অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম-৯ আসনে বিএনপির দুই শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতারের অভিযোগ

0
.

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা পর চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনে ধানের শীষ প্রতীকের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এই আসনের বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কারাবন্দী ডাঃ শাহাদাত হোসেনের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক এড. বদরুল আনোয়ার।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাঃ শাহাদাত হোসেনের বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে এড. বদরুল আনোয়ার বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতির পর দেশের গনতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিলো এবং অংশগ্রহণ করেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আমরা মনে করেছিলাম সিইসি নুরুর হুদার অধীনে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশায় বিএনপি। ২০ দলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থী মহানগর বিএনপির সভাপতি কারাবন্দী ডা: শাহাদাত হোসেনও নিবাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে চুড়ান্ত মনোনয়ন পত্র পাওয়ার পর আমরা যখন প্রচারণায় নামি প্রতি পদে পদে আমরা বাধার সম্মুখীন হতে থাকি।

নির্বাচনী প্রচারণার বিভিন্ন হয়রানি ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন,  শত প্রতিকূলতার মাঝেও রাতে পোষ্টার টাঙালে সকালে এগুলো দেখা যায় না। এগুলো ছিড়ে ফেলে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী। ১৩ ডিসেম্বর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনে বড় ধরনের প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু করলে মাইকিং কমীকে মারধর করে। গত ১৩ ই ডিসেম্বর মাইকিং এর সময় পূর্ব বাকলিয়ায় যুবদল নেতা ইকবালকে ছুরিকাঘাত করে এবং মাইকের সরঞ্জাম লুট করে।

নগর যুবদল নেতা শাহেদ বক্স, সোনা মানিক, আমিনুল ইসলাম সাজু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুল আওয়াল, শ্রমিকদল নেতা মহিউদ্দীন রণি ছাত্রদলের সাজু, মুন্নাসহ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৪ ডিসেম্বর বাকলিয়ায় মাইকিং করার সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা চাক্তাই আমিন হাজী রোড়ে বিকাল৫টার সময় মাইকিং ম্যান জামাল ও ইব্রাহীমকে ব্যাপক মারধর ও তাদের মোবাইল টাকা ও মাইকের সরঞ্জামাদি লুট করে। উভয় বিষয়ে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর আমরা অভিযোগ দাখিল করেছি।

এছাড়া এদিন দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মো: কাইয়ুম, মহসিন কলেজ ছাত্রদল কর্মী রায়হান ও ফরিদকে গ্রেপ্তার করে। ১৫ ডিসেম্বর চকবাজার এলাকায় গণসংযোগকালে ১৬নং ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও নগর বিএনপি সহ-সভাপতি সবুক্তিগীন মক্কীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও ১৭ ই ডিসেম্বর পূর্ব বাকলিয়ায় ১ হাজারের অধিক পোষ্টার ছিড়ে ফেলে ঐ এলাকার সন্ত্রাসীরা। মির্জাপুর এলাকা থেকে মো: ইসমাইল, দুলাল দাস, ১৭নং ওয়ার্ড থেকে আবদুল কাদির, ১৬নং চকবাজার থেকে আবু আহমেদ, ১৮ নং থেকে জহিরুল ইসলাম, ২১নং থেকে আশরাফুজ্জামান স্বপনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ বিষয়ে আমরা সিইসি বরাবর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কর্মকর্তার মাধ্যমে পুনরায় অভিযোগ দাখিল করি।

প্রার্থী কারাগারে রয়েছে তা সত্ত্বেও পুলিশ ১৬ই ডিসেম্বর রাতে তার বাসায় তল্লাশীর নামে পুলিশ তান্ডব চালায় জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রার্থীর মাতা শায়েস্তা খানম ১৭ই ডিসেম্বর সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আপনাদেরকে অবহিত করেন ও পরদিন এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ২২ই ডিসেম্বর পূর্ব বাকলিয়া থেকে নগর বিএনপি নেতা হাশেম (সও:) কে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও নুরুউদ্দীন নুরু, ফারুক হোসেন বাবু, ইসহাক ও কুতুব উদ্দীনকে কাজীর দেউড়ি থেকে, শফিক আহমদ ও মহিউদ্দীনকে পূর্ব বাকলিয়া থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

২৪ই ডিসেম্বর পূর্ব বাকলিয়া বিএনপি নেতা বেলাল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৫ ডিসেম্বর ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনির নেতৃত্বে হাউজ ক্যাম্পেইন করার সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা মারধর করে এতে ২০/২৫ জন মহিলা দল কর্মী আহত হয়। যাহা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে সরাসরি অবহিত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনে ডাঃ শাহাদাতের নির্বাচনী সমন্বয়কারী একরামুল করিম,বার কাউন্সিল এর সদস্য এড. দেলোয়ার হোসাইন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নসরুল কদির, চট্টগ্রাম আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. নাজিম উদ্দিন, সাংবাদিক জাহিদুর রহমান কচি প্রমুখ।