অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মহানগরীর ১৬ থানায় ২ মাসে ১৪৯টি গায়েবী মামলা!

0
.

গত দুই মাসে চট্টগ্রাম নগরীর ১৬টি থানায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪৯টি ‘গায়েবী’ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে।

অন্যদিকে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ৯৯টি মামলা।

আজ সোমবার (৫ নভেম্বর) তিনি সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী পাঠক ডট নিউজকে এ তথ্য জানান।

নগর বিএনপির দেয়া তথ্যমতে, গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত দুইমাসে নগরীর ১৬টি থানায় ১৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এরমধ্যে পতেঙ্গা থানায় ১৬, বন্দর থানায় ১২, ইপিজেড থানায় ১৫, খুলশি থানায় ৮, পাহাড়তলী থানায় ৯, হালিশহর থানায় ৫, আকবর শাহ থানায় ৫, সদরঘাট থানায় ৯, কোতোয়ালী থানায় ১১, চকবাজার থানায় ৫, বাকলিয়া থানায় ১০, চাঁন্দগাও থানায় ১৩, পাঁচলাইশ থানায় ৭, বায়েজিদ থানায় ১০, ডবলমুরিং থানায় ৪ ও কর্ণফুলী থানায় ১০টি দায়ের করা হয়েছে।

সিএমপির কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, কোন ধরণের গায়েবী বা মিথ্যা মামলা নয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  তিনি গত দুই মাসে ১০টি রাজনৈতিক মামলার দায়েরের কথা স্বীকার করেন।

মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন পাঠক ডট নিউজকে বলেছেন, সংলাপ শুরুর পর থেকে এই কয়দিনে মামলা দায়েরের সংখ্যা বেড়ে গেছে। গতে প্রতিটি থানায় প্রতিদিন ২/৩টি করে কোন ঘটনা ছাড়াই পুলিশ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করছে।

অন্য দিকে রাতে বা দিনে নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে গিয়ে তল্লাশীর নামে হয়রানী করছে। তিনি বলেন, প্রতিটি মামলায় নগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের প্রধান আসামী করা হচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকা থেকে সিএমপি বদলী হয়ে আসা বির্তর্কিত এক ডিসি যোগ দেয়ার পরদিন থেকে পুলিশী মামলা বেড়ে গেছে।  বর্তমান সরকারের শেষ মূহুর্তে পুলিশের এই বির্তকিত ভুমিকার তীব্র নিন্দা জানান নগর বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান পাঠক ডট নিউজকে বলেন, আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করেছিলাম গত ২৭ তারিখ। সুশৃঙ্খল ও সফল সামবেশ করার অপরাধে আমার বিরুদ্ধে গত এক সাপ্তাহে ১০টি গায়েবী মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় নগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদতকেও আসামী করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে পুলিশ কিভাবে কোন কারন ছাড়াই একের পর এক মামলা দিচ্ছে। এসব গায়েবী মামলার কথা শুনলে আমাদেরও লজ্জা লাগে। কিন্তু যে সকল পুলিশ অফিসার এসব মামলায় সই করেন তাদের কি কোন লজ্জা শরম নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা বিগত দিনগুলোতে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল আন্দোলন করেছি। তারপরও কেন আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এভাবে গায়েবী মামলা দেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাতে ঘরে থাকতে পারছেনা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, পুলিশ কেন দলীয় কর্মীর ন্যায় আচরণ করছে। গায়েবী মামলা দিয়ে  বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে এই সরকারের শেষ রক্ষা হবেনা। সুযোগ পেলে জনগণ ঠিকই রাস্তায় নেমে আসবে।

নগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী জানান, গত ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের পর থেকে নগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন ভাই ও আবু সুফিয়ান ভাইসহ সিনিয়র নেতাদের নামে ১০ নতুন গায়েবী মামলা দিয়েছে। গত রবিবার রাতে ঢাকার মতিঝিল থানা ডিবি পুলিশ মামলার জামিন নিতে যাওয়া নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, কোতোয়ালী থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া ও নগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দীন নাহিদকে একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করেছে।

তাছাড়া রবিবার রাতে নগরীর বিভন্ন থানায় অভিযান চালিয়ে নগর বিএনপির সহ ধর্ম সম্পাদক রেহান উদ্দীন প্রধান ও নগর মহিলাদলের সিঃ যুগ্ম সম্পাদক ছকিনা বেগম চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়াতে অবস্থান করলেও তার বাসায় আকবর শাহ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তার ছেলে আরিফুর রহমান সুমনকে গ্রেফতার করেছে। চকবাজার থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক নুর হোসেনকেও গতকাল গ্রেফতার করেছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, সুনির্দিষ্ট অপরাধের কারনেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। গায়েবী মামলা বলতে কিছু নেই।