অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

স্ত্রীকে পিটিয়ে হিরো আলম গ্রেফতার

0
.

স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমিকে নির্যাতনের মামলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বগুড়া সদর থানার পুলিশ আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় হিরো আলমকে থানায় ডেকে এনে গ্রেফতার দেখায়।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাবিহা আক্তার সুমিকে নির্যাতনের ঘটনায় তাঁর বাবা সাইফুল ইসলাম আলোচিত হিরো আলমকে আসামি করে আজ থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমি (৩০) জানান, আশরাফুল হোসেন আলম দুই-তিন মাস পরপর বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন। এসেই তিনি কারণে-অকারণে স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতন করেন। তিনি ঢাকায় কোনো একজন মডেলকে বিয়ে করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আশরাফুল আলম দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে এক মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন। এতে স্ত্রী সুমি বাধা দিলে আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন।

এ ঘটনায় শ্বশুর সাইফুল আলম হিরো আলমকে মারধর করেন। পরে তাঁরা সুমিকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সুমি সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার রাতে আশরাফুল আলম ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে খাবারের পর তাঁর পাশে শুয়ে তিন ঘণ্টা ধরে মোবাইলে এক মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। আমি নিষেধ করলে বলে আমার যা ইচ্ছে তাই করব। এভাবে থাকতে পারলে থাকো, না হলে চলে যাও। এর একপর্যায়ে আলম তেড়ে ওঠে আমার ওপর। আমার গলা চেপে ধরে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে জখম করে। এখন আমার তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথায় যাব?

সুমি ও তাঁর বাবা জানান, আশরাফুল হোসেন আলম থেকে হিরো আলম হয়ে যাওয়ার পর থেকেই হিরো আলমের আচার ব্যবহার পরিবর্তন হয়ে যায়। তিনি মাঝে-মধ্যেই বাড়িতে অশান্তি করেন।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, গতকাল রাত ৯টায় আহত অবস্থায় হিরো আলমের স্ত্রী সুমিকে ভর্তি করান তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁর মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। সেখানে কাপড় বাঁধা ছিলো।

অভিযোগ অস্বীকার করে গ্রেপ্তারের আগে হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের নয়, সোমবার রাতের। তাঁর স্ত্রী মোবাইল ফোনে কারো সঙ্গে পরকীয়া করেন বলে তাঁর সন্দেহ। এজন্য তিনি কয়েকবার স্ত্রীর সিম নম্বরও পাল্টে দিয়েছেন। স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে পরিবারের লোকজন কথা বলায় সোমবার রাতে তিনি তাঁকে দুটি চড়-থাপ্পড় মেরেছিলেন। পরদিন মঙ্গলবার সকালে তাঁর শ্বশুর লোকজন নিয়ে এসে তাঁকে মারধর করেন। এরপর তিনি শ্বশুরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগ থেকে বাঁচতে তাঁর স্ত্রী ঘটনার একদিন পর মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হিরো আলম বলেন, ‘এটা কোনো বিষয় না যে তাঁকে (স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমি) হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সংসার করতে গেলে ঝগড়া-বিবাদ হবেই। কাজের সুবাদে আমাকে বাইরে যেতে হয়। আমি ১০-১৫ দিন পরপর বাড়িতে আসি, তিন মাস পরপর নয়। আমি বিয়ে করেছি বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’

হিরো আলম দাবি করেন, এলাকায় তাঁর ডিশ ব্যবসা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁর চাচা শ্বশুর হারুন ও মুকুল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মঙ্গলবার সকালে তাঁর ডিশের ব্যবসা স্ত্রীর নামে লিখে দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে ফাঁসাতেই আহত হওয়ার নাটক করে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।