অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নতুন প্রার্থী এনামের সাথে লড়ে জয়ের স্বপ্নে বিভোর সামশুল হক

0
.

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগে নৌকার টিকেটে জয়ের স্বপ্নে বিভোর সামশুল হক চৌধুরী। একই আসনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে এনামুল হক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।

পটিয়া স্থানীয় আওয়ামীলীগে আভ্যন্তরীণ কোন্দল, মনোনয়ন বঞ্চিতদের ক্ষোভ, বিএনপির সুবিধাজনক অবস্থান কোনকিছুকেই প্রতিবন্ধকতা মনে করছেন না সামশুল হক চৌধুরী। রয়েছেন চিন্তামুক্তও নির্ভার। নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সামশুল হক চৌধুরীর হলফনামায় দাখিলকৃত বিপুল সম্পদ নিয়ে নানা কানাঘুষা চললেও সেগুলোকে পাত্তা দিচ্ছেন না এমপি সামশুল হক। বলছেন এগুলো তার ব্যবসায়ীক অর্জিত সম্পত্তি।

চট্টগ্রাম-১২ আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগের মোঃ সামশুল হক চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. মইন উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির মো. এনামুল হক, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, এলডিপির নাহিদ ফারহানা, বিএনএফ’র দীপক কুমার পালিত, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নুরুচ্ছফা সরকার, ও বাসদের সাইফুদ্দীন মোহাম্মদ ইউনুচ।

কিন্তু একই আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্য্শাীর তালিকায় ছিলো বেশ কয়েকজনের নাম। ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম বদি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ সেলিম নবী এবং দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব।

একই সাথে দুইবার নির্বাচিত সাবেক এমপি গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল আগামী নির্বাচনে আবারও ধানের শীষের প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম ও সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারীদের মধ্যে আরও ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া। কিন্তু তিনি চূড়ান্ত মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ে যান।

চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার পূর্বে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণাংশে পটিয়া উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার দক্ষিণে আনোয়াারা উপজেলা ও চন্দনাইশ উপজেলা পূর্বে চন্দনাইশ উপজেলা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, উত্তরে বোয়াালখালী উপজেলা, কর্ণফুলি নদী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চান্দগাঁও থানা এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্ণফুলি থানা অবস্থিত।

এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রায় বিপর্যূস্ত দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। সাংসদ সামশুল হকের উপর নানা অভিযোগ পটিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের। আর এ অভিযোগ থেকে সৃষ্টি হয়েছে নানা বিরোধের। জানা গেছে, এ বিরোধ তৈরী হয়েছে বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে।

এসব বিষয় জানতে কথা বলা হয়েছে সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর সাথে।

তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তার উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে একটা গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত এ আসনটিতে আওয়ামীলীগের কখনো জয় হয়নি। তিনিই ২০০৮ সালে বিএনপির গাজী শাহজাহান জুয়েলকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। সেটা অনেকেরই অসহ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুনরায় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে তাকে তার অতীতের কর্মকান্ড দেখেই। প্রধানমন্ত্রী তার প্রতি সন্তুষ্ট। কারন তিনি হারানো আসন আওয়ামীলীগের দখলে নিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি বিগত সময়ের তার উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, পশ্চিম পটিয়ার ৪টি ইউনিয়নের ৭টি ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি একটা স্লুইচ গেট। তিনি ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন করেছেন। এলজিইডি কর্তক নির্মিত ৬৬ কোটি টাকায় আখতারুজআমান কালার সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ২ হাজার কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করেছেন বলে দাবি করেন এই সাংসদ।

তবে শামসুল হক চৌধুরীর সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। ২০১৩ সালের হলফনামায় ২ কোটি ৩৫ লাখ ২২ হাজার ১৯ টাকার সম্পদ দেখালেও একাদশতম সংসদ নির্বাচনের জমা দেওয়া হলফনামায় সম্পদ দেখিয়েছেন ৫ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার ১৮৯ টাকা।

গত নির্বাচনের তুলনায় এ নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখকৃত দ্বিগুণ সম্পত্তির প্রসঙ্গে সামশুল হক জানান, আমি হলফনামায় যে সম্পত্তির পরিমান উল্লেখ করেছি তা আমার ব্যবসায়িকভাবে অর্জিত। আমি ব্যবসা করে টাকা আয় করেছি। আমার পরিচয় সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি আমি ব্যবসায়ীও। তাই আমার অর্জিত সম্পত্তি নিয়ে কি কানাঘুষা চললেও এ নিয়ে আমার মাথাব্যাথা নেই। এবার নির্বাচনে জয়লাভ করলে পটিয়াকে শহরে রূপান্তরিত করবেন। তার উন্নয়ন কর্মকান্ডের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবেন।

এদিকে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী আমেজে ফিরে এসেছে পটিয়ার আনাচে-কানাচে। হাটে-বাজারে, চায়ের কাপে চলছে প্রার্থীদের চুলচেরা বিশ্লেষন।

জানা যায়, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এখানে বিজয়ী হয় ধানের শীষ। বিএনপি প্রার্থী আবারও ধানের শীষের বিজয় ঘটাতে পারবেন, এমনটাই আশা করছেন এনামুল হক।

তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে ভোটাররা তাদের মতামতের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন বলে মনে করছেন ভোটারদের অনেকেই। ভোটারদের অনেকের আরও অভিমত, লড়াই হোক হাড্ডাহাড্ডি। ভাটিকাইন গ্রামের বাসিন্দা তোয়াব আলী সওদাগর জানান, বিএনপি মাঠে থাকায় ভোটের হাওয়া বেশ গরম। এবার ভোট দিব জেনেশুনে। যাকে দিয়ে জনগনের উন্নয়ন হবে ভোটবাক্সে তার জন্যই ভোট পড়বে, জানান তোয়াব আলী সওদাগর।