অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

প্রতীক বরাদ্দের পর ঐক্যফ্রন্টকে কেউ আটকাতে পাবেন না

0
.

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর ঐক্যফ্রন্টকে কেউ আটকাতে পাবেন না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

ঐক্যফ্রন্টকে মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, এখন নানা প্রতিবন্ধকতা আছে এটা ঠিক। কিন্তু মার্কা বের হওয়ার পর আমাদের কেউ আটকাতে পারবো না।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ‘বর্তমান নির্বাচন পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী এলাকা ‘ নিয়ে কথা বলতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য। সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

পুলিশ প্রশাসনে কর্মরতদের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, আপনারাও এই দেশের সন্তান এবং আপনারা নাগরিকদের করের টাকায় বেতন পান। আমরা এমন একটা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি, যেখানে নাগরিকগণ রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তার সেবক হিসাবে পাবে এবং সবাই শান্তিতে সহাবস্থান করবে। কিন্তু সেই সহাবস্থানের জরুরি পূর্বশর্ত হল, পুলিশ বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের যে হয়রানি করছে সেটা এই মুহূর্তেই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি হলে যে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে সেটার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব প্রশাসন এবং পুলিশকে নিতে হবে। সবার মনে রাখা উচিত এই সরকারই শেষ সরকার নয়।

মান্না বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু এই নির্বাচনটি আদৌ ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য হবে কিনা সেটা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে। বর্তমান সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আচরণ আমাদের সমাজে এই সন্দেহ প্রতিদিন আরও শক্তিশালী করছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দলের জন্য পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হবার প্রত্যাশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন নতুন করে পরিস্থিতি আগের চাইতে আরো বেশি খারাপ হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের একাকার হয়ে যাওয়া জনগণের মনে এই শঙ্কা তৈরি করছে যে, সরকার একটি নীল-নকশার নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় থেকে যেতে চাইছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’-এর ধারেকাছেও নেই। একদিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নিচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন তীব্র রয়ে গেছে।’ কথা গুলো আমাদের না, কথাগুলো বলা হয়েছে ব্রিটিশ এমপিদের জন্য তৈরি হাউস অব কমন্সের লাইব্রেরির গবেষণাপত্রের মূল্যায়নে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিয়মকানুনের প্রতি (রুলস অব গেম) সার্বিক আস্থার মাত্রা তলানিতে রয়ে গেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম এই নেতা বলেন, নির্বাচনের সময় পুরো প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে না গেলেও সংবিধানের ১২০ এবং ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করার স্বার্থে যে কোনো প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সমর্থন সরকারের কাছে চাইলে সরকার সেটা দিতে বাধ্য থাকে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রতি কোন রকম চাপ সৃষ্টি করছে না বরং সরকার যা বলছে সেটাই করছে, কমিশনার রফিকুল ইসলামের বক্তব্য সেটাকে স্পষ্ট করেছে। বিরোধী দলকে সর্বোচ্চ চাপে রেখে একতরফা একটা নির্বাচন করার যে নীলনকশা ধরে সরকার এগিয়ে চলছে, অত্যন্ত হতাশাজনকভাবে নির্বাচন কমিশন সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই নীল-নকশার অংশ হিসাবেই সারাদেশে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অনেককে গুম করা হচ্ছে। অবিশ্বাস্যভাবে এই গ্রেফতারের তালিকায় অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে। একজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে হোটেল রুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়ার সংবাদও আমরা পেয়েছি। নির্বাচনের আর খুব কম সময় বাকি থাকলেও এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো কথা বলছে না।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।