তালিক জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর জন্য ১৯ অক্টোবর মধ্যে সময় দেয়া হয়। জানাগেছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই থানাগুলো তালিকা হালনাগাদ করে সিএমপি সদর দপ্তরে জমা দেয়।

এদিকে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করেছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত র‌্যাব সদস্য ১৯৮ টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এরমধ্যে এ-কে-২২ রাইফেলসহ ৩১ টি ম্যাগাজিন রয়েছে এবং ২,৪৭০ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি/কার্তুজ রয়েছে।

জানাগেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্ত পথেও অস্ত্রের চালান আসতে পারে। সীমান্ত পথে অস্ত্রের চালান ঠেকাতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে সীমান্ত এলাকায়। বিজিবিকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সীমান্তবর্তী থানাগুলোকেও ব্যাপক আকারে অভিযান ও তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলার পাহাড় থেকে যেন অস্ত্রের চালান না আসতে পারে সেই ব্যাপারেও তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে পুলিশ।

.

এদিকে ডবলমুরিং থানা সূত্রে জানা যায়, সিএমপি কমিশনার এর নির্দেশনায় চলতি বছরের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। তালিকায় ৩৪জনের নাম রয়েছে যারা একাধিক অস্ত্র ও সন্ত্রাসী মামলার আসামী। এরমধ্যে এক নম্বরে রয়েছে ৫ মামলার আসামী নেছার আহমেদ প্রকাশ নেছার, ১০ মামলার আসামী বেল্লল হোসেন সেলিম (৩৮),২ মামলার আসামী জাহিদুল আলম প্রকাশ লক্ষী (৩৪),৯ মামলার আসামী আলমগীর প্রকাশ ছোট আলমগীর (৩৪),১৪ মামলার আসামী সাইফুল ইসলাম প্রকাশ হাতকাটা সাইফুল (৩৪), ৪ মামলার আসামী ইকবাল হোসেন প্রকাশ সুমন (৩৪), ৭ মামলার আসামী মো: ছগির হোসেন প্রকাশ ছগির (৩৩),১১মামলার আসামী মো: জসিম (২৯),৩ মামলার আসামী শহীদুল আলম মিন্টু প্রকাশ ব্লেক মিন্টু,৩ মামলার আসামী মো: মহসিন, ৪ মামলার আসামী এইচ এম সোহেল,৩ মামলার আসামী সাদ্দাম, ২ মামলার আসামী ইমন,৩ মামলার আসামি খলিলুর রহমান বাপ্পি,২ মামলার আসামী জিয়া, ৩ মামলার আসামী মো: নুরুল আবছার প্রকাশ কালা আবছার, ৮ মামলার আসামী মো: গুলজার,২ মামলার আসামী মো: বজল,২ মামলার আসামী জামাই রিপন,২ মামলার আসামী সুমন,১ মামলার আসামী মো: রাজু,৫ মামলার আসামী জসিম উদ্দিন রাজু,১ মামলার আসামী ছগির প্রকাশ গরু ছগির, ১ মামলার আসামী মো: সোহেল প্রকাল লক্ষীর ছেলে সোহেল, ১ মামলার আসামী মহিউদ্দিন,২ মামলার আসামী আলমগীর হোসেন আলো প্রকাশ পিচ্ছি আলো, ৪ মামলার আসামী সুমন প্রকাশ দাঁতলা সুমন, ৩ মামলার আসামী মো: সাদ্দাম,৩ মামলার আসামী মো: সাইফুল ইসলাম প্রকাশ ফয়েস্টিং সাইফুল প্রকাশ পয়েজ স্টোর সাইফুল,১১ মামলার আসামী ইমতিয়াজ খান প্রকাশ রনি প্রকাশ মাইকেল রনি,৫ মামলার আসামী জালাল আহমেদ ফক্্র রানা,২ মামলার আসামী বাবুল প্রকাশ ভাঙ্গা বাবুল,৩ মামলার আসামী আলাউদ্দিন আলো ও ৩ মামলার আসামী জাহেদ প্রকাশ জুয়াড়ী জাহেদ।

.

