অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

প্রেমিকের হাত ধরে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল গানের শিক্ষিকা মনিকা বড়ুয়া

0
.

অপহরণ নয়, ফেসবুকের মাধ্যমে পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে কম বয়সী প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল নগরীর লালখান বাজারের বাসিন্দা ও গানের শিক্ষিকা মনিকা বড়ুয়া রাধা (৪৫)।

চট্টগ্রামে আলোচিত মনিকা বড়ুয়া রাধা (৪৫) নিখোঁজ ও অপহরন নাটকের রহস্য উদঘাটন পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিএমপি পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর দামপাড়া পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ মনিকা রাধাাঁর কথিত অপহরণ নাটকের বিস্তারিত তুলে ধরেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।

পুলিশ জানায়, মণিকা বড়ুয়া স্ব-ইচ্ছায় ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিবারের একাধিক সদস্য জানা সত্বেও তারা পুলিশকে সহযোগিতা না করে উল্টো মনিকা বড়ুয়া উদ্ধারের জন্য রাস্তায় মানবন্ধন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার ক্রীড়া সাংবাদিক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবুর স্ত্রী মনিকা বড়ুয়া (৪৫) গত ১২ এপ্রিল নগরীর লালখান বাজার হাই লেভেল রোডের বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেননি।

.

ঘটনায় পরদিন ১৩ এপ্রিল নগরীর খুলশী থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। পরে বিভিন্ন সময় মনিকা অপরহণ হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। পরবর্তী ২৮ এপ্রিল মনিকা অপহরণ হয়েছে এমন অভিযোগ করে থানায় অপহরণ মামলা করেন মনিকার স্বামী সাংবাদিক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবু।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার জানান, মনিকা বড়ুয়া নিখোঁজ হওয়া এবং অপহরনের অভিযোগ পুলিশ গুরুত্বের সাথে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। পুলিশি অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ অনুসন্ধানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জানতে পারে মনিকা অপহরণ হননি। তিনি স্বেচ্ছায় বাসা থেকে বেরিয়ে ভারতের চলে গিয়েছিলেন প্রেমিকের হাত ধরে। সেখানে তিনি বিয়ে করে নাম বদল করে বসবাসও শুরু করেছিলেন। উল্টো দিকে চট্টগ্রামে থাকা মনিকা বড়ুয়া বোন ও পরিবারের অনেক সদস্য সত্যি ঘটনা জেনে, মণিকার সাথে যোগাযোগ থাকা সত্ত্বেও মনিকা অপহরণ হয়েছে এবং তাকে উদ্ধারের দাবী জানিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে তাঁর পরিবার ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

.

পুলিশ জানায়, ভারতীয় নাগরিক ব্যবসায়ী কমলেশ কুমার মল্লিকের সাথে মনিকার পরিচয় হয়েছিলো ফেসবুকের মাধ্যমে। যিনি মনিকার চেয়ে বয়সে প্রায় ১০ বছরের ছোট। এই পরিচয় এক সময় প্রেমে রূপ নেয় এবং তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কমলেশ বাংলাদেশে এসে গত ১২ এপ্রিল মণিকাকে নিয়ে বাসযোগে প্রথমে বেনাপোল নিয়ে যান। কিন্তু মনিকার ভিসা না থাকায় তাকে কৌশলে অবৈধভাবেই ভারতে প্রবেশ করান কমলেশ। পরে তারা কলকাতায় একটি মন্দিয়ে বিয়ে করে তারা একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাসও শুরু করেন কলকাতায়।

পুলিশ তদন্তের সূত্র ধরে এক সময় কমলেশের খোঁজ পান। গত ৩ নভেম্বর কমলেশ তার ব্যবসায়িক কাজে কলকাতা থেকে ঢাকায় আসলে পুলিশ ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে কমলেশকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর কমলেশ মনিকাকে ভারত নিয়ে যাওয়া থেকে বিয়ে পর্যন্ত যাবতীয় ঘটনার স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর কমলেশের মাধ্যমে কৌশলে মনিকাকেও বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে গ্রেফতার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য মনিকা রাধা চট্টগ্রামের সঙ্গীতাঙ্গনেও একজন পরিচিত মুখ। তিনি সাংবাদিক দেবাশীষ বড়ুয়া স্ত্রী এবং চট্টগ্রাম লিটল জুয়েলস স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জননী।

*লালখান বাজার থেকে নিখোঁজ সাংবাদিক স্ত্রী মনিকার সন্ধান মিলেছে ভারতে