অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

লোহাগাড়ায় নাম বিভ্রাট: রাজনৈতিক মামলায় জেল খাটছেন চা-দোকানী

0
.

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) চট্টগ্রামঃ

শুধুমাত্র পিতার নামের সাথে মিল থাকায় লোহাগাড়া থানার রাজনৈতিক মামলার আসামী মোঃ মানিক (২৫) এর পরিবর্তে জেল খাটছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার মোঃ হেলাল উদ্দীন (৩১)। বিগত প্রায় দেড় মাস আগে আটক হেলাল উদ্দীন বর্তমানে চট্টগ্রাম জেল হাজতে রয়েছেন। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম হেলাল জেলে থাকায় ৪ সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম।

জানা গেছে, লোহাগাড়া থানার জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ২০১৩ সালের একটি বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মামলা নং ১(৩)১৩ চার্জশীটে ৩৪ নং আসামীর নাম রয়েছে মোঃ মানিক, পিতা- সাহাব মিয়া, গ্রাম- আধুনগর দক্ষিন হরিনা মোস্তাক হাজির পাড়া, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।

কিন্তু গত ২১/১০/২০১৮ তারিখ লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়ার চা দোকানদার মোঃ হেলাল উদ্দীন (৩১), পিতা-মৃত মোহাম্মদ সাহেব মিয়া, বাজারপাড়া, ৩০৩ ডলুছড়ি, লামা,বান্দরবান-কে লোহাগাড়া থানা এ এস আই মাইনুদ্দীন চৌধুরী মোঃ মানিক দাবী করে আটক করে নিয়ে আসে এবং ১(৩)১৩ মামলার ৩৪ নং আসামী দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে। হেলাল উদ্দীনের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, পুলিশ তার স্বামীকে আটক করতে আসলে তিনি তার স্বামীর আইডি, জন্মনিবন্ধনসহ যাবতীয় কাগজ পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এসব দেখে পুলিশ তার স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবার জন্য গাড়ীতে উঠেন। কিন্তু এ সময় স্থানীয় এক লোক এসে পুলিশকে বলে এই সেই মানিক। পুলিশ তখন আবার গাড়ী থেকে নেমে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, মোঃ হেলাল উদ্দীনের বাপ দাদা সবাই দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছে। তার বাবা মারা যাবার পর সে পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে ছোট চা দোকানটি করে যাচ্ছে। তার আইডি কার্ড, জন্মসনদ, চেয়ারম্যান সনদসহ কোথাও তার নাম মানিক উল্লেখ আছে বলে আমার জানা নেই। শুধুমাত্র পিতার নামের মিল থাকায় একজনের পরিবর্তে আরেকজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়াটা চরম অন্যায়।

হেলালের স্ত্রী রাজিয়া বেগম চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, আমি মানুষের বাগানে কাজ করে কোনমতে সন্তানদের জন্য দু বেলা খাবার জোগাড় করে যাচ্ছি। কিন্তু চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে স্বামীকে জামিন চাওয়ার মত কোন টাকা পয়সা বা সহায় সম্বল আমাদের নেই।

স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, কেয়াজুপাড়ার এক থানার দালাল হেলাল উদ্দীনের সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে মুলত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। পুলিশও দালালের দেওয়া তথ্যমতে মোঃ মানিকের পরিবর্তে হেলাল উদ্দীনকে ধরে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে লোহাগাড়া থানার এ এস আই মাইনুদ্দীন চৌধুরীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছেলেটার নাম মানিক ঠিকই আছে। তিনি দাবী করেন তাদের দেখানো আইডি কার্ড ছিল ভুয়া। স্থানীয় পার্শ্ববর্তী দোকানদারগণ ও আটককৃত ছেলেটার নাম মানিক বলে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।