অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নুসরাত হত্যা: ১২ জন মিলে চূড়ান্ত করে হত্যার পরিকল্পনা

0
.

ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মো. আবদুর রহিম ওরফে শরিফ। এ নিয়ে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।

বুধবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করা হয় আবদুর রহিমকে। সেখানে তিনি দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর এলাকা থেকে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আবদুর রহিম স্বীকারোক্তিতে বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে ও পরামর্শে নুসরাতকে হত্যার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানো হয়। এ জন্য ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করা হয়।

৪ এপ্রিল সকালে ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তাঁর (রহিম) দায়িত্ব পড়ে মাদ্রাসার গেটে। সেখানে নুর উদ্দিন, আবদুল কাদেরও ছিলেন। মাদ্রাসার ছাদে বোরকা পরে ছিলেন শাহাদাত, জোবায়ের ও জাবের। এ ছাড়া ছাদে ছিলেন মণি ও পপি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আবদুর রহিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, মামলার দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম এবং মো. আবদুর রহিম ওরফে শরিফসহ তিনজন স্বীকারোক্তিতে একই ধরনের কথা বলেছেন। তাঁদের স্বীকারোক্তি থেকেও মণির নাম উঠে আসে।
তদন্ত দলের ঘটনাস্থল পরিদর্শন

নুসরাত হত্যাকাণ্ড ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটি তদন্ত দল বুধবার বিকেলে সোনাগাজী মাদ্রাসা ও নুসরাতদের বাড়ি পরিদর্শন করে। প্রধান পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া বিভাগের ডিআইজি মো. রুহুল আমিন তদন্ত দলের নেতৃত্বে দেন।

তদন্ত দলে ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান, মাহমুদা আক্তার, পরিদর্শক মো. সালা উদ্দিন। এ ছাড়া ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উক্য সিং, সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়া, সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) মো. কামাল হোসেন।

ডিআইজি মো. রুহুল আমিন গণমাধ্যমের কর্মীদের বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নির্দেশে তদন্ত দল সোনাগাজীতে এসেই তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, দুই দিন সোনাগাজীতে থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ড ও পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিল কি না এবং এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় আর না ঘটে, সে বিষয়ে করণীয় নিয়ে তদন্ত করে ঢাকায় গিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তদন্ত দল নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তাঁরা নুসরাতের কবর জিয়ারত করেন।