অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা হওয়াটা ছিল আমার তীর্থ-দর্শনের মতো: জয় গোস্বামী

0
.

সুব্রত আচার্য, কলকাতা

জয় গোস্বামী যে আল মাহমুদকে কতটা পছন্দ করতেন, তা পূর্বেই লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের চলে যাওয়ার প্রেক্ষিতে টেলিফোনে কথা হচ্ছিল জয় গোস্বামীর সঙ্গে। নিজে অসুস্থ, জ্বর। মেয়ের কাছ থেকে আল মাহমুদের চলে যাওয়ার দুঃসংবাদটি শুনেছেন।

টেলিফোনে মনে হলো যেন বিষণ্ণ, অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছেন। বাংলাদেশে আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা হওয়ার প্রসঙ্গে বললেন, “আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা হওয়াটা ছিল আমার তীর্থ-দর্শনের মতো।”

জয় গোস্বামীর মতে, “দুই বাংলা নিয়ে যে বাংলা ভাষা, সেই ভাষার কাব্য সাহিত্যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো।”

কবি আল মাহমুদের মৃত্যুর খবর মেয়ে বুকুলের কাছ থেকে পেয়েছেন জয় গোস্বামী। বললেন, “আমার তো বটেই আমার মেয়েরও বড় প্রিয় কবি আল মাহমুদ।”

মুঠোফোনেই যেন কবির কণ্ঠে বেদনের অনুভূতির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন ষাটোর্ধ জয় গোস্বামী।

প্রয়াত কবি সম্পর্কে তিনি বলতে গিয়ে বলেন, “শুধু কাব্য সাহিত্যে কেন আল মাহমুদ অসাধারণ কথা সাহিত্যও রচনা করেছেন। তার গল্পেরও কোনও তুলনা হয় না। এতো দিন আমাদের তার সৃষ্টি দিয়ে সমৃদ্ধ করে গিয়েছেন, সেটা আমাদের সৌভাগ্যের বিষয়। তেমনই আজ তার চলে যাওয়াটা আমাদের কাছে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। এই ক্ষতি পূরণ হবে না।”

আল মাহমুদের সঙ্গে জয় গোস্বামীর ব্যক্তিগত যোগাযোগ দীর্ঘ দিনের। সর্বশেষ স্মৃতি উসকে দিয়ে জয় গোস্বামী ডেইলি স্টারকে বললেন, “আমার সঙ্গে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০০৭ সালে। আমি ঢাকায় কবির বাড়ি গিয়েছিলাম। উনি আমাকে বুকে আসো বলে জড়িয়ে ধরেছিলেন। ঢাকার একজন চিত্র সাংবাদিক আমাকে কবির বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন, পরপর দুদিন গিয়েছিলাম কবির বাড়ি।”

“প্রথম যেবার পরিচয় হয়, সেবারও ঢাকায়। মিষ্টি দাস বলে একজন আমাকে কবির বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন সেবার। কবির সামনে আমাকে মিষ্টি পরিচয় করিয়ে বললেন, দেখুন জয় দা এসেছেন। তখন কবি আল মাহমুদ বললেন, ও কবি জয় গোস্বামী এসেছেন। সেবারও আমাকে বুকে আসো বলে জড়িয়ে ধরেছিলেন। উনি চোখে ভালো দেখতে পেতেন না, কিন্তু গভীর ভালোবাসায় বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন আমায়। সেই স্মৃতি আমাকে আজও নাড়া দেয়।”