অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রশ্ন তুলতে পারে

0
.

বাংলাদেশে রোববারের সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অনেক অভিযোগ উঠলেও, সেটি সরকারের গ্রহণযোগ্যতায় কোন প্রভাব ফেলবে না বলে বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। আগামী দু-একদিনের মধ্যে নতুন সরকার গঠিত হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিরোধী জোটের প্রার্থীরা একযোগে নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে পুন:নির্বাচনের দাবিতে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিরোধী দলের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই নতুন সরকার গঠিত হবে বলে তারা আশা করছেন।

কারচুপির অভিযোগ সত্ত্বেও কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে?
এই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির যে অভিযোগ উঠেছে তাতে করে এটি কতটা আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে এই প্রশ্নের জবাবে মি. ইমাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এরকম কোন অসুবিধা হবে বলে বলে তিনি মনে করেন না।
তিনি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো নির্বাচনের সময় যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক এসেছিলেন তারা নির্বাচনটিকে ব্যাপকভাবে অনুমোদন দিয়ে গেছেন।”

তাদের মধ্যে কমনওয়েলথ, ওআইসি, কানাডা এবং সার্কের পর্যবেক্ষকরা রয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি মনে করেন তারপরেও নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রশ্ন তুলতে পারে।
তিনি জানান, আমেরিকানরা এখনও চুপ করে আছেন।

ব্রিটিশ সরকার এ নিয়ে খুব একটা প্রশ্ন তুলবেন বলে মনে করেন না এইচ টি ইমাম।
তবে তিনি মনে করেন না যে নির্বাচনটিকে নিয়ে আমেরিকা কিংবা ইউরোপের দিক থেকে বড় ধরনের কোন চাপ তৈরি হতে পারে।
“আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না যে এরকম কিছু হতে পারে। কারণ আজকের সভাতে ইউরোপিয়ান কমিশনের যারা ছিলেন তারাও বলেছেন যে নির্বাচন তাদের কাছে ভালোই মনে হয়েছে,” বলেন তিনি।
সরকার কবে শপথ নেবে?

নির্বাচিত এমপিরা কবে শপথ নেবেন ও কবে নাগাদ নতুন সরকার গঠিত হবে জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম এর প্রক্রিয়াটি তুলে ধরেন। বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রথমে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করবে। তারপর হবে গেজেট নোটিফিকেশন।

তিনি আশা করছেন, আগামী দু’একদিনের মধ্যেই এটা করা হয়ে যেতে পারে। তারপরেই নতুন সংসদ সদস্যরা স্পিকারের কাছে শপথ নেবেন।
তারপর পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভা হবে। তারা তখন নির্বাচন করবেন দলের নেতা।
তারপর দলের নেতা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বলবেন যে আমাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে সংসদে। তখন রাষ্ট্রপতিকে তিনি অনুরোধ করবেন তাকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্যে। তার পরেই গঠিত হবে নতুন সরকার। এসব কিছু ৩ থেকে ৪ঠা জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশা করছেন মি. ইমাম।
ফলাফলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ?

বাংলাদেশে রবিবারের সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে হতভম্ব বিরোধী দলীয় জোটের নেতারা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তারা এর বিরুদ্ধে আইনগত এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা নেবেন।

নির্বাচনের পরে তাদের কর্মকৌশল ঠিক করতে সোমবার রাতে বিএনপির নেতারা প্রথমে তাদের দলের বৈঠকে বসেন। এরপর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট, এবং অপর নির্বাচনী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও আলাদাভাবে বৈঠকে বসে।
বিরোধী জোটগুলো আদালতে নির্বাচনী ফলাফলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে তারা কী করবেন – জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যদি রিট করা হয় তাহলে তো সেখানে পক্ষ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

“নির্বাচন কমিশনই তো নির্বাচন পরিচালনা করেছে। কাজেই নির্বাচন কমিশনকে করতে হবে। তখন নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
এইচ টি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি বিরোধীরা যে আন্দোলনে নামারও হুশিয়ারি দিয়েছে তাতে অতীতের মতো আবার সহিংসতার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে মি. ইমাম বলেন, সেরকম কিছু হতে পারে বলে তারা মনে করেন না।
“এবারের নির্বাচনে একটা জিনিস খুব পরিষ্কার হয়েছে। সেটা হলো বিএনপিতে সত্যিকার অর্থে নেতৃত্বের অভাব। দ্বিতীয়ত ওদের কর্মী নেই বললেই চলে। বহু লোক গত দশ বছরে আমাদের দিকে চলে এসেছে। নির্বাচনের আগেও তারা এধরনের হুমকি দিয়েছিলেন। তারা ডাক দিয়েছিলেন সবগুলো ভোটকেন্দ্র দখল করে রাখার। দখল তো দূরের কথা ভোট কেন্দ্রে তারা এজেন্টও দিতে পারেনি। তো কী আন্দোলন করবেন!” প্রশ্ন এইচ টি ইমামের।
তিনি বলেন, সহিংসতা যদি হয় সেটা হতে পারে চোরাগোপ্তা ধরনের কিছু হামলা। “জামায়াত শিবিরের লোকেরা এটা করতে পারে। তাদেরকে মোকাবেলা করার জন্যে বর্তমান সরকারের এখন যথেষ্ট শক্তি আছে।”
সূত্র: বিবিসি