হালিশহর থানা সূত্রে জানা যায়, সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে থানা পুলিশ ১৬জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা তৈরী করেছে। হালিশহর থানার শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় রয়েছে ,৫মামলার আসামী মো: মাসুদ প্রকাশ মোটা মাসুদ, ৫ মামলার আসামী পিচ্ছি মাসুদ,৪ মামলার আসামী শাহাদাত হোসেন,৪ মামলার আসামী দিদারুল আলম,৪ মামলার আসামী মো: মনির,৬ মামলার আসামী মো; সোহেল, ৪ মামলার আসামী গোলাম শরীফ লালু, ১ মামলার আসামী মো: কোরবান আলী,৪ মামলার আসামী আবদুল মান্নান,একাধিক মামলার আসামী আবু সালেক রুবেল প্রকাশ কাকু রুবেল,মো: খোকন ,তরিকুল ইসলাম জীবন,আরমান,এস্কান্দার, সাইফুল আসলাম প্রকাশ কালা সাইফুল ও মাইদুল টিপু ।

আকবরশাহ থানা সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় ১০জনের নাম রয়েছে। যারা আগামী সংসদ নির্বাচনে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে থানা পুলিশের তালিকায় রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী ৬ মামলার আসামী নুরে আলম প্রকাশ নুরু,৪ মামলার আসামী সালাউদ্দিন চান্নু,১০ মামলার আসামী জানে আলম,২ মামলার আসামী কাউসার প্রকাশ পিচ্ছি কাউসার,৩ মামলার আসামী রাজন প্রকাশ পুলিশ রাজন,৩ মামলার আসামী মো: সোহেল,১০ মামলার আসামী মো: এরশাদ হোসেন এরশাদ, ২ মামলার আসামী আলী আক্কাস,১১ মামলার আসামী সফিকুল ইসলাম প্রকাশ মামুন ও পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ১০ মামলার আসামী আলাউদ্দিন প্রকাশ চট্টপট্টি আলাউদ্দিন। পুলিশের সোর্স হওযায় থানার নাকের ডগায় ঘুরে বেড়ায়।

পাহাড়তলী থানার তালিকা ১৭ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম অন্তুভুক্ত করা হয়েছে যারা অতীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলো। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় রয়েছে ১০ মামলার আসামী সুজন মল্লিক,১৩ মামলার আসামী রহমত উল্যাহ ডন,৮ মামলার আসামী মো: সোহেল,৫ মামলার আসামী মো: ইয়াসিন,৯ মামলার আসামী কুতুবউদ্দিন,৪ মামলার আসামী মো: আশরাফ,৪ মামলার আসামী মো: শাহজাহান,৬ মামলার আসামী মো: এরশাদ,২ মামলার আসামী কামরুল হাসান রানা প্রকাশ কুত্তা রানা,৩ মামলার আসামী মো: মাসুদ,৬ মামলার আসামী মো: আলী,৩ মামলার আসামী মো: রায়হান প্রকাশ ছোট রায়হান,৬ মামলার আসামী কায়েস উদ্দিন অপু,৪ মামলার আসামী রায়হান প্রকাশ গরু রায়হান ও ৫ মামলার আসামী মো: রাসেল।

সম্প্রতি সন্দ্বীপের একটি অস্ত্র কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ এসব অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বিভিন্ন থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত এই সন্ত্রাসীদের অধিকাংশই পলাতক রয়েছে। তালিকাভুক্ত এসব সন্ত্রাসীদের অনেকে পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করছে।

অনেকে আবার প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজনৈতিক কারনে অনেককে পুলিশ গ্রেফতারও করতে পারছেনা।

পুলিশের একাধিক পরিসংখ্যানে জানা যায়, অবৈধ অস্ত্রধারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চললেও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহার হচ্ছে বৈধ অস্ত্রও। সেই সাথে বিগত বছরে লাইসেন্স দেওয়া অনেক অস্ত্রের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা । চট্টগ্রামে চলতি বছরের ৩০ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৩৬২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে নগরীতে ২ হাজার ৫৭৭টি ও জেলায় ১ হাজার ৭৮৫টি।

পুলিশের একাধিক গোপন সূত্রে জানা যায়, অস্ত্রের লাইসেন্সকৃত অধিক ব্যাক্তির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। যে নাম-ঠিকানার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টরা অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন সেসব জায়গায় গিয়ে তাদের অনেকের হদিস পাচ্ছে না পুলিশ।

ফাইল ছবি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে যে সকল সন্ত্রাসী প্রকশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেছে তাদের অধিকাংশই সরকারি দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারছেনা। সেই সাথে গ্রেফতার করলেও সেই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি।ফলে এই সকল অস্ত্র আগামী সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হতে পারে এমন আশংকা করছেন অনেকে।

গত বছরের ২১ অক্টোবর রাতে নগরীর অফিসার্স ক্লাবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু নিজের লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে যুবলীগ নেতা জয়নাল উদ্দীনের পায়ে গুলি করেন। তাকে পুলিশ আটক করার পর দিন থানা থেকে পুলিশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় রাজনৈতিক চাপে। জব্দ করা হয়নি অস্ত্রও।

২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে নগরের বাকলিয়া ও লালখান বাজার এলাকায় সংঘটিত দুটি ঘটনায় বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের চিত্র পাওয়া যায়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি বাকলিয়া মাস্টারপুল এলাকায় বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কিরিচ বাবুলের সংঘর্ষ হয়। এসময় তার দুনলা বন্দুক দিয়ে গুলি করলে পাঁচজন আহত হন।

২০১৩ সালের ৮ এপ্রিল নগরের ওয়াসা মোড়ে প্রকাশ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র উচিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের উপর গুলি করে যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম। এরপর লালখান বাজারে একাধিকবার বন্দুকযুদ্ধ সংগঠতি হয় মাসুম ও তার প্রতিপক্ষের মধ্যে। এঘটনায় কিছুদিন আগেও মতিঝর্না এলাকায় এক যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি এমনকি এই অবৈধ অস্ত্রগুলোও উদ্ধার করা হয়নি।

গেল বছর ও চলতি বছরের চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে প্রতিপক্ষকে গুলি করতে দেখা গেছে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চকবাজারে ডিশ ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল ও রাসেলের অনুসারীদের গুলিতে যুবলীগ ফরিদুল ইসলাম নিহত হয় । এ ঘটনায় এক শিশু ও মহিলাসহ ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়।

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের মিছিলে এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে। মিছিলে ওই যুবক প্রকাশ্যেই অস্ত্রটি বারবার উঁচিয়ে ধরেন। এ সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অবৈধ অস্ত্রধারীদের একটি তালিকা।

গত ৬ই আগষ্ট নগরীর লালখানবাজার ইস্পাহানি মোড় এলাকায় ছাত্রলীগের মিছিলে অস্ত্র হাতে দেখা যায় এক যুবককে। তাকেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ।এছাড়াও নগরীর আন্দরকিল্লা ও আগ্রাবাদ এলাকায় প্রকাশ্য অস্ত্রহাতে অনেক সন্ত্রাসীকে দেখা গেলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার বা সেই সব অস্ত্র উদ্ধারে করেনি।

তবে গত ১১ অক্টোবর রাতে নগরীর মুরাদপুরে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুবলীগ নেতা অসীম রায় বাবু নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় দুইটি অস্ত্র।

চলতি মাসেই নগরীর লালখানবাজার ইস্পাহানী মোড়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগানো একটি মাইক্রোবাস থেকে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে র‌্যাব সদস্যরা। গত সপ্তাহে সন্দ্বীপ উপজেলার একটি অস্ত্র তৈরীর খানা তকে ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। চলতি মাসেই নগরীর সিআরবি এলাকা থেকে কৌশলে ডেকে এনে এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়াও পুলিশের নিয়মিত অভিযানে কিছু অস্ত্র উদ্ধার ও বহনকারী গ্রেফতার হলেও এসব অস্ত্র ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা বরাবরই আড়ালে থেকে যায়। আর এ কারণে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা ঠেকানো যাচ্ছনা বলে জানিয়েছে র‌্যাব-পুলিশের একাধিক কর্মকর্তারা।

একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে যারা অস্ত্র ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত তাদের অধিকাংশই রাজনৈতিক দলের লোক। ফলে তাদের গ্রেফতার করাও যাচ্ছেনা। কেউকে গ্রেফতার করলেও আবার তারা জামিনে বেেিরয় যাচ্ছে। নগরীর ২ নম্বর গেইটে সরকার দলীয় এক ব্যাক্তিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করার চেষ্টার সময় এক পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

তবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাসীরা যেন বেপরোয়া হয়ে উঠতে না পারে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচনে যেন কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম না হয় সে বিসয়ে তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারী ও বিক্রেতাদের গ্রেফতাওে প্রয়োজন প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কোন ‘বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার না হয় সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

এবিষয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে যেন কোন এ অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে সড়ক, সাগরপথ এবং পাহাড়ি পথে অস্ত্রের চালান যেন না আসতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে সড়ক, সাগরপথ এবং পাহাড়ি পথে অস্ত্রের চালান আসতে পারে।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর এলাকা গুরুত্বপূর্ণ জোন। এখানে নাশকতাকারী এবং অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিয়মিত আভিযানের পাশপাশি আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে অভিযানও বাড়ছে। আপনারা জানেন পুলিশের তৎপরতার কারণে সম্প্রতি সময়ে তেমন অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারীরা মাথাছাড়া দিতে পারেনি। সীমান্ত এলাকা টেকনাফ কক্সবাজার থেকে কোন অস্ত্র যাতে নগরীতে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপাওে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশী করা হচ্ছে